somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেশে দেশে ঈদ পালনের মজার রীতি, ছবিসহ! সামুপাগলার তরফ থেকে ঈদ মোবারক সকল ব্লগীয় দোস্ত, ভাই, বোন কে! :)

১৪ ই জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পোষ্টের শুরুতেই আমি সবাইকে ঈদের অগ্রীম শুভেচ্ছা জানাই। দোয়া করি, সকলের ঈদ অনেক সুন্দর কাটুক। নিরাপদে যেন সবাই পরিবার পরিজনদের কাছে পৌঁছে যান এবং ফিরে আসেন।



ঈদ আসি আসি করছে। ঈদের দিনের চেয়ে বেশি "ঈদ আসছে! ঈদ আসছে!" দিনগুলোই বেশি মজার মনে হয়! পরিবার পরিজনের উদ্দেশ্যে অনেকেই রওয়ানা দিয়ে দিয়েছেন, তাদের ঈদ যেন ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। ঈদের আমেজ পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
আমাদের দেশের মতো পৃথিবীর সব দেশেই ঈদ উদযাপনের বিশেষ কিছু নিয়মরীতি রয়েছে। মজার ও শিক্ষনীয় সেসব সংস্কৃতি আমরা অনেকেই জানিনা। তাই সেসব নিয়েই আজকের পোষ্ট।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

১) ইন্দোনেশিয়া!

পৃথিবীর মোট মুসলিমের প্রায় ১৩% ই থাকেন ইন্দোনেশিয়ায়! তাদের জনসংখ্যার ৮৭% মুসলিম। তাই সেখানে ঈদ ভীষন ধুমধাম করে পালন করা হয়। দেশটিতে ঈদ উল ফিতার কে লেবারান বলা হয়ে থাকে।

ঈদের সন্ধ্যায় বাচ্চারা ড্রাম, টর্চ নিয়ে রাস্তায় প্যারেড করে।



রাতের আকাশকে আতশবাজির আলোয় রাঙিয়ে দেওয়া হয়।



মানুষজন ঈদ উপলক্ষ্যে নিজেদের শহরে আপন পরিবারের কাছে চলে যায়।
হালাল বি হালাল নামের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়ানরা পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সাক্ষাতকালে ঈদের শুভেচ্ছা জানায়, এবং ক্ষমা চায় পূর্ববর্তী কোন ভুলের জন্যে। এর জন্যে বড়রা ছোটদের দু হাত ধরে হাত মেলায়, এবং ছোটরা বড়দের হাত, কপাল, গাল স্পর্শ করে।




২) টার্কি!

টার্কির মোট জনগোষ্ঠীর ৯৮ -৯৯% ই মুসলিম! ঈদ উৎসব এদেশে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।

টার্কিতে পবিত্র ঈদ উল ফিতার কে রামজান বায়রাম অথবা সেকের বায়রামও বলা হয়ে থাকে। বায়রাম শব্দটির মানে হচ্ছে জাতীয় ভাবে পালিত উৎসব।

এই দিনে অনেকে কবরস্থানে গিয়ে মৃত মানুষের জন্যে প্রার্থনা করেন।

একটি মজার ঈদ সংস্কৃতি আছে তাদের। বাচ্চারা পাড়া প্রতিবেশীদের বাড়িতে গিয়ে বলে "শুভ বায়রাম", এবং নানা রকম টার্কিশ মিষ্টি, চকলেট, পেস্ট্রি অথবা টাকা পেয়ে থাকে। তাই ঈদকে সামনে রেখে দেশটিতে মিষ্টি কেনার ধুম পড়ে যায়।



ছোটরা বড়দের ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে, ডান হাতে চুমু খায়।




৩) আফগানিস্তান!


আফগানিস্তানের ৯৯.৭% ই মুসলিম! ঈদ উৎসব বিশেষ ভাবে পালিত হওয়াই স্বাভাবিক।

আফগানরা নতুন পোশাক পরিধান করে, ঈদের নামাজ আদায় করে, আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে গিয়ে, বাড়ি পরিষ্কার করে, মজার সব খাদ্য রান্না করে ঈদকে স্বাগতম জানায় অন্য যেকোন দেশের মতোই।

তবে তাদের ভীষন মজার একটি ঈদ ট্রাডিশন আছে যার নাম টখম-জ্যান্গি অথবা ডিম যুদ্ধ! এই উৎসবে সকল বয়সের মানুষ খোলা জায়াগায় মিলিত হয় সেদ্ধ ডিম নিয়ে এবং একে অপরের ডিম ভাঙ্গার চেষ্টা করে!



৪) সোমালিয়া!

সোমালিয়ার ৯৯% মানুষ মুসলিম।

ট্রাডিশনাল নাচের মাধ্যমে ঈদকে স্বাগতম জানাচ্ছেন এক সোমালি পুরুষ।



ঈদ উপলক্ষ্যে এক নারী হাতে মেহেদী দিয়েছেন।



অন্যান্য দেশের মতোই, ঈদের দিনে নতুন পোশাক পরিধান করেন সোমালিরা।



পরিবার পরিজনের সাথে মুখোরচক ট্রাডিশনাল খাদ্য উপভোগ করে থাকেন।



৫) মরক্কো!

দেশটির ৯৯% জনগোষ্ঠী ইসলাম ধর্মালম্বী!

যাকাত আল ফিতর মরক্কোর গুরুত্বপূর্ণ ঈদ ট্রাডিশন। এদেশে যাকাত আল ফিতার শোধ করার আগে পরিবারগুলো পবিত্র ঈদ উল ফিতার উদযাপন করতে পারেনা! যাকাত আল ফিতার পরিশোধের শেষ সময়সীমা ঈদের নামাজের আগ পর্যন্ত। তারপরে যদি কেউ দেয় তবে সেটা দান হিসেবে গণ্য হলেও যাকাত হিসেবে গণ্য হবেনা। এটা অপশনাল না, প্রতিটি পরিবারকে যাকাত আল ফিতার আদায় করতেই হবে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে। দেশটির ইসলামিক আইন বাধ্যতামূলক করেছে যাকাত আল ফিতারকে। বেশিরভাগ পরিবারই ঈদের কদিন আগেই যাকাত আল ফিতার আদায় করে দেয়। পরিবারের প্রধানকে দায়িত্ব পালন করতে হয়।

সাধারণত যাকাত আল ফিতার হিসেবে প্রধান খাদ্য দ্রব্য গম ও ময়দা নেওয়া হয়, তাছাড়া টাকা, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যও গ্রহণ করা হয়। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী এক ব্যাগ গমের সমান দান করতে হবে পরিবারের প্রতি সদস্যের পক্ষ থেকে।



পুদিনার চা এবং প্যানকেক, পেস্ট্রি সহ নানা ধরণের খাবার মরোক্কানরা পরিবারের সাথে উপভোগ করেন ঈদের দিনে।



ছবি ও তথ্যসূত্র: অন্তর্জাল!
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০১৮ রাত ২:৩৪
২৩টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×