রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক। তবে শুধুমাত্র সাহিত্যিকই নন, রবীন্দ্রনাথ একজন প্রভাবশালী দার্শনিকও। কয়েকদিন পরেই তার জয়ন্তী। তাই গুরুদেবকে নিয়ে লেখা। আজ তার কিছু আদর্শ নিয়ে। বিভিন্ন গান ও কবিতায় শান্তির গলাভরা বুলি প্রচার করলেও আসলে কি। মূলধারার সেবাদাস গনমাধ্যম এই কথাগুলো আপনাকে জানাবে না।
শিবাজী ভক্তঃ
শিবাজী ভোঁসলে অথবা ছত্রপতি শিবাজী [১৬৩০–১৬৮০], হলেন মারাঠা সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। সে ছিল চরম ব্রাহ্মণবাদী এবং সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষী। শিবাজির দলকে বর্গীও বলায় হয়।
ঐতিহাসিক স্যুলিভ্যান এই শিবাজী সর্ম্পকে লিখেছেন,
‘শিবাজী ছিলেন ইতিহাসের সবচেয়ে বড় লুন্ঠক ও হন্তারক দস্যু। আর তিনি যাদের সংগঠিত করেছিলেন সেই মারাঠা জাতি ছিল এমন অপরাধপ্রবণ যে, মুহূর্তের মধ্যে তারা তাঁদের লাঙ্গলের ফলাকে তরবারিতে রুপান্তরিত করে এবং ঘোড়া ধার অথবা চুরি করে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়তো। যেখানেই তারা গিয়েছে সেখানেই কেবল ধ্বংস ও মৃত্যু রেখে এসেছে'। [১]
মিঃ হলওয়েল,
‘‘সে ভীষণতম ধ্বংসলীলা ও ক্রুরতম হিংসাত্মক কার্যে আনন্দ লাভ করতো”।[২]
মারাঠা লুন্ঠনের প্রত্যক্ষদর্শী গঙ্গারাম বাবু এক কবিতায় লিখেছিলেন,
‘‘কারু হাত কাটে, কারু নাক কান,
একি চোটে কারু বধ এ পরাণ।
ভাল ভাল স্ত্রলোক যত ধইরা লইয়া জাএ
আঙ্গুষ্ঠে দড়ি বাঁধি দেয় তার গলা এ।
একজনে ছাড়ে তারে আর জনে ধরে
রমণের ডরে ত্রাহি শব্দ করে’’।
শিবাজির দল বাংলাতেও তাদের ডাকাতির কালো থাবা বাড়িয়ে দেয়। তবে বাংলায় তখন ছিলেন শায়েস্তা খাঁ। তিনি শিবাজির দলকে দমন করে বাংলাকে রক্ষা করেন। শিবাজির দলের বিরুদ্ধে অভিযান শেষে একরাতে শায়েস্তা খাঁ তার শয়নকক্ষে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। বিশ্রামরত নিরস্ত্র শায়েস্তা খাঁ কে কাপুরুষের মতো অতর্কিতে আক্রমণ করল বর্গী সর্দার শিবাজী। শায়েস্তা খাঁ জানালা ভেঙে বেরিয়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করেন। কিন্তু তার অল্পবয়স্ক পুত্র দুর্ঘটনাবশত ঘরেই থেকে যায়। তার নিষ্পাপ পুত্রকে শিবাজী একা পেয়ে খন্ড- খন্ড- করে কেটে পৈশাচিক ভাবে হত্যা করে। [৩]
সম্রাট আওরঙ্গজেব সেনাপতি আফজল খাঁ কে পাঠিয়েছিলেন মারাঠা দস্যুদের দমনের জন্য। শিবাজী বুঝতে পারে সম্মুখ যুদ্ধে পারা সম্ভব নয়। তাই সে ভিন্ন রাস্তা নেয়। সন্ধির প্রস্তাব নিয়ে শিবাজী যায় আফজল খাঁর সাথে দেখা করতে। এ সময় দু’জনে সৌজন্য মোলাকাত করে। শিবাজী আগেই তার পোষাকের নিচে ‘বাঘনখ’ নামক একটি ধারালো অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছিলো, মোলাকাতের সময় সে হঠাৎ সেনাপতি আফজল খানের উপর আক্রমণ করে তাকে হত্যা করে। [৪]
শিবাজির একটি উপাধি ছিল ‘গো-ব্রাহ্মণ’ প্রতিপালক। গরু রক্ষার নামে সে হাজার হাজার মুসলিমকে হত্যা করেছিলো।[৫]
তবে আমাদের শিবাজিকে চিনতে কোন ইতিহাসের বই পড়ার দরকার নেই। বাংলাদেশের ৩-৪ বছরের বাচ্চাও শিবাজিকে চেনে। শিবাজি মারা যাবার সারে তিনশত বছর পর আজও বাংলার প্রতিটি ঘরে শিবাজির ভয় দেখিয়ে শিশুদের কান্না থামানো হয় বা ঘুম পারানো হয়। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ছোট বেলায় শোনা সেই ছড়া,
“খোকা ঘুমালো, পাড়া জুরালো
বর্গী এল দেশে
বুলবুলিতে ধান খেয়েছে, খাজনা দিবো কিসে”
সেই শিবাজিকে নিয়ে মহান কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখলেন,
“মারাঠির সাথে আজি, হে বাঙালি, এক কন্ঠে বলো
'জয়তু শিবাজি'।
মারাঠির সাথে আজি, হে বাঙালি, এক সঙ্গে চলো
মহোৎসবে সাজি।
আজি এক সভাতলে ভারতের পশ্চিম-পুরব
দক্ষিণে ও বামে
একত্রে করুক ভোগ একসাথে একটি গৌরব
এক পুণ্য নামে"। [৬]
ফ্রি ম্যাসনঃ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদী সন্ত্রাসীদল ফ্রি ম্যাসন দলের সদস্য। ব্যাপারটা বিশ্বাস করা একটু কঠিন। তবে সত্য যে কঠিন......। লিংকে ফ্রি-মেসন সদস্যদের তালিকায় T বর্ণের ৩ নম্বরে পাবেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (rabindranath tagore) এর নাম। [৭]
জায়নিস্টঃ
এখানেই শেষ নয়। তিনি কুখ্যাত জায়নিস্ট দলের সদস্য ছিলেন। কয়েকদিন আগে গণহত্যাকারী ইজরাইলপন্থীদের ফেইসবুকে পেজে Israel Advocacy Movement রবী ঠাকুরকে স্মরণ করে পোস্ট দিয়েছিলো। ১৯৪১ সালের ৭ই আগস্ট রবীন্দ্রনাথ মারা গেলে ৮ই আগস্ট ইহুদীদের ‘জিউইশ টেলিগ্রাফিক এজেন্সি’ নামক একটি পত্রিকায় তাকে নিউজ করে, যার শিরোনাম, “Tagore, Friend of Jews and Zionism Dies in Calcutta”। [৮]
তথ্যসূত্রঃ
১। https://goo.gl/2lQABx
২। “Interesting History/ Events Holl Well”
৩। গোলাম মোর্তুজা, চেপে রাখা ইতিহাস, ১৭৯ পৃষ্ঠা
৪। জয়নাল হোসেন, সম্রাট আওরঙ্গজেবের ভিতর-বাহির, ৮১ পৃষ্ঠা
৫। https://goo.gl/HwDE85
৬। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শিবাজি উৎসব
৭। https://bit.ly/2nDpWFR
৮। আর্কাইভ লিঙ্ক : https://bit.ly/2GYwTbE, ঐ দিনের পত্রিকার পিডিএফ লিঙ্ক :https://bit.ly/2pU2Auj
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০১৮ রাত ১২:২৭