somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সেলিম আনোয়ার
পেশায় ভূতত্ত্ববিদ ।ভালো লাগে কবিতা পড়তে। একসময় ক্রিকেট খেলতে খুব ভালবাসতাম। এখন সময় পেলে কবিতা লিখি। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কার্জন হল ভালো লাগে খুব। ভালোলাগে রবীন্দ্র সংগীত আর কবিতা । সবচেয়ে ভালো লাগে স্বদেশ আর স্বাধীন ভাবে ভাবতে। মাছ ধরতে

মায়াবতি-চ্যাপ্টার-২

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সেদিন ২৫শে বৈশাখ।ছায়ানটে কবিগুরুর জন্মদিন উপলক্ষে রবীন্দ্র সঙ্গীতের আয়োজন করা হয়েছে।তখন আমার অফিস ঝিগাতলায়।অফিস শেষে রিকশায় ছায়ানটে গিয়ে বুঝলাম অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে।কবিগুরুর গান অসাধারণ।রোমান্টিক গান গুলো মনে অপার আনন্দ দেয়।তার শেষের কবিতা পড়তে পড়তে একসময় অমিত হয়ে যেতাম কল্পনায় মননে।তখন অন্তরে লাবণ্যর অভাব অনুভব করতে শুরু করি।কবিগুরুর অমর সৃষ্টি লাবণ্য তখন শয়নে স্বপনে আধোজাগরণে।সেই কবিগুরুর স্মরণে অনুষ্ঠান সেই অনুষ্ঠানেই মায়াবতীর সঙ্গে আমার প্রথম দেখা ।কবিগুরুর জন্মদিনে আমার আর তার প্রথম সাক্ষাৎ।এযেন কবি গুরুর দান।মাযাবতী নীল রঙের শাড়িতে নীল পরীটি সেজে রিকশা থেকে নামলো।তার কাছে খুচরা টাকা নেই।রিকশাওয়ালাও বড় নোট ভাঙ্গিয়ে দিতে পারবে না।কেউ খুচরা দিচ্ছে না।সবাই হয়তো উৎসাহ নিয়ে মায়াবতীর বিড়ম্বণা উপভোগ করছে।আমার কাছেও খুচরা নাই।তবে রিকশাভাড়ার বিশ টাকা আছে। তাই দিয়ে মায়াবতিকে আপদমুক্ত করলাম।

তার আগমন হেতু জেনে পুলকিত হলাম।তিনিও রবীন্দ্রসঙ্গিত ভক্ত।আমার করা ক্ষুদ্র উপকারের বিনিময়ে তার পাশে বসে অনুষ্ঠান দেখার অমূল্য সুযোগ পেলাম।পাপিয়া সারোয়ার গাচ্ছিলেন‍
"সেদিন দুজনে দুলেছিনো বনে ফুলডোরে বাধা ঝুলনা.......।"
গান টা মায়াবতীর উপস্থিতিতে স্বর্গীয় আবেশ তৈরী করে। কবি গুরুর গানটি কিন্তু রোমান্টিক ট্রাজেডি। গানের শুরুটা রুমাঞ্চ দিয়ে।
"সেদিন আকাশে ছিলো তুমি জানো আমার মনেরও প্রলাপ জড়ানো .....পূর্ণিমা রাতে চাঁদ ওঠেছিলো গগণে দেখা হয়েছিলো তোমাতে আমাতে কিজানি কি মহালগনে"

অসাধারণ লিরিকস। কিন্তু ‌‍"এখন আমার বেলা নাহি আর বহিব একাকি বিরহের ভার" দিয়ে নিপুন দক্ষতায় বিরহ ঢুকিয়ে দিয়েছেন।একাকিত্বের যন্ত্রণা দিয়েছেন।তবে যে দিনটিতে মায়াবতীর সঙ্গে আমার দেখা সেটাকে আমি মহালগনই বলবো। আর মায়াবতীর বর্ননা দিলে কবি গুরুর গানের কথায় বলতে হবে আমার ও পরাণ যাহা চায় তুমি তাই তাইগো তোমা ছাড়া এ জগতে মোর কেহ নাই কিছু নাই গো ।গুরুদেব হয়তো মায়াবতি কে দেখেই ঐ্ গান খানি লিখেছিলেন!অনেক আনন্দমাখা সময় দ্রুতই ফুরিয়ে যায়।দেখতে দেখতে বেলা শেষ হলো বিদায়ের মুহূর্ত হাজির। মায়াবতির উপস্থিতি শিশির বিন্দুর মতোই ক্ষণস্থায়ি।তার গায়ের কাঠালচাপা ঘ্রাণ,নিষ্পাপ চেহারা আর কোকিলকন্ঠি সুর আমার হৃদয়ে স্থায়ী আসন নিল।বিদায় মুহূর্তে আমার এক খানি ভিজিটিং কার্ড তার কাছে দিলাম।মায়াবতি একটু সম্মতিসূচক অনুমতি পেলে আমি তাকে বাসায় পৌছে দিতাম।সে সুযোগটিও হলো না।ওকে বিদায় দিতে খারাপ লাগছিলো। কারণ রাজধানীর বুকে লক্ষ মানুষ আর শত ব্যস্ততার ভিড়ে তার সঙ্গে দেখা হওয়ার সুযোগ আর নাই বললেই চলে।

তার কাছে যে কনটাক্ট নাম্বার চাইবো সেটাও তিনি কিভাবে নেন তাই আর সাহস
করলাম না। ব্যাপারটা অনধিকার চর্চার মতো মনে হলো। মায়াবতি অনুষ্ঠান চলাকালে আমার দিকে বেশ কয়েকবার খেয়াল করেছে সেটি কিন্তু আমার দৃষ্টি এড়ায় নাই ।তবু ধরে নিতে হয় এ দেখাই শেষ দেখা। রিকশাভাড়ার টাকাটা কিভাবে দিবে বলাতে সেই সুযোগে নিজের ভিজিটিং কার্ডখানি তাকে দেওয়ার সুযোগ পাই। যদিও তা দিতে পেরে আমি ধন্যই হয়েছি ।

বার বার মনে আসছিলো শেষে কবিতার শেষ চরণ

'তোমায় যা দিয়েছিনো সে তোমরই দান
গ্রহণ করেছে যত ঋণি করেছ তত আমায়
হে বন্ধু বিদায়।' চলবে
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২২
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×