সময়টা ২০১৩ সালের জুলাই মাস , ফেইসবুকে একটা ফ্রেন্ড রিকুইস্ট আসলো । নাম তাঞ্জিলা রহমান মিথিলা (রুপক নাম) ঢাকার একটা মহিলা কলেজে পরে । ছবিতে দেখতে ভালো লাগলো কিছু দিন চ্যাট করলাম । এরপর ফোনে কথা বলা । কিছু দিন পর দুজনের মধ্যে দুর্বলতা কাজ করলো একে অপরের প্রতি । সিদ্ধান্ত হলো ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩ আমরা দেখা করবো টিএসসি তে , দেখার পর ভালবাসা হবে কি হবে না সিদ্ধান্ত । যেহেতু আগে থেকেই মেয়েটার প্রতি দুর্বলতা ছিলো তাই দেখা হওয়ার পর মেয়েটাকে তেমন ভালো না লাগলেও ( কিছুটা শর্ট ও শ্যাম বর্ণ) দূরে সরে আসিনি । তাকে জানালাম তোমাকে ভালবাসতে আমার সমস্যা নাই কিন্তু ভবিষ্যতে আমার পরিবার তোমাকে মেনে নিবে না । মেয়েটার উত্তর ছিলো পরিবার মেনে না নিলে দুজন আলাদা হয়ে যাবো যত কষ্ট হোক কিন্তু এখনকার সময়টা নিজেদের মত করে চলবো ।
মিথিলা তার পরিবারের দিক থেকে সুখি ছিলো না, নানা কারনে মানুষিক ভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত ছিলো । আমি তাকে নানা ভাবে সহযোগিতা করলাম । অনেক কাজে সঠিক দিক নির্দেশনা দিলাম । মিথিলাও আমাকে অনেক কিছুতে সহযোগিতা করলো । অনার্স ও মাস্টার্সে ফার্স্ট ক্লাস পেলো । মিথিলা তার জীবনটাকে অনেকটা গুছিয়ে নিতে পারলো । তবে এর মাঝেও আমি বহুবার চেষ্টা করেছি তার কাছ থেকে সরে আসতে । অনেক বার ব্রেক আপ করেছি কারন আমার পরিবার যেহেতু মেনে নিবে না সুতরাং কেন সম্পর্কটাকে গভীর করতেছি ! কিন্তু বার বার ফিরে এসেছি তার অনুরোধে । কখনো ফিরে এসেছি তার পরীক্ষা খারাপ হবে তাই অথবা অনেক অসুস্থ হয়ে পরেছে তাই । এভাবেই কেটে গেলো ৩ বছর ।
শেষ ২ বছর ধরেই মিথিলা নানা ভাবে চাপ দিচ্ছিলো লিভ টুগেদার করার জন্য । আমি নানা অজুহাতে সেটা পাস কাটিয়ে গেছি । কিন্তু দিন শেষে আমিও ত একটা ছেলে কত দিন পাস কাটিয়ে চলবো ! তাছাড়া তার প্রতি আমারও ত দুর্বলতা আছে । একদিন রিতিমত মরার ভয় দেখিয়ে বাধ্য করলো মিথিলার সাথে লিভ টুগেদার করার ।
আমি যে ফাঁদে পরেছি সেটা বুঝতে পারলাম লিভ টুগেদার করার কিছু দিন পর থেকে । মিথিলা ভুলে গেলো আগের সব কিছু । পরিবার রাজি না হলে আলাদা হয়ে যাবো .......... পরে যে যার মত বিয়ে করে ফেলবো এসব কোন কিছুই সে মনে করতে চায় না । তার একটাই কথা আমাকে ছাড়া অন্য কোথাও বিয়ে করা সম্ভব না । যদি বলি সব জানার পরেও জোর করে লিভ টুগেদার করলে কেন ? কবি সেখানে নিরব !!!!! গত রাতে অনেক গুলো ঘুমের ওষুধ খেয়ে মিথিলা এখন হসপিটালে ভর্তি ।
পরিবারের সাথে সম্পর্কের শিথিলতা কতটা খারাপ প্রভাব পরে একটা মেয়ের উপর সেটা মিথিলাকে না দেখলে বুঝা যায় না । মিথিলা আমার ভালোবাসা কোনভাবেই হারাতে চায় না কারন সে পরিবার থেকে তেমন ভালোবাসা পায় নি । সে অতটা সমাজবদ্ধ মানুষ না । আত্মহত্যা করে ফেলবো এটা তার মুখের বুলি । নিজের জীবনের প্রতি তার তেমন মায়া নাই । আমাকে বিয়ে করার জন্য সে যা করতেছে রীতিমত পাগলামি !! এ সব কিছুই পরিবার বিচ্ছিনতার কুফল ।
কিন্তু আমার দিকটা মিথিলার ঠিক বিপরীত !! ফ্যাশান ডিজাইন এ গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি , পরিবার থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি । আমার জীবনে পরিবারের অবদান বলে শেষ করা যাবে না এবং পিতা মাতার এক মাত্র ছেলে আমি । সবাই একসাথে বসে খাবার খাওয়া , বোনদের সাথে হাসি ঠাট্টা এক কথায় পুরোই পারিবারিক জীবন আমার । আমার পরিবার কোন ভাবেই তাকে মেনে নিচ্ছে না , আমিও পরিবারকে চাপ দিতে পারছি না । অন্য দিকে মিথিলা আমাকে ও আমার পরিবার কে ক্রমাগত হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে যে কারনে মিথিলার প্রতিও আমার ভালোবাসার চেয়ে ক্ষোবের পরিমান দিন দিন বারছে ।
মিথিলা তার কথা থেকে সরে আসলেও আমি সরে আসি নি । আমি আগেই বলেছি আমি আমার পরিবারকে অনেক ভালোবাসি তাদের অমতে কিছুই করবো না । আমি আজ নানা মুখি চাপে বিপর্যস্ত ।
যদি কোন অভিজ্ঞ লোক এই লিখাটা পড়ে থাকেন তাহলে ভালো একটা suggestion দিবেন ।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:১৯