somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিশুদের রাজনীতিতে অংশগ্রহন মানে দেশের ভবিষ্যৎকে গলা টিপে হত্যা করা !!

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১২:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সময়ের সাথে সাথে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলগুলো কাজ করে থাকে। তাদের দাবী নিয়ে তারা আন্দোলন ও সংগ্রাম করে। আর এই সংগ্রাম আর আন্দোলনে যোগ দেয় তাদের দলীয় মতাদর্শে বিশ্বাসী কর্মীরা। কিন্তু ইদানিং দলীয় কর্মী হিসেবে সেই আন্দোলনের মিছিলে প্রাপ্ত বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুদেরকেও দেখা যাচ্ছে। রাজনীতির জ্ঞান কিংবা দেশের ভালো মন্দের সঠিক বিচার বুদ্ধির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো বয়স তাদের অনেকেরই নেই। তবুও এই সব শিশুদের দেখা যাচ্ছে তাদের উচ্চতা থেকেও বড় বড় সাইজের প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিলের সামনে। এটা আমাদের জন্য লজ্জাকর ছাড়া আর কিছুই নয়। সরকারী ভাবে অনুমোদন না থাকলেও ১৮ বছরের বা তার নিচের অনেক শিশু রাজনৈতিক মিছিল মিটিং সভা সমাবেশে অংশ নিয়ে থাকে। যে বয়সে তাদের স্কুলে যাওয়ার কথা সে বয়সে তারা রাজনৈতিক মিছিলে অংশগ্রহন করে নিজেদের জীবনের পাশাপাশি দেশের ভবিষ্যতকেও অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে। এর জন্য দায়ী আমরাই। আমাদের সচেতনতার অভাব আর উদাসীনতাই এই সব কোমল শিশুদের রাজনীতিতে নিয়ে আসার জন্য দায়ী।


ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম এর সৌজন্যে

জাতি সংঘ শিশু অধিকার সনদের ১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শিশুর লালন পালন ও বিকাশের জন্য পিতামাতার উভয়ের দায়িত্বকে সক্রিয় করে তুলতে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র উদ্যোগী হবে। আমাদের রাষ্ট্রের রাজনেতিক দলগুলোর এ উদ্যেগ নেয়াটা হয়তো এই ভিন্ন ধারায়। অনুচ্ছেদ ২৭ এ শিশুর উন্নয়নের ব্যাপারে বলা হয়েছে প্রতিটি শিশুর শারীরিক, মানসিক, আত্মিক, নৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়নের জন্য উন্নত জীবন মানের ব্যবস্থার প্রতি অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেবে। অনুচ্ছেদ ২৮ এ দেয়া হয়েছে শিশুর শিক্ষা লাভের অধিকার। রাজনীতিবিদদের কথা ছিল জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের ৩২ টি অনুচ্ছেদ বাস্তবায়ন করে শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করবে। অথচ তারাই নিয়ে আসছে শিশুদের ঝূকিপূর্ণ রাজনীতি প্রাঙ্গনে। যার প্রভাব পড়ছে শিশুর কোমলমতি মনে আর এর ফলে শিশুর সামাজিকিকরণ হচ্ছে ভিন্নভাবে। সূত্র : Click This Link



শিশুদের সার্বিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রণীত হয় বাংলাদেশ শিশু আইন ১৯৭৪ যা যুগোপযোগীকরণের মাধ্যমে শিশু আইন ২০১১ রূপে প্রণয়ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল শিশুদের পুনর্বাসন, পর্যায়ক্রমে শিশু শ্রম নিরসন, শিশুদের রাজনৈতিক কর্মকান্ডে ব্যবহার বন্ধ করা ও তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে শিক্ষা ও মৌলিক প্রয়োজনের ব্যবস্থা, সুযোগের সমতা, অধিকার ও কর্তব্য এবং জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা বিষয়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। জাতীয় শিশু নীতি ২০১১ এর ৬.৭.৪. অনুচ্ছেদে স্পষ্ট করে বলা হয়েছ” শিশুদের রাজনৈতিক কর্মকান্ডে ব্যবহার, প্রলোভন বা জোর করে জড়িত করা হবে না”। সূত্র http://www.mowca.gov.bd/?page_id=36



শিশুদের ভোট দেয়ার অধিকার নেই। আর থাকার কথাও না। কিন্তু একটি দেশের সরকার গঠন করতে হলে ভোট দরকার। আর তাই ভোটের রাজনীতিতে শিশুরা গুরুত্বহীন বলেই ধরা হয়ে থাকে। কিন্তু মিটিং কিংবা মিছিলের সময় শিশুরা রাজনীতিতে বেশ ভালো কাজে আসে। ওদের দিয়ে বোমা-অস্ত্র বহন করানো যায়। আড় এতে কেউ সন্দেহ করেনা। হরতালে স্কুল, পরীক্ষা বন্ধ থাকলে কারো কিছু যায় আসে না। এ অবস্থার পরিবর্তন হওয়া উচিত। শিশুরা সত্যিই জাতির জন্য শ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ।কিন্তু যারা আইন রক্ষার দায়িত্তে আছেন তারাই যদি আইন ভঙ্গ করেন তাহলে তাদের থেকে আমরা কি আশা করতে পারি। রাজনীতি এক মহান ব্রত নিয়ে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। কিন্তু এই কোমলমতি শিশুদের রাজনীতিতে অংশগ্রহনের মাধ্যমে এই দেশের রাজনৈতিক দলগুলো কী প্রমান করতে চায় ?

“"ফজরের নামাজ পড়ে চার-পাঁচ বড় ভাইয়ের সঙ্গে মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে মোহাম্মদপুর টাউন হলের সামনে যাই। গিয়ে দেখি আরো অনেকেই আছে। একসঙ্গে সবাই মিলে মিছিল শুরু করি। পরে আল্লাহ করিম মসজিদ এলাকায় একটি বাস ভাঙচুর করি। এর মধ্যে পুলিশ এসে দাবড়ানি দেয় আমাদের। পাশের গলিতে ঢুকে যাই। সেখানে কিছুক্ষণ থেকে পালিয়ে আবার মাদ্রাসায় চলে আসি”। নারীনীতি বাতিলের দাবিতে ফজলুল হক আমিনীর ডাকা হরতালে পিকেটিং করার ঘটনা এভাবেই বর্ণনা করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর জামি'আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার 'নাহুমির' (তৃতীয় শ্রেণী) ছাত্র মামুনুর রশীদ"। সূত্র Click This Link

"“শিশু সিয়ামের হাতে কাঠের ফ্রেমের প্ল্যাকার্ডের উচ্চতাও প্রায় তারই সমান। সামনে দাঁড়ানো বন্ধু রাজনকে বলল, ‘সানডে-মানডে কোলজ কইরা দিমু’। বেলা ৩টায় এ শিশুর কি আসলেই কথা ছিল খালেদা জিয়াকে মগবাজারে স্বাগত জানাতে রমনা থানা বিএনপি’র মিছিলের অগ্রভাগে অবস্থান নেওয়ার। সিয়ামের হাতের প্ল্যাকার্ডে রয়েছে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের ছবি। শহীদ জিয়াকে লাল সালাম জানানো হয়েছে সেখানে। এ লাল সালাম কী আমাদের রাজনীতির লাল লজ্জা নয়?বিএনপি’র গনমিছিলে এ ধরনের শিশুর সংখ্যা ছিল আর অনেকে। এদিকে বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতেও ঢাকা মহানগর আওয়ামীলীগের গনসমাবেশে গিয়েও দেখা মেলে ১১ বছরের রায়হান, অয়ন, ১২ বছরের শিবু, আপেলসহ অনেকের।আইনপ্রতিমন্ত্রী যখন মঞ্চে বিরোধী দলের সমালোচনা করে বক্তব্য দিচ্ছিলেন আর দেশের জঞ্জাল পরিস্কারের কথা বলছিলেন, তখন তার সামনেই স্লোগান দিচ্ছিল রায়হানরা। ভঙ্গ হচ্ছিল শিশুনীতি ২০১০ এবং জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ”"। সূত্র Click This Link

পত্রিকা খুলে ধরলেই শিশুদের রাজণৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহনের অনেক খবর আমাদের চোখে পড়ে। যা আমাদের সমগ্র জাতির জন্য কল্যানকর নয়। যে সব শিশুরা দেশের আগামী দিনের দেশের পরিচালক তাদের বর্তমানকে আমরা ধ্বংস করে দিতে পারি না। তাহলে দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নির্বিঘ্নে বেড়ে উঠতে সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা আমাদের নিজদের দায়িত্ব। তাই নিজেদের বিবেকবোধকে জাগ্রত করি, দেশকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সবার। ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১২:২৪
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×