somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জার্নি বাই নৌকা....উইথ দালাল ....টু ইতালি। - (পর্ব ৫)

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের পর্ব গুলো পড়তে নিচে ক্লিক করুন।
জার্নি বাই নৌকা....উইথ দালাল ....টু ইতালি।
জার্নি বাই নৌকা....উইথ দালাল ....টু ইতালি। (পর্ব - ২)
জার্নি বাই নৌকা....উইথ দালাল ....টু ইতালি। (পর্ব -৩)
জার্নি বাই নৌকা....উইথ দালাল ....টু ইতালি। (পর্ব -৪)

পর্ব ৫



আনলাকি ১৩ বোধ হয় একেই বলে।১৩তম দিনের দিন মাঝি ঘোষণা দিলো, ট্রলার আর আগে যাবে না।তারা এখন গভীর সমুদ্রে আছে,সামনের পানির অবস্থা দেখে তাদের ধারনা হচ্ছে,সামনে তিমি মাছের আখড়া।ওখানে তিমি ঘোরাফেরা করছে।আর সামনে যাওয়া যাবে না।এমনবস্থায় ট্রলার আগে গেলে ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ট্রলারের সাগরেদও দেখি ওস্তাদের সাথে তাল মিলিয়েছে।আপাতত কাজ হচ্ছে ইঞ্জিন বন্ধ করে বসে থাকা।কতদিন লাগবে তা ও ঠিক নাই।ট্রলার চললে মনে হয় যেন ট্রলার দাড়িয়ে আছে,আর ট্রলার দাড়িয়ে থাকলে মনে হয় যেন পৃথিবী যেন থমকে আছে।অদ্ভুত অনুভুতি।মোটামুটি ট্রলারের সেই ঘটনার পর থেকেই রঞ্জু নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছে।সে চিন্তা করে রেখেছে মরবই যখন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত পৃথিবীর আনন্দ উপভোগ করে মরব।


মাঝিদের গতিবিধি কেমন যেন সন্দেহজনক মনে হতে লাগল।২ দিন ধরে একই জায়গাই দাড়িয়ে আছে।কেউ একজন বলছিল, ওই সব তিমি টিমি কিছুই না।আমাদের ট্রলার পথ হারিয়ে ফেলেছে।সবার মাঝে মৃদু গুঞ্জন শুনা গেল। এ তো দেখি মরার উপর খারার ঘা। যা হবার হোক, ট্রলার পথ খুজে পাক আর না পাক রঞ্জু তার নিজের পথ খুজে পেয়েছে।
দিন যায়...হঠাত করে ট্রলার এর একজনের চোখে পড়লো খুব দূরে আলো দেখা যাচ্ছে।জলচে-নিভচে।কিন্তু জলার আর নিভার মদ্দে ছন্দ নেই।আলো একবার ছোট আর একবার বড় দেখা যায়।ট্রলারের সবাই বাতি নিভিয়ে ধীরে ধীরে এগুতে লাগলো।এই টুকু পথ পাড়ি দিতে তাদের দেড় দিনের মতো লাগলো।


রাতের বেলা একটা ব্যপশা,গুমোট এলাকায়,বড় বড় প্রবাল এ ভরপুর জায়গায় তাদের সবাইকে নেমে যেতে বলল।রঞ্জু নেমেই টের পেল যে তার গলা সমান পানি আর হাটতে গিয়ে পা কেটে যাচ্ছে প্রবালের কারনে।ট্রলার এর সবাই কার আগে কে নামবে এই নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হল।মাঝি শুধু একবার সবাই কে সতর্ক করে দিলো যে, ইটালির নেভাল গার্ড এই সময় সমুদ্রে চেকিং চলে।সবাই যেন সাবধান থাকে।

নামার পরপরই সবাই নিকটবর্তী তীর কে লক্ষ্য করে দৌড় দিল।শুধু রঞ্জু ছিল ব্যতিক্রম।এত লোক এক্ সাথে এক জায়গা দিয়ে ডুকলে সমস্যা।তাই সে কিছু দূর ঘুরে তীরে উঠবে চিন্তা করলো।তার সাথে আছে সেই লোকটা যার সাথে তার ট্রলারে পরিচয় হয়েছিল আর অসুস্থতার সময় তাকে সাহায্য করেছিল।

রঞ্জু অনেকক্ষণ হল তীরবর্তী একটা বড় প্রবালের পিছনে,কোমর পানিতে মাথা নিচু করে বসে আছে।সমুদ্র থেকে নেভাল গার্ডের লোকজন খুব পাওয়ারফুল সার্চলাইট নিয়ে পাহারা দিচ্ছে।লাইট তার কাছাকাছি আসা মাত্র মাথা নিচু করে ফেলে আর লাইট চলে গেলে মাথা তুলে মুখ হা করে শ্বাস নেয়।


রঞ্জু প্রবালের আড়াল থেকে বের হল টিক মধ্য দুপুরে।ও কোন রিস্ক নিতে চাচ্ছে না।সাথে থাকা লোকটাকে বলল আলাদা হয়ে যেতে। লোকটা ওকে অনুনয় করলো যাতে ওকে আলাদা না করে।ও তাকে নিজের ভাইএর মতো মনে করে।ও যেখানে যায় লোকটা সেখানে যেতে রাজি।কিন্তু রঞ্জু এসব ইমোশন কে পাত্তা দিলো না।

শহরে ঢুকার মুখে দুজন আলাদা হয়ে গেলো।রঞ্জু কিছুদুর হেটে গিয়ে পৌছাল একটা বাস স্ট্যান্ড এ।সেখানে সে দুজন রমনির পথ আঁটকে ইশারা করে বুঝাতে চাইল যে ও ক্ষুধার্ত।রমনি দুজন প্রথমে ভয় পেয়ে গিয়েছিল।পরে রঞ্জু বুঝাল যে সে কয়েকদিন ধরে না খেয়ে আছে।খুব খারাপ অবস্থা।তখন মেয়ে দুটোর খুব মায়া হল।তারা তাকে ২ টা বার্গার কিনে দিলো,সাথে কিছু টাকা ও ফোন নম্বরও দিলো।এবং বলল যে কোন সাহায্য লাগলে তাদের যেন এই নম্বরে কল করে।

বার্গার খেয়ে রঞ্জু বাহিরে বের হতেই পুলিশ এর গাড়ি এসে তার সামনে থামল এবং তার চুলদাড়ি দেখে তাকে সন্দেহজনক হিসেবে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে গেলো।

(আগামি পর্বে সমাপ্য)।

কেমন হচ্ছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৭
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×