somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাঁদছে স্মৃতি--কে দেবে গো -- মুক্তি দেবে তারে!

২৭ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১০:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লেখাটি হয়তো কখনোই লেখা হতো না। ব্লগার একরামুল হক শামীমের একটি পোষ্ট পড়ে নিজের শৈশব মনে পড়ে গিয়েছিল। সেখানে ছোট্ট করে নিজের ছেলেবেলার কিছু ঘটনা লিখি। তিনিও সেখানে বললেন, মন্তব্যটি নিয়ে যাতে একটা পোষ্ট দেই। তাঁর লেখা আমাকে আমার অতীত মনে করিয়ে দিলো। তাই এই লেখাটি আমি উৎসর্গ করলাম ব্লগার একরামুল হক শামীমকে।


বাড়িটি ছিল পোড়ামাটির তৈরী। তার উপর বালু-সিমেন্টের প্লাস্টার। বলা যেতে পারে সরকার মোটামুটি ভাবে থাকার একটা সু-ব্যবস্থাই করে দিয়েছে। সবাই বলতো, এটা হিন্দু জমিদার বাড়ি। প্রমাণও ছিল, সামনে ও পেছনে বিশাল জায়গা। মাঝখানে সাত কামরার একটি বাড়ি। ভেতরে আমরা যেটিকে ড্রয়িং রুম বানিয়েছিলাম তার একটি জায়গায় দেয়ালটাতে ফাঁকা স্থান ছিল। বোঝা যায় এখানে মূর্তি রাখা হতো পূজার জন্য। সেই বাড়িটির উপরে বিশাল অক্ষরে লিখা ছিল, বরদাভবন, স্থাপিত: ১৮৯৯।
কি, অবাক হলেন? অবাক হবার মতোই ঘটনা। এই বরদাভবনেই আমার বেড়ে ওঠা। সামনের জায়গায় আব্বুর ফুলের বাগান। গোলাপ, জবা আরও কত কি! একটি ফুলের কথা খুব মনে পড়ে। নামটা ঠিক মনে করতে পারছি না। ফুলটি লাল রঙের লম্বাটে আকৃতির। তার পেছনের খোসা ছিড়ে মুখে পুরে টান দিলে মিষ্টি একধরনের রস বেরিয়ে আসতো। আমি আর আপু বিকেলে প্রতিযোগিতায় সেই রস খেতাম। আর পুরুষ্কার স্বরুপ থাকতো আব্বুর থাপ্পড়। সেই থাপ্পড়েও আমরা দমে যেতাম না। তাই একসময় এই রস খাওয়া নিয়ে আব্বু আমাদের আর কিছুই বলতো না।
সেখানে আমাদের সকালে ঘুম ভাঙতো পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে। দরজা খুলে দাড়ালে দেখতাম, ঘাসের উপর জমে থাকা শিশির! আহ!... কি অসাধারণ দৃশ্য!! শীতকালে তো আমাদের শিউলীগাছটার চারপাশে তৈরী হতো শিউলী ফুলের মাদুর। একটা সিগ্ধ গন্ধ ছড়িয়ে থাকতো চারিপাশে। আপুর সকালের প্রথম কাজ থাকতো সব শিউলী ফুল কুড়িয়ে একটা বাটিতে জমিয়ে রাখা। আর স্কুলে যাওয়ার সময় পলিথিন ব্যাগে সব ফুল নিয়ে যাওয়া।
বিকেলে সব-সময় আমি আর আপু বাগানে হাটতাম আর দুই শালিকের অপেক্ষায় থাকতাম। তখন আব্বু আমাদের পড়াতো। কথিত জমিদার বাড়ির জমিদার ছিল আব্বু এবং আমরা ছিলাম কথিত প্রজা। আর জমিদার মানি কি, পুরোপুরি অত্যাচারী জমিদার। তো, মজার ব্যাপার হলো, আমরা যেদিন এক শালিক দেখতাম সেদিন ঠিকই আমরা পড়া না পারার অপরাধে আব্বুর বেতের বাড়ি খেতাম। তাই যেদিন এক শালিক দেখে আমাদের বিকেল শেষ হতো সেদিন আমাদের মন প্রচন্ড পরিমাণে বিষন্ন থাকতো। একদিন তো আমরা দুই ভাই-বোন বিমর্ষ দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি। তা দেখে আমাদের বড় ভাইয়া বলল, কিরে, তোরা আকাশে কি খুঁজিস? আমি আর আপু তখন বললাম, দুই শালিকের অপেক্ষায় আছিরে ভাইয়া। এই কথা শুনে ভাইয়ার সে কি হাসি!! সেদিন বড্ড অভিমান হয়েছিল ভাইয়ার উপর।
ভাইয়ার রুমের নাম আব্বু দিয়েছিল গোয়াল ঘর। কারণও ছিল বটে। ভাইয়ার রুমে কোনো কিছুর নির্দিষ্ট স্থান ছিল না। যেখানে সেখানে গল্পের বই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতো, জামা-কাপড় চেয়ালে ঝুলছে, ফ্লোরে গানের ক্যাসেট পড়ে আছে। বিছানা একপাশে রয়েছে ভাইয়ার গীটার। গোয়াল ঘর হলেও বরদাভবনের এই ঘরটিই ছিল আমাদের পছন্দের। সকালে, ভাইয়াকে ঘুম থেকে জাগানোর চাকরিটা ছিল আমার। কারণ, গোয়াল ঘরে যেহেতু জমিদারের পদচারণ মানায় না তাই সবচাইতে ক্ষুদে প্রজা হিসেবে চাকরিটা আমার করতে হতো। আর আমি, ভাইয়াকে জাগাতে গিয়ে ভাইয়ার বুকে ঢুকে দিতাম ঘুম।
মজা হতো বৃষ্টির সময়। টিনের চালে বৃষ্টির ঝুমঝুম শব্দ। আর আমাদের চালের ফুটো দিয়ে পানি পড়তো। যে জায়গা দিয়ে পানি পড়ছে সে জায়গাটি নিচ বরাবর বাটি দিয়ার মহড়া চলত। আমার রুমটির কোল ঘেঁসে ছিল একটা বিশাল আকৃতির জাম গাছ। বৃষ্টির সময় বাতাসে সেই গাছটা নড়তো আর টিনের চালের সাথে ঘষা খেয়ে ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ করতো। এ নিয়ে আমার মায়ের ভয়ের শেষ ছিল না। সব-সময় বলতো, কোনদিন যে জাম গাছটা ভেঙে আমার ছেলের উপর পড়বে।
প্রতি রাতে আমরা তিন-ভাইবোন চুটিয়ে আড্ডা দিতাম রাত তিনটে-চারটে পর্যন্ত। সারাদিনের মজার মজার সব ঘটনা নিয়ে গল্প আর হাসির চিৎকারে নিস্তব্ধ রাতেও মুখোরিত থাকতো বরদাভবনের দেয়াল। আবার কখনো কখনো আব্বুর বেতের আঘাতে আমাদের কান্নায় কেঁদে উঠতো বরদাভবন।
মেইনগেটের সাথেই দুটো আমগাছ ছিল। আমের সিজানে সেই গাছে চলতো এলাকার দুষ্ট ছেলেদের হামলা। তাদের কিছু বলা যেতো না। বললেই গেরিলা কায়দায় চলবে টিনের চালে ঢিল ছোড়ার মহড়া।

এমনই হাসি-কান্না নিয়ে আমার বরদাভবনে বেড়ে ওঠা। আমার ভাইয়া এই বাসাটিতে থেকেই মাষ্টার্স পাশ করে লন্ডনে পাড়ি জমিয়েছে। আমার বোন ইন্টারমিডিয়েট শেষ করে চট্টগ্রাম গেছে ডাক্তার হওয়ার সপ্ন বুকে নিয়ে। আর আমি? আমি কাটিয়েছি আমার এস.এস.সি পরীক্ষা পর্যন্ত। নিজের বাসার মতো করে বেড়ে ওঠা বাড়িটি তো আর আমাদের নয়। সরকারী বাড়ি। আব্বু অবসরে গেলেন। আর বাড়িটিও ছাড়তে হলো। যে বরদাভবনে আমাদের হাসি-কান্না-সপ্ন মেশানো ছিল সে বাড়িটি ছাড়ার নির্মম দৃশ্য উপভোগ করেছি আমি, আব্বু আর আম্মু।

সে যাই হোক। ঢাকায় থেকেও প্রকৃতির এমন সৌন্দর্যের মাঝে আমি বড় হয়েছি তখন তা উপলব্ধি করতে পারিনি। কিন্তু এখন বুঝতে পারি। যখন দেখি, সকালে পাখিরা কিচিরমিচির করে ডাকে না, সূর্যের আলোরা ঘরে ঢোকার সুযোগ পায় না, বৃষ্টির ঝুমঝুম শব্দ কানে আসে না, শিশির ভেজা ঘাস চোখে দেখি না, শিউলী ফুলের মিষ্টি গন্ধ নাকে আসে না। তখন বুঝতে পারি এতসবের মূল্য কি!!
সব কিছু এখন স্মৃতি। সব অতীত। বরদাভবনের মতো এখন আমাদের ভাই-বোনদের আড্ডা জমে না। হাসি নাই, কান্না নাই। জমিদারীত্ব হারালে জমিদাররা নাকি নিস্তব্ধ হয়ে যেতো। ঠিক আব্বুও নিস্তব্ধ। আমরা প্রজারা এখন যেনো স্বাধীন। যে যার মতো চলি, কোন শাসন নেই, ভয় নেই। সব কেমন যেনো নিষ্প্রাণ। আমাদের সবার সুখ যেনো রেখে এসেছি ঐ বরদাভবনে। নিয়ে এসেছি শুধু নিস্তব্ধতা আর হতাশা।
ভাইয়া তিনবছর পর দেশে এসে আমাদের নতুন বাসায় উঠে। তখন ভাইয়াকে একদিন প্রশ্ন করলাম, ভাইয়া এতোদিন পর দেশে এসে তোমার কেমন লাগছে? ভাইয়া উত্তরে বলল, দেশে এসেছি ঠিকই কিন্তু মনে হচ্ছে নিজের ঘরে আসি নি। যে ঘর টিতে ২৫ বছর পর্যন্ত এক যুবক বেড়ে উঠেছে। যেই ঘরটিতে একটি যুবক অনেক সপ্ন দেখেছে, অনেক সপ্নের ভেঙে যাওয়া দেখেছে, অনেক হতাশা, অনেক কষ্ট যেই ঘরের একটি কোণায় সে জমিয়েছে। সেই ঘরটিই তো আমার ঘর। আমি তো আমার স্বপ্ন, আমার হতাশা, আমার হাসি তাদের কাছেই যেতে পারলাম না। তাহলে আর ঘরে ফেরা হলো কোথায়। ভাইয়াও যে তাঁর স্মৃতিতে তার ঘর বলতে আমাদের সেই সরকারী কোয়ার্টারটিকে মনে আগলে রেখেছে তা তখন বুঝলাম।

আমরা মানুষরা স্মৃতির কাছে, অতীতের কাছে কতো অসহায়। যার উপর ভর করা ছাড়া আমরা চলতে পারি না। কিছুক্ষনের জন্য হয়তো অতীতকে ভুলে থাকা যায় কিন্তু নির্জণে মনে পড়ে যায় সব কিছু। স্মৃতিরা তখন কেঁদে ওঠে। তখন বুকটা হাহাকার করে ওঠে। অতীতের কাছে ফিরে যেতে চায়। কিন্তু সম্ভব হয় না। এতো কখনো সম্ভব নয়। আর তখন আমরা আর্তনাদ করি অতীতের কাছ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য।
যাইহোক অনেক কিছু বলা হয়ে গেলো । লেখাটি জীবনানন্দ দাশের স্মৃতি কবিতাটি দিয়ে ইতি টানলাম।

থমথমে রাত, আমার পাশে বসল অতিথি-
বললে, আমি অতীত ক্ষুধা- তোমার অতীত স্মৃতি!
-যে দিনগুলো সাঙ্গ হল ঝড়বাদলের জলে,
শুষে গেলো মেরুর হিমে, মরুর আনলে,
ছায়ার মতো মিশেছিলাম আমি তাদের সনে;
তারা কোথায়?- বন্দি স্মৃতিই কাঁদছে তোমার মনে!
কাঁদছে তোমার মনের থাকে, চাপা ছাইয়ের তলে,
কাঁদছে তোমার স্যাঁতসেঁতে শ্বাস- ভিজা চোখের জলে,
কাঁদছে তোমার মূক মমতার রিক্ত পাথার ব্যেপে,
তোমার বুকের খাড়ার কোপে, খুনের বিষে ক্ষেপে!
আজকে রাতে কোন্ সে সুদূর ডাক দিয়েছে তারে, -
থাকবে না সে ত্রিশূলেমূলে, শিবের দেউলদ্বারে!
মুক্তি আমি দিলাম তারে - উল্লাসেতে দুলে
স্মৃতি আমার পালিয়ে গেলো বুকের কপাট খুলে
নবালোকে- নবীন উষার নহবতের মাঝে।
ঘুমিয়েছিলাম, দোরে আমার কার করাঘাত বাজে!
-- আবার আমায় ডাকলে কেনো স্বপনঘোরের থেকে!
অই লোকালোক-শৈলচূড়ায় চরণখানা রেখে
রয়েছিলাম মেঘের রাঙা মুখের পানে চেয়ে,
কোথা থেকে এলে তুমি হিম সরণী বেয়ে!
ঝিমঝিমে চোখ, জটা তোমার ভাসছে হাওয়ার ঝড়ে,
শ্মশানশিঙা বাজল তোমার প্রেতের গলার স্বরে!
আমার চোখের তারার সনে তোমার আখিঁর তারা
মিলে গেলো, তোমার মাঝে আবার হলেম হারা!
-- হারিয়ে গেলাম ত্রিশূলেমূলে, শিবের দেউলদ্বারে;
কাঁদছে স্মৃতি--কে দেবে গো -- মুক্তি দেবে তারে!

সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ সকাল ১১:০৭
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×