somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধরনী মাতা, তুমি দ্বীধা হও , আমি তন্মধ্যে প্রবেশ করি (“ইঞ্জিনিয়ার্স ডে” আমার একটি তিক্ত অভিজ্ঞতা)

০৭ ই মে, ২০১১ বিকাল ৫:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কর্কশ কাক ডাকা সকাল ৭ টা খুব বেশি ভোর না হলেও যারা সকাল ৫.৩০ বা ৬ টার সময় ঘুমাতে যান তাঁদের জন্য সকাল ৭ টা !!! চোখে সরষে ফুল দেখার মতো হলুদ ছাড়া আর কিছুই নয় ।

আজ ০৭.০৫.২০১১ তারিখ “ইঞ্জিনিয়ার্স ডে” ।আগে থেকেই প্ল্যান ছিল আজ “Institute of Engineers Bangladesh” (IEB) তে যাব । সকাল ৮ ঘটিকার সময় র্যালি আছে । কাজেই চোখে শুধু সরষে ফুল কেন , ধুতুরা ফুল দেখলেও সকাল ৭.৩০ এর মধ্যে সেখানে পৌছাতে না পারলে হয়তবা চোখে ছানি পড়া মানুষের মত ভবিষ্যতটা আন্ধকার হয়ে যেতে পারে ।

সকাল ৭ টার সময় সুখের ঘুমকে আর্ধ-চন্দ্র দিয়ে এক বন্ধুকে গেলাম ডাকতে । মমতাজের সুর এর সাথে সুর মিলিয়ে গাইতে ইচ্ছে হল “বন্ধু আমার ঘুম রসিক , বাইয়া যাও ঘুমের তরি .. . . .” না না খুব বেশি নয় , দিনে মাত্র ২ থেকে ২.৩০ ঘন্টা আর এই ধরুন রাত্রে মাত্র ৭ ঘন্টা ঘুমালেই তার ঘুমের ঘাটতি বাংলাদেশের বার্ষিক বাজেটের ঘাটতির মতো মোটামুটি ভাল ভাবেই পুষিয়ে যায় ।যা হোক প্রাণ প্রিয় বন্ধুটিকে ঘুমের “গোয়ান্তানামো” কারাগার থেকে মুক্তো করে “Institute of Engineers Bangladesh” (IEB) এর সামনে নিজেদেরকে জাহির করলাম ।

IEB এর সামনে কিছু সংখ্যক জ্ঞানী ইঞ্জিনিয়ার যাদের জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় পারদর্শীতা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে সুবাস ছড়িয়ে ধন্য ধন্য রব উঠার অপেক্ষা মাত্র , দাঁড়িয়ে থেকে ফটো খিস্তে ব্যস্ত । তাঁদের বদনখানির বাইরে প্রকাশিত দন্তগুলোর ঝলকের কাছে “সাইবার-শর্ট” ক্যামেরার ফ্লাস মলিন হয়ে লজ্জায় কুটি কুটি হতে লাগল ।

যাই হোক , আমার আরও কিছু বন্ধুর আসা বাকি ছিল । বন্ধুগুলোর জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে মনে হল, উঁই পোকা আমার কোমড় পর্যন্ত মাটি তুলে বাঁসা বেঁধে আবার আমার গলা পর্যন্ত মাটি তুলতে অনুমতি নিতে, আমাদের পার্শ্ববর্তী বন্ধু প্রতীম আপূন ভাই এর দেশ “ভারতমাতার !!!!!” কাছে অনুমতি নিতে গেছেন ।

অবশেষে বন্ধুগন এসে উপস্থিত হয়ে আমাকে উদ্ধার করলেন , যেন ফুসফুস হতে গোল্ডলিফের নিকটিনের শেষ অংশটুকুও ধুয়ে মুছে চলে গেল । বলে রাখা ভাল আমি এবং আমার বন্ধুরা বিশ্ববরেন্দ্র বিদ্যাপীঠ “আহসানুল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়” এর “ইলেক্টিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং” এর ছাত্র ।

যাই হোক, অতঃপর নানা গেঞ্জি (পাবনাইয়া সাদা গেঞ্জি) দ্বারা দেহ তরী আবৃত করে সবাই জ্ঞানগর্ভ আইনিস্টাইনের মস্তকের সাথেই তূল্য মস্তকখানি সুদর্শন ক্যাপ দ্বারা ঢেকে র্যালীর যাত্রার শুভ সূচনা করলেন । আর আমরাও তাঁদের অনুসৃত হয়ে মোহযুক্ত প্রাণীর মত পিছু পিছু যেতে লাগলাম ।

নিজেকে তখন আমি চিপ ইঞ্জিনিয়ার এর চাইতে কোন অংশেই কম ভাবতে নারাজ । কিন্তু হায়!!! , কবি বলেছেন “হায়রে আমার কপাল , কপালের নাম রাখ গোপাল”। গোপাল, সেতো মানুষকে হাসাতো । আর মোরা নিজেরাই হাস্যকর বস্তুতে পরিণত হতে খুব একটা সময় লাগল না ।
গুনীজনেরা যা যা বললেন সেগুলো ভদ্র ভাষায় রূপান্তর করলে দাঁড়ায় , তুমি কে হে বাপু ? তোমার বাড়ি কোন মূল্লুকে ? বাবা তুমি কী নিজেকে নানা গেঞ্জি দ্বারা সুসজ্জিত করতে এসেছ ? ইহা তোমাদের জন্য নহে বাপু , বাড়ি প্রস্থান কর ।

সমতুল্য হাজারো প্রশ্নের বীষ বানে বিদ্ধ হয়ে ভগ্ন, ক্লান্ত এই জীর্ণ শরীর নিয়ে অবশেষে র্যালী শেষ হল । এরপর , হুম !!! সবার শেষে পেলাম আর এক গণসংবর্ধনা যেমন সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল গ্যালিলিওকে তার শেষ জীবনে, যা আমার এই খুদ্র , দীনতাপূর্ণ লিখনীতে প্রকাশ করার মত সামর্থ নেই ।

পাঠক বন্ধুগন, জানতে খুব ইচ্ছে করছে না , এর পর কী হল ।
“অবশেষে তাদের দেওয়া পুষ্টিযুক্ত নাস্তা না খেয়ে লজ্জার বোঝা পদদলিত করে প্রস্থান”

এই মর্মব্যথা অভিজ্ঞতার শেষপ্রান্তে এসে সম্মানিত পাঠকদের কাছে আমার একটাই প্রশ্ন “তাদের দেওয়া নাস্তা গলধিকরন করা কী আমার উচিত হোতো ? আপনারা যদি বলেন তার পরেও গলধিকরন করা উচিত হো্তো । তবে বলব , উচিত থাকলেও আমি তা খেতাম না কারন , আমার পাকস্থলির পাচক রস সে খাবার পরিপাকে অক্ষম ।”

০৭.০৫.২০১১



সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:০৩
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×