জগতে একমাত্র নাস্তিকেদের মস্তিক ও বুদ্ধি মাথার মধ্যে অবস্থিত। এরা বাদে বাকী তাবদ মানুষের মস্তিক কারো হাটুতে, কারো আরো নিচে, আবার কারো কারো মস্তিকই নাই। তাই প্রত্যেক নাস্তিকই অসাধারন, তাদের প্রত্যেক যুক্তি-প্রশ্ন-উত্তর সবই অসাধারন।
যাক এই অসাধারন নাস্তিকদের অসাধারন তিনটি প্রশ্ন অহরহ শুনি:
১. পৃথিবীতে ধর্মের প্রয়োজন নাই। আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে ধর্মের নামে বহু যুদ্ধ, অন্যায়ভাবে হত্যা ইত্যাদি
হেন অপরাধ সংগঠিত হয়েছে। তাই পৃথিবীর সমস্যার মূলে আছে ধর্মে , নয় কি?
২.জগতের দশজন খারাপ, ঘৃনিত ব্যক্তির নাম উল্লেখ করুন। দেখুন এর মধ্যে কয়জন আস্তিক কয়জন নাস্তিক। পৃথিবীতে অপরাধে আস্তিকদের অবদান কতখানি আর নাস্তিকদের অবদান কতখানি?
৩. আফ্রিকায় যখন মুসলিমরা নিজেরা নিজেরা যুদ্ধ করে মরে, আফগানিস্তানে তালেবানদের হাতে যখন মুসলমানদের হত্যা হয়, তখন মুসলমানরা কোথায় থাকে? অন্যদিকে ইসরাঈল একটা মুসলিম হত্যা করলেও মুসলিমরা বিক্ষোভে ফেটে পরে। মুসলিমদের এই দ্বৈতচরিত্র কেন?
জ্ঞানের প্রশান্ত- আটলান্টিক নাস্তিক ভাইদের এমন যুক্তি শুনে আমার হাটুতে অতিসাধারন কিছু প্রশ্ন এসেছে।( আশা করি আমার মস্তিক কমপক্ষে হাটুতে আছে)
১. পৃথিবীর সর্বাধিক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের উপলক্ষ ছিল দেশ আর কারন ছিল উগ্র দেশ প্রেম। আপাত দৃষ্টিতে বোধহওয়া অনেক ধর্মীয় অজুহাতে লড়াইয়ের পেছনে মুল কারন ছিল উগ্র দেশ প্রেম। এখন এখানে দেশ বা দেশ প্রেমের কি দোষ? দেশ প্রেম নিষিদ্ধ করবো? আমরা কি বিশ্বায়নের ফাপা বেলুনে দেশের অস্তিত বিসর্জন দেয়ার কথা বলবো?
২.মানব সভ্যতার ইতিহাসে সেই শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কতজন আস্তিক আর কতজন নাস্তিক? সংখ্যা বিচারে আস্তিকদের আপরাধের অনুপাত আর নাস্তিকদের অপরাধের অনুপাত কত?
বড় অপরাধ সেই করতে পারে যার বড় ক্ষমতা আছে। নাস্তিক মধ্যে এমন ক্ষমতা আজ পর্যন্ত কতজনের ছিল আর কতজনের আছে? গত শতাব্দিতে নাস্তিকেরা যে সামান্য সময়ের জন্য শাসনতন্ত্র পরিচালনা করেছে, সেই সময় তারা রক্তগঙ্গা বয়িয়ে দেয়, স্বৈরশাসনে মানুষকে অতিষ্ট করে তোলে। যদি হাজার হাজার বছর ধরে তারা শাসনযন্ত্র নিয়ন্ত্রন করতো , তবে তারা অত্যাচারে আস্তিকদের ছাড়িয়ে যেতো না তার নিশ্চয়তা কি?
পৃথিবীতে যতভালো কাজ হয়েছে তার মধ্যে আস্তিক আর নাস্তিকদের অনুপাত করা হোক। ফলাফল সহজেই অনুমেয়। পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো দশজন লোকের নাম বলুন; কয়জন নাস্তিক? একজন নাস্তিক অপরাধ করে না শুধুমাত্র তার মানবতাবোধ থেকে। যদি তার মানবতাবোধ হারিয়ে যায় বা না থাকে তবে?
৩.পাকিস্তানিরা রাষ্ট্রের নামে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, হত্যাকান্ড চালিয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারও। তাই বলে দুটা এক হয়ে গেলো? যদি এমন হতো পাকিস্থানীদের হাতে নিহতের সংখ্যা ১২ হাজার আর বাংলাদেশ সরকারের হাতে নিহতের সংখ্যা ১৫ হাজার , তবুও কি আমাদের ঘৃনা-ক্ষোভ অপরাধী পাকিস্তানিদের প্রতি অপেক্ষাকৃত কম থাকতো? ছাত্র সংগঠনগুলোর হাতেও কিশোরী ধর্ষিত হয়, খুন হন; বি এস এফের হাতেও হয়। দুইটি ঘটনায় আমাদের প্রতিক্রিয়া কি সমান?
বাংলাদেশী এই পরিচয়ের কারনে কারো মৃত্যু সমস্র বাংলাদেশীদের আন্দোলিত করে। অনেকটা সেভাবেই
মুসলমান পরিচয়ের কারনে কেউ মারা গেলে সব মুসলমানের প্রতিক্রিয়া হওয়া স্বাভাবিক।
একটি ব্যষ্টিক উদাহরনে যাচ্ছি। আমার ছোট ভাইকে যদি আমার কাজিন চড় মারে আর আমার দুসম্পর্কের আত্মীয় চড় মারে- ঘটনা দুটি কি আমার কাছে এক? আর চড় যদি পাশের বাড়িতে ঝগড়া আছে এমন কেউ মারে?
পাকিস্তানের ব্যাপারটি এখানে শুধু উদাহরন হিসেবে দেয়া হয়েছে। আশা করি এতে করো আপত্তি থাকবে না।আক্রমনাত্মক ভাষার জন্য দু:খিত।