সূর্যের আলো তোমার জানালায়
এসে দাঁড়াবার অনেক আগে--
কোমল বাতাসের গন্ধ নাকে এলে
ছন্দহীন জেগে উঠবে তুমি আচমকা,
কিছু একটা অধরা টানে-
দাঁড়াবে গিয়ে টুকরো আকাশের তলে-
তোমার চোখে পড়বে —
আবছা অন্ধকারে শুকতারাটি
একলা ভেসে চলেছে
আলোকময় অন্তিমের দিকে
আর তখন যদি তোমার মনে হয় হঠাৎ,
সে আর নেই ! হায়!!
কিংবা ধর , সকালের টেবিলে চেনা প্রাত:রাশ,
গোছগাছ, হন্তদন্ত দরজার হাতলে হাত রাখতেই
তোমার মনে হয় যদি-
সে আর নেই !
জনারন্য পাড়ি দিতে দিতে-
গিজগিজ ঘর্মাক্ত ভীড়,
শ্লথ ঘরের দিকে ফিরে আসছ তুমি।
দক্ষিনের সমুদ্র পার হয়ে
ছুটে আসা শীতল বাতাসের স্পর্শে-
বিদ্যুৎচমকের মত তোমার মনে হবে,
সে আর নেই ।
সন্ধ্যার এলোমেলো প্রত্যাবর্তনের পর,
চায়ের কাপ হাতে-
সংবাদপত্রের পাতায় হঠাৎ আটকে যাবে
তোমার চোখ ,
একটিমাত্র শব্দে
কোথাও - অথবা কোথাও নয় -
কোথাও নয় সেভাবে-
তোমার আসলে তখন মনে হচ্ছে,
সে আর নেই।
দিনের সমুদয় ক্লান্তিকে
কোথাও সমর্পনের আশায়
তুমি যখন এলিয়ে দেবে গা -
অন্ধকারের আশ্রয়ে,
আপ্রাণ প্রার্থনা করবে বিস্মৃতির ঘুমের জন্যে,
তোমার অভ্যস্ত দূরত্বে হাত
আমাকে খুঁজে পাবে না আর-
তখন তোমার মনে হবে ফের -
সে নেই ! সে আর নেই !!
হায়! সে কোথাও নেই আর !
আসলে আমি স্পষ্টতই জানি,
তখনই কেবল আমি আবার ফিরে এসেছি।
দুর্দান্ত প্রেমে- আকাশ লাল করে
শিমুল ফুলের মত, উদ্দাম বাতাসে
ওলট পালট বাতাবীগন্ধ শূন্যতার মত
তীব্রভাবে তোমার কাছাকাছি ।
আর মাঝখানের ওই সময়টুকু -
যখন আমি ছিলাম
তোমার পাশে পাশে,
ঝড়ের সাথে সাথে ঝরাপাতার মত,
ভরা পূর্ণিমার চাঁদে জ্যোৎস্নার মত,
শ্রাবনের প্লাবনে ভাসা জলের মত,
পথের পাশে পাশে বুনো ফুলের মত,
তোমার আটপৌরে অভ্যাসের অবহেলায় -
বিস্মৃত, বিশেষত্বহীন, উপেক্ষিত ।
তখন তো আসলে রচিত হচ্ছিল
অনন্ত বিচ্ছেদের নিপুন চিত্রায়ন ।
অথচ অমন সময়কে -
প্রাপ্তি কিংবা মিলন
অথবা সার্থকতা বলে ভুল করেছি আমরা,
বহুকাল,
অন্য সকলের মত।
অনন্ত অন্ত্যমিলের শেষ পংক্তিটি রচিত হবার আগে ।
———————
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১২:৫০