চারজন কর্মকর্তার সমন্বযে দুর্দান্ত একটা টিম্ ।সালাম ,কালাম, আলম আর অর্ক।দুই টিমে ভাগ হয়ে অচিন বিলের মূল্যবান খনিজ সম্পদ অন্বেষণে।ওখানে কালো এক ধরণের পদার্থ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।যদিও যে রিপোর্টের ভিত্তিতে এখানে আগমন সেটি হতাশাজনকই বটে। পিট থেকে পাওয়ার প্লান্ট করা যায়।দেশে শক্তির ক্রাইসিস এখন চরমে।তাই সেটি সমাধানে সরকারের এই মহতী উদ্যোগ।
চার কলিগ মিলে উঠলেন সরকারী এক কোয়ার্টারে এখানে তিনমাস অবস্থান করে পিট অনুসন্ধান চালানো লাগবে।আপাতত পানি অনুসণ্ধানেই সবাই হিমসিম খাচ্ছে।এখানে পানির ক্রাইসিস চরমে।সহজ বাংলায় পানি নাই। তবে উপজেলা
চেয়ারম্যান পানি প্রাপ্তির দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলেন্ । সরকারি আশ্বাস কেউ আশ্বস্ত না হয়ে হতাশই হলেন। এত সরকারি কর্মকর্তা এই কোয়ার্টারে অথচ পানি নাই ! অবশ্য একারনেই এখানে থাকার সুযোগ মিলেছে । এই ফ্লাটে যিনি
থাকতেন পানির অভাবেই এটি ছেড়েছেন !
সবাই যার যার কক্ষে অবস্থান নিলেন।সালাম আর কালাম সাহেব দুই দল প্রধান দুই কক্ষ নিলেন। অর্ক সাহেব আর আলম সাহেব দুইজন মিলে এক কক্ষ পেলেন। সেটিতে আবার টাইলস নেই । তা্ই দুইজনের মন খারাপ।সণ্ধ্যা হতেই আরেকটি
সমস্যা প্রকট আকারে বুঝা গেল ।সেটি হলো লোড শেডিং।মোটামুটি সহজ ভাষায় বলতে গেলে যতটা রাত একজন ভদ্র মানুষ জেগে থাকেন সেই সময় পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না।
রাতে ঘুমুতে গিয়ে অর্ক সাহেব নতুন একটি মহাউপসর্গ বুঝলেন সেটি হলো আলম সাহেবের নাক ডাকা।প্রচন্ড শব্দে তিনি একাজটি করেন। কোন রিদমও মেইনটেইন করেন না।চরম যন্ত্রনা দায়ক।আলম সাহেবের নাক ডাকা সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়।যতবার রিদম চেন্জ ততবার ঘুম ভাঙে অর্ক সাহেবের। সেই হিসেবে কম করে হলেও চারবার। রাতে চার বার ঘুম ভাঙলে জানে কিছু থাকে? শুধু কি তাই সকালে ঘুম ভাঙলে আলম সাহেবের মুখে কথার ফোয়ারা ছুটে।সারারাত নাক দিয়ে জ্বালানোর পর
সূর্য ওঠার সঙ্গে মুখ নিঃসৃত বানী দিয়ে জ্বালা দিতে ভুল করেন না।
সালাম সাহেব দল প্রধান একজন অভিজ্ঞ গবেষক। তার দাপটে নতুনরা তটস্থ।কিছুক্ষণ পর পর তার মিসেস তাকে ফোন করে । বাচ্চা তার বাবার কাছে আসতে
চায় ঘরে থাকতে চায় না ইত্যাদি ইত্যাদি । সমস্যা হলো তার অভ্যাস গ্রাম্য মাতবর টাইপ । কে কখন কোথায় যাবে খাবে কি করবে না করবে ইত্যাদি তদারকীতে বাকী
তিন কর্মকর্তার তথৈবচ অবস্থা।
-------------------------------------------------------
কালাম সাহেব রগচটা মানুষ্।পন্ডিতম্মন্য।তিনি নিজেকে আইনস্টাইন মনে করেন।তার লোকদেখানো ভাবে সবাই যারপরনাই বিরক্ত। প্রথম রাতেই দেখা গেলো তার কক্ষে বাল্ব জ্বলছে । তার শিয়রে কিছু বই আধখোলা। যে কেউ বুঝবে তিনি সারারাত পাঠে মনোনিবেশ করেছেন।অধ্যায়ন করতে করতে তার রাত গেছে। আহারে কত বড় বিজ্ঞানী।যে কোন বিষয়ে তার জ্ঞানের সীমা পরিসীমা নেই । তার যত সমস্যা অর্ক সাহেব কে নিয়ে। কোন ব্যাপারে আলাপ শুরু হলে অর্ক সাহেব তাকে বেকায়দায় ফেলে দেন। একগাদা ম্যাপ আর ফাইল পত্র , প্রতিবেদন ঘেটে একটা ভিলেইন মার্কা হাসি দিয়ে নিজের সাইট ঠিক করলেন । ভাবটা এমন তিনি খনিজ সম্পদ কোথায় আছে বুঝে ফেলেছেন। অর্ক সাহেব যথারীতি অবজ্ঞার হাসি দিলেন। সেটাই কালাম সাহেবের গাত্র দাহের জন্য যথেষ্ট।
পরেরদিন সকাল বেলা শুরু হলো অনুসন্ধান।প্রথম দিনেই সালাম সাহেব আর অর্ক সাহেব খনিজের সন্ধান পেলেন।কালাম সাহেবের হাইপোথেসিস মাঠে মারা গেল।কালাম সাহেব আর আলম সাহেব সারা দিনেও তা পেলেন না।দিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা বলতে প্রথম দিনে হাওড়ে কাজ করতে গিয়ে একবার কোমর অবধি কাদায় ডুবে গেলেন অর্ক সাহেব তার দামী জুতো এই কাজের উপযোগী নয় সেটাও বুঝে গেলেন আর কাদায় খালি পায়ে সিঙ্গারা কাটা বিধে খুব ব্যাথা পেলেন।সালাম সাহেব এই সব জায়গায় হেটে অভ্যস্থ অর্ক জীবনের প্রথম খোলা মাঠে কাদায় ধান ক্ষেতে কাজ করছেন।রাতে প্রচন্ড জ্বর এলো অর্ক সাহেবের।পায়ের পাতা ফুলে গেল।
হাওড় জীবন অন্যরকম । বিলের পানিতে নানা ধরণের লতা গুল্ম জংলী ফুল,সারি সারি সাদা বক,বালি হাস,ঝাকে ঝাকে পাতি হাস ,পাখির ডাক,এক কোণায় হিজলের বন । সেখানে গাঙচিল মাছ শিকারে ওৎ পেতে আছে্ ।কবি জীবনান্দের হিজলের বন,সেখানে লাগাতার ঘুঘু পাখি ডেকেই চলছে। মনে পড়ছে
সব ঘুঘু ডাকিতেছে হিজলের বনে
পৃথিবীর সব প্রেম তোমার আমার মনে।
হাওড় ছয় মাস থাকে পানির নিচে।বাকী ছয়মাস শুকণো থাকে।জেগে ওঠে ধানী জমি।সেখানে নানা ফসল সবজি আর শাকের বাম্পার ফলন হয়। মাঠে মহিষের পাল ,গরুর পাল আর তাদের সঙ্গে রাখাল বালক । মাঠেই দুটা ঘর একটাতে মানুষ থাকে আরেকটায় থাকে হাঁস,গরু কিংবা মহিষের পাল । এই রকম অনেক গুলি খামার। মানুষ আর পশুর দারুণ মিথোজীবিতা । জুড়ী নদীর উপনদী গুলো চারদিক দিয়ে ঘিরে ধরেছে হাওড়টা। এই খানে ভূগর্ভস্থ পানি সেচ কাজে ব্যবহার হয় না। জুড়ী নদীর উপনদি তথা পাহাড়ি পানি সমগ্র এলাকায় সেচের একমাত্র উৎস। সেই হিসেবে এই এলাকাকে জুড়ী নদীর দান বলা যায়। রাবার ব্রিজ দিয়ে পানির গতি নিয়ন্ত্রণ করে এই এলাকায় সেচ দেয়া হয় । সারা বিল জুড়ে মাছ মারার ধূম । জেলেরা মাছ ধরার জন্য বিশাল জাল টানে। তাজা মাছ লাফায় সেগুলোতে সূর্যালোক পড়ে রুপালী ঝিলিক দেয় ।বড় বড় মাছ ওঠে । ওঠে হরেক রকমের ছোট মাছ । দেখলেই বুঝা যায় সেগুলো অনেক সুস্বাদু।মাছ ধরার ফাঁদ সেট করা আছে অনেক জায়গায়।মৃদু মন্দ বাতাস।মনে হবে স্বপ্নের কোন দেশে চলছি ছুটে যাযাবর আমি।সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম ।আর স্বপ্নরা দুস্বপ্ন হতে সময় নেয় না বেশিক্ষণ সন্ধ্যে হলেই বিদ্যুৎ নেই।এলাকা বাসীর কাছে জানা গেল কয়েকমাস ধরে এখানে রাতে বিদ্যুৎ থাকে না।এসব ভেবে খুব বিরক্ত অর্ক সাহেব।রাতের বেলা আলম সাহেবের নাক ডাকা তাতে নতুন মাত্রা দেয়। বলতে গেলে লিভিং
ইন হেল এন্ড হেভেন। আলম সাহেবের বিয়ের আলাপও চলছিলো মুঠোফোনে তার সেগুলো নিয়েই ব্যস্ত সময় কাটে্ । আলোচনায় বোঝা যাচ্ছিলো তিনি হয়তো ট্যুর চলাকালীন সময়েই বিয়ে করে ফেলবেন। এভাবেই চলছে দিনকাল।
------------------------------------------------------------------
একদিন খুব সকালে আলম সাহেব অর্ক সাহেবকে ডেকে বলেন বস এই এলাকায় সেলুন দেখেছেন কোথায়?
কেন?
দরকার আছে।
না দেখি নি।
এরপর সন্ধ্যায় দেখা গেলো আলম সাহেবের মাথা ন্যড়া।ব্যাপরকি জিজ্ঞাসা করায় তিনি বলে দিলেন তার বিয়েটা ভেঙে গেছে।চলতি মাসের ২২ তারিখে তার বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো।সেই স্বপ্ন বালির বাধের মত উবে গেল।মনের দুঃখে মাথা ন্যাড়া করেছেন।আলম সাহেবের জন্য অর্ক সাহেবের মায়া হলো।কারন তিনি ও বিয়ে করতে পারেন নি এখনো।যদিও তার পিছনে একটা মেয়ের ছায়া লেগেছে।যার কারণে তার মুঠোফোন সাইলেন্ট রাখেন। এই নিয়ে সালাম সাহেব বেশ বিরক্ত তার উপর। কারন কল করে তাকে প্রায়ই পান না্ ।অজানা নম্বর অর্ক সাহেব রিসিভ করেন না একই কারণে।এই নিয়ে তার উৎকন্ঠার শেষ নেই।রাত ৩টায় কল আসে।কল রিসিভ না করলে মেসেজ আসে্ ।রুমান্টিক সব মেসেজ।সে যাই হোক বিয়ের পাত্রি তো আর পাচ্ছেন না।একজন দুঃখী বুঝে দুঃখীর ব্যথা। এই হিসেবে অর্ক আলম সাহেবের দুখের সারথী।
মরার উপর খরার ঘার মত কালাম সাহেবের জ্ঞান বিতরণ কর্মসূচী।কেউ তার কথা শুনুক আর না শুনুক তিনি অকৃপন ভাবে তা বিলিয়ে যাচ্ছেন।
সাত সকালে সাইটে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু । আর সকাল ৮.৩০ ঘটিকার মধ্যে তিনি গাড়ীতে।অফিসে গাড়ী ক্রাইসিস ।আর সরকারী ড্রাইভার? তারা তো বলতে গেলে রাজা।বহির অংগন কাজে তাদের নিযে আসলে তাদের দাবী দাওয়া মিটাতে হিমসিম খাওয়া লাগে।স্বেচ্ছা চারিতা চরমে ওঠে । রাস্তা সামান্য খারাপ হলেই গাড়ী আর এগুবে না।তাই এই বিকল্প গাড়ীর ব্যবস্থা; নোয়া মাইক্রো আর ড্রাইভার।
-------------------------------------------------------------------
গাড়ী থেকে নেমে প্রায় কিলোমিটার খানেক হেটে দশ জায়গায় খনন করতে হয় ৩০০ মিটার পর পর।তাতে কিলো পাঁচেক হাটা লাগে।চলার পথ উচু নীচু।আর দুপুর বেলা সূর্য মাথার উপর । প্রায়ই কাদা মারানো লাগে। এককথায় প্রচন্ড পরিশ্রম।গায়ের রং কালো হয়ে গেলো সবারই। স্থানীয় এম পি বিলে মূত্রা করচ হিজল গাছ রোপন করছেন্ ।গাছগুলো যে গজাবে না সেটি যে কেউ বুঝতে পারবে।এই কাজে নিয়োজিত রয়েছে চাবাগানের শ্রমিকরা। তারা দৈনিক ৪০ টাকা পারিশ্রমিক পায়।অর্জন বলতে ঐটুকুই।কিছু মানুষের রুটি রুজির ব্যবস্থা হয়েছে।স্থানীয় এমপি কয়েক কোটি টাকা জলে ঢালছেন।ভরা মওসুমে এই জায়গাগুলো দশ হাত পানির নীচে থাকে।এখনই চারাগুলো মৃত।ওগুলো পানির নীচে পচে সার হবে বৃক্ষ হওয়ার চান্স নাই।দেশের সম্পদ জলে ঢালার বিশেষ অধিকার নিয়ে এই সব নেতাদের জন্ম।তাদের পকেট ভরবে ফুলে ফেপে ওঠবে।আর হাওড় রক্ষা?হাওড়ের মাছ রক্ষা?মাছ মারা ধুম চলে এখানে।যত প্রকারে মাছ মারা যায় তার সব ব্যবস্থায় এখানে চলছে।প্রকৃতি রক্ষার শ্রেষ্ঠ উপায় তাকে প্রকৃতির কাছে ছেড়ে দেয়া্ ।মানুষরা প্রকৃতির বড় শত্রু।আর মৎসকূল সেগুলো তাদের অহংকারের প্রাশ্চিত্য করছে।
স্রস্টা মানুষ সৃষ্টি করে সকল প্রানীকে তাদের সেবায় নিয়োজিত হওয়ার নির্দেশ দিলেন।কিন্তু মৎসকুল বেকে বসল।তারা স্রষ্টার কাছে দাবি জানালো তারা যেহেতু মানুষের আগে সৃষ্টি হয়েছে তাই তারাই মানুষকে ব্যবহার করবে।মাছই মানুষকে ভক্ষণ করবে।স্রষ্টা মৎসকূলের উপর নারাজ হলো তাদের অভিশপ্ত করে দিলো।অভিশাপ হলো মানুষ তাদের সর্ববস্থায় ভক্ষন করবে।মাছই একমাত্র প্রানী যেটাকে মানুষ তাজা এবং মরা অবস্থায় খায়।
এমনকি অর্ধপচা হলে সেগুলো সাজনা পাতা লেবু পাতা দিযে খায়।মরা মুরগী হাস বা অন্য কোন পাখি কিন্তু খায় না।কিন্তু মরা মাছ খায়।এমনকি মাছ মরে পচে গেলেও সেগুলো শুটকি বানিয়ে খায়।পরকালেও মাছের ক্ষমা নাই জান্নাতে মুহাম্মদ সা এর বিয়েতে মাছের কলিজা দিযে মেহমানদারি করা হবে।মাছকাহন এখানেই শেষ।
এই বিলের অনেক মাছেই ঘা দেখা যায়।মাছ মরে ভেসে থাকছে।আর সেগুলো সংগ্রহ করে শুটকি করা হচ্ছে।মাছের অহংকারের জবাব হাওড়ের মানুষ ভালই দিচ্ছে।নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না।বুড়া মাছ গুড়া মাছ ডিমওয়ালা মাছ কারুরই রক্ষা নাই।এই খাই খাই এর মধ্যে এতগুলো বক বেঁচে থাকা রহস্যজনক ঘটনাই বটে।এই বিলে বকের মেলা বসে।তবে অতিথি পাখির প্রতি এলাকাবাসীর বেশ লোভ বুঝা গেল।একজন লেবার বলে বসলো।ছার হরিণের গোশত ফেল। ভাব খানা এমন সে রেগুলার হরিণের গোশতে অভ্যস্ত !
উপজেলা চেয়ারম্যানের দারুণ সহযোগিতায় দুর্বার গতিতে কাজ চলছে।সারাদিন রোদে পোড়ে সবাই কালো।আলম সাহেবকে কালাম সাহেব পিন মারে আপনার পাত্রী পক্ষের লোক যদি দেখে আপনি খালে বিলে কাজ করছেন।আর ইহজনমে আপনার বিয়ের চান্স নাই।মাথার চুল চিরতরে ন্যাড়া করতে পারেন।গ্রামের লোকজন অনেকেই ভাবেন আমরা ধানক্ষেতে বিষ দিতে এসেছি।
মাধবী ভবনে । সে ও অর্ককে একটা ভিজিটিং কার্ড দিল । কি একটা নার্সারীর সেটা দেখেই অর্ক সাহেবের একটা নাটকের কথা মনে পড়ে গেল হুমায়ূন ফরীদি আর বিপাশা হায়াত অভিনীত ধারাবাহিক নাটক বিষকাঁটা । সেখানে ফরীদি একটা নার্সারীর মালিক। আসলে সে ওর আড়ালেই আন্ডারওয়াল্ড ডন । নাটকে বিপাশা ফরীদির প্রেমে পড়লেও তার হাতেই ফরীদির মৃত্যু। বিপাশার কোলে তার মৃত্যু মুখে ঢলে পরা। মেয়েদের অর্ক সাহেবের ভয়ই লাগে তারা সবার আগে প্রেম জবাই করার এক্সপার্ট।
আসবে তো?
চলবে????
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:০৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




