somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার
আঁচলের ঘ্রাণে বিমোহিত হতে মনে প্রেম থাকা লাগে। চুলের গন্ধ নিতে দুহাত বাড়িয়ে দেয়া লাগে। হাহাকার থাকা লাগে। দুনিয়া ছারখার হওয়া লাগে। সবাই আত্মা স্পর্শ করতে পারে না।আমার সমস্ত হাহাকার ছারখারে তুমি মিশে আছো।

কুহেলিকা

২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ৮:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কুহেলিকা,


কবি নজরুলের উপন্যাসের মত বুঝিনা কীভাবে তোমায় ব্যাখ্যা করি প্রিয় কুহেলিকা!

আমি বুঝিনা দ্বিতীয় শব্দে কি বলি তোমায়! কার কাছে গেলে জানা যাবে, তোমাকে কি নামে ডাকলে বুঝাবে, প্রকৃত তোমার মানে! কে জানে? তোমাকে কি বলি কেউ কি জানে?
মনকে পারিনি বোঝাতে, তাই তোমার দিকে আমি চেয়ে থাকি!
এই আমি একজন পথিক,প্রতিনিয়ত তোমার গন্ত্যবে হেঁটে যাই।
আজ রাতের আধারে তুমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে,
আর এদিকে তুমি নামক নেশায় মত্ত আমি!
কয়েকটি চিঠিতে তোমার হাতের স্পর্শ,
ডাকবাক্সে জমেছে সেই কতদিন হয়েছে!
তোমার অপেক্ষায় আমার ক্লান্ত চাহুনি,
আমার শুধু মনে আছে তোমার গন্তব্যে আমার পৌঁছোতেই হবে,তুমি মানে তো আর শুধু তুমি নও! তুমি মানেই আমার জীবনের অন্য মানে।

তুমিহীনা কালোরাত আমার,জমেছে হাজার বছরে! কোন বাস ছেড়ে যায়নি তার কাঙ্খিত গন্তব্যে! বাস স্টেশনে বসে একা আমি ক্লান্ত এক যাত্রীর মত, অভিমানে গড়িয়েছে কত বিকেল!
জানি,তোমার ডাকবাক্সে পৌঁছায়নি সে খবর।
বোবা স্টেশন জানে, আমি বুকের পকেটে পোষা পাখির মত তোমার ছবি পুষে রাখি!
আমি ঠিক বলে বুঝাতে পারি না, আর তাই দুজনে দাঁড়িয়ে আছি এপার ওপার দূরে!
অথচ হঠাৎ তোমার কথা ভাবলেই, চোখের সামনে সব ঝাপসা হয়ে আসে! আমি ঝাপসা চোখে চেয়ে দেখি কুয়াশার আচ্ছন্নতা! খুঁজছি তোমাকে নিখোঁজ সংবাদের মত! শুধু আমি নয় গোটা শহরটা জানে।

তোমার দিকে কতশত শতাব্দী ফিরে ফিরে তাকিয়েছি, চোখে চোখ পড়তেই তা বুঝে যাবে।
কতটা চেয়েছি যতটা হয়নি বলা ঠিক ততটাই!
নৈঃশব্দে,শুধু চোখে রেখে চোখ কথা বলে যায়।
চোখের ভেতর মনেরর করা কেমন হাহাকার,
বাতাসে পরিচিত প্রেমিকার ভেজা ঘ্রাণ কিংবা
ভীষণ হাহাকারে দাঁড়িয়ে থাকা কোন ডাকবাক্স!
তোমার অভিমানে পুঁড়ে যাওয়া সময়ের মেঘ;
আমার শুধু আজন্ম তোমার কোলেতে মাথা রাখার প্রচেষ্টা,আমার আধেক, জীবন আমার বিশ্বসংসার!এমন সময় তুমি থাক কই?

কুহেলিকা,তোমাকে নিয়ে শুধু আলোচনা চলে।
তুমি কখনও ‘কুহেলিকা’ আবার কখনও প্রহেলিকা! সাত সমুদ্দুর তেরো নদী সাঁতরিয়েও তোমার কিনারা যায় না করা!
‘তুমি মানেই, সহস্র বর্ষেরই সখা সাধনার ধন!’
তুমি শুধু ভালবাসাই না বরং তুমি আমার আত্ম অহমিকা!
আমি তোমারই সাথে সাজাই আমার আত্ম সংসার। যারা তোমায় অশ্লিল মন্তব্য ছুঁড়ে দেয়,আমি তাদের পিটিয়ে তেজি কন্ঠে বলি-ভালবাসি!
মাথার উপর তপ্ত রোদ,এমন সময় হঠাৎ দাঁড়িয়ে
পাশে হাঁটুমুড়ে পথরোধ করে চিৎকার করে হাতটা বাড়িয়ে বলি-ভালবাসি!
মন খারাপের বিকেলে কিছুই তোমার ভালো লাগছে না,এমন সময় এক ফোঁটা রক্ত দিয়ে দেয়ালে তোমার নাম লিখে বলি-ভালবাসি!

তুমি শুধু ইঙ্গিত,তা প্রকাশিত নয়।তোমাকে দেখি বেলাভূমিতে দাঁড়িয়ে।মহাসিন্ধু দেখার মতো তীরে দাঁড়িয়ে সমুদ্রের যতটুকু দেখা যায়,আমি তোমাকে দেখি ততটুকু! সমুদ্রের জলে আমি যতটুকু নামতে পারি,তোমার মাঝেও ডুবি ততটুকুই!
তুমি সর্বদা রহস্যের পর রহস্য-জাল দিয়ে নিজেকে গোপন করেছো,তবুও আমি তোমাতে ডুবেছি নিরন্তর!
সে তুমি যাই হও, যেখানেই যাও,যেভাবেই থাক
দূরে অথবা কাছে থাক অথবা না থাকলেও দূর থেকে একবারের জন্যে হলেও বলি-ভালবাসি!
সর্বশক্তিতে এই বাহুতে জড়িয়ে ধরে শুনব তোমার কন্ঠস্বর। বুঝবো তুমি আছো,তুমি আছো!

কী গভীর রহস্য তোমার চোখে-মুখে! তুমি চাঁদের মতো মায়াবী; তারার মতো সুদূর ছায়াপথের মতো রহস্যময়ী! শুধু আবছায়া, শুধু গোপন! তুমি যেন পৃথিবী হতে কোটি কোটি মাইল দূরে। গ্রহলোক ওদের চোখে চেয়ে আছে অবাক হয়ে,খুকি যেমন করে সন্ধ্যাতারা দেখে।
তোমাকে হয়তো শুধু দেখা যায়, ধরা যায় না!
রাখা যায়, ছোঁয়া যায় না! তুমি যেন চাঁদের শোভা, চোখের জলের বাদলা-রাতে চারপাশের বিষাদ-ঘন মেঘে ইন্দ্রধনুর বৃত্ত রচনা করো! দু-দণ্ডের তরে, তারপর মিলিয়ে যাও! তুমি যেন জলের ঢেউ, ফুলের গন্ধ, পাতার শ্যামলিমা। তোমাকে অনুভব করি, দেখি, কিন্তু ধরতে পারি না! তবু তুমি আমার আত্মার আত্মজ প্রিয় কুহেলিকা।

বুঝলে কুহেলিকা, ১৬ কোটির পৃথিবীতে তোমাকে সবথেকে আলাদা লাগে! থাকুক এমন ১৬ কোটি বা আরো হাজার হাজার জন! তুমি থাকো এমন অগোছালো, এখনটা যেমন আছো! আমি সারাজীবন পাশে থাকব, তোমাকে গোছাতে। তুমি সেবিকা, প্রীতিময়ী, স্নেহময়ী আবার কিছুটা ছলনা;
তবু তুমি যদি না থাকতে তবে যক্ষকে চিত্রকূটের আড়াল করে মেঘদূত-এর সৃষ্টি হত না।
সীতাকে রাবণ হরণ করে রামায়ণ পেতাম না।
দ্রৌপদীর কেশাকর্ষণ কৌরবেরা না করলে মহাভারত তৈরী হত না! তুমি আমার চির বিস্ময় আমার অনন্তযৌবনা! তোমার সব পাগলামির সাথে পাগল হব। তুমি বললে সিটিসেন্টার থেকে লাফ দিব কিন্তু তাও তোমার হাত ছাড়ব না!
তোমার জন্য আমার পৃথিবী বদলাবো, কতকাল
ভোরের সূর্য না দেখা এই আমি মোরগের মত
আলো ফুটলেই জেগে যাব,কিন্তু তোমাকে বদলাতে হবে না। আমি জানি ঢেউ ধরতে গেলেই জলে ডুবতে হবে,গন্ধ ধরতে গেলেই বিঁধবে কাঁটা; শ্যামলিমা ধরতে গেলেই বাজবে শাখা,
তোমাকে ছুঁতে গেলে আহবান করা লাগে!
আমি তাই করছি জন্ম জন্মান্তর!

তোমার আকাশে হাজার তারা ঘুরঘুর করবে তোমার পিছু কিন্তু আমি হব তোমার একক সূর্য!
আমি ছাড়া আর কোন কাউকে চোখে পড়বে না।
আমাকে কখনো ডাকার প্রয়োজন হবেনা কারন
আমার অনুপস্থিতি কখনো অনুভব ই হতে দিবো না!
তোমার সকল দুর্বলতা,পাগলামী,ভাল ও খারাপ
সব নিয়ে ভালবাসি এবং বাসবো বিশ্বাস করো!
তোমাতে উদিত হয়ে তোমাতেই অস্তমিত যাব!
যদি বলো হে কবি, বলো তোমার কুহেলিকার অর্থ কি?
আমি শুধু বলবো তুমি আমার নজরুলের কুহেলিকা, তুমি আমার চির বিস্ময়, তুমি আমার আত্মার আলো, এসেছো- অন্ধকার ভেদিয়া!
কবি নজরুল হলে আজ বলেই দিতাম তোমায়-
"আকাশ, চন্দ্র ও তারকা সাক্ষী রহিল আজ একটি হৃদয় আর একটি হৃদয়ের সান্নিধ্য লাভ করিল – শুধু হাসি বদল করিয়া।"


সানবীরের দ্বিতীয় অধ্যায়(সানবীর খাঁন অরণ্য)
১২.৫.১৮
তালতলা,ঢাকা
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ৮:০৭
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×