somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সেলিম আনোয়ার
পেশায় ভূতত্ত্ববিদ ।ভালো লাগে কবিতা পড়তে। একসময় ক্রিকেট খেলতে খুব ভালবাসতাম। এখন সময় পেলে কবিতা লিখি। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কার্জন হল ভালো লাগে খুব। ভালোলাগে রবীন্দ্র সংগীত আর কবিতা । সবচেয়ে ভালো লাগে স্বদেশ আর স্বাধীন ভাবে ভাবতে। মাছ ধরতে

প্রেম অপ্রেমের গল্প-৫

৩১ শে মে, ২০১৩ সকাল ১১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কাওসার আর প্রিয়া কলাভবনের সামনে বসে আছে্ ।পড়ন্ত বিকেল।সবুজ ক্যাম্পাস।উচ্ছল তরুণ তরুণীর ভীড়।কাওসার হতাশ। চাকরি চলে যাওয়াতে তার আর প্রিয়ার বিয়ে ভেঙে যাওয়ার অবস্থা! ছোট বেলা থেকেই কাওসার প্রিয়াকে দেখছে ।তার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ভেঙে গেল বলে।কত শত স্মৃতি কাওসারের । প্রিয়াকে ভালবাসে অনেক আগে থেকেই অথচ।প্রিয়ার ভালবাসা ধরা দিয়েছে তাকে মাত্র কদিন হলো। প্রিয়াকে বাহুবন্ধনে পেয়েছে তার একটা চাকরি হওয়ার পর।প্রিয়া তাকে মন উজাড় করে ভালবেসেছিল। সেদিন ভাবছিল এত ভালবাসা এত সুখ তার কপালে সইবে কি না? প্রিয়ার ওষ্ঠে ওষ্ঠ রেখে ভুলে থাকা যায় সারা পৃথিবী। কিন্তু প্রিয়া কি ক্রমাগত দূরে সরে যাচ্ছে তার থেকে?

প্রিয়া কাওসারের সাক্ষাতে আগের মত উদ্বেলিত হয় না।ভালবেসে বিগলিত হয়না।তাকে কেমন দূরের মানুষ মনে হয় ।কাওসার দুঃস্বপ্ন দেখে। সব হারিয়েও বেঁচে থাকা যায়।তবে ভালবাসাহীন বেঁচে থাকা বেঁচে থাকা নয়। প্রিয়ার চেখে প্রেম নয়্ করুনার চাহনি অবলোকন করে কাওসার।

চাকরি চাই।প্রিয়া চাই।স্মোক করার অভ্যাস হয়েছে কাওসারের। মদের নেশাও পেয়েছে।হতাশায় মদ আর ধূমপান কিছুটা স্বস্তি দেয় ।বুকফাটা জ্বালার উপসম হয়।প্রিয়া ওকে ধূমপান করতে নিষেধ করেছিল্ ।আর ও তা মান্যকরেছিল। লুকিয়ে দুই একটা সিগারেট খেত।প্রিয়ার সামনে দু একবার ধরা পরে বকুনিও খেতে হয়েছে। আর হতাশার সাগরে ডুবে সে এখন চেইন স্মোকার।


প্রিয়া হলে চলে যায়। কাওসারে জন্য খুব মায়া হয় তার।ওর পাশে বেশিক্ষণ বসে থাকতে ভাল লাগে না। সারাক্ষণ বিষাদ।

প্রিয়াকে ঘিরে যে ছেলেরা জটলা করেছিল তাদের একজন মার খেয়ে হাসপাতালে । আর কয়েকজনের অবস্থাও খারাপ ।


সহপাঠীদের কাছে প্রিয়া জানতে পারলো তারা দল ধরে নালিশ করতে যায় রাজা ভাইয়ের কাছে প্রিয়া আর কাওসারের ব্যাপারে জানাতে।প্রিয়াকে বাজে ইঙ্গিত করে কথা বলাতে রাজা ভাই বিরক্ত ও ক্রুদ্ধ হন। জীবনে প্রথমবারের মত রাজা ভাইয়ের হাতে কেউ এমন মার খেল। আসলে রাজা ভাই মারেননি। এটা তার ভক্তদের কাজ রাজা ভাই বিরক্ত হলে আর এটা জানলে তার স্নেহাস্পদ লোকেরা এসব ঘটাতে সময় নেয় না। রাজা ভাই আফসোস করতেন প্রায়ই জানো প্রিয়া আমার অনেক ভাল বন্ধু আছে কিন্তু খারাপরা আমাকে পছন্দ করে বেশি কেন আমি জানিনা। বিশেস করে যারা চঞ্চল তারা।আমি কাউকে ধমক দিলে দেখব কেউ একজন এসে তাকে মেরে বসেছে্ । তাই রাগ ওঠলেও ধমক দিই না।

রাজা ভাইয়ের হস্তক্ষেপে এ যাত্রা বেঁচে গেছে প্রিয়াকে টিজ করা যুবকেরা।রাজা ভাই হাসপাতালে তাদের সেবা শস্রুষার বেপারটা দেখভাল করছেন। অনেকটা সময় হাসপাতালে থাকছেন। ঝগড়া ব্যাপারটা খুব খারাপ ।একবার শুরু হয়ে গেলে সেটা চলতেই থাকে।রাজা হাসপাতালে থাকলে অন্তত অন্যরা আসবে না।রাজা ভাইকে ই এ ঝামেলা মেটাতে হবে।

প্রিয়ার এসব ভেজাল বোধগম্য নয়।তবে এ নিয়ে কাওসারের ওপর চরম বিরক্ত।সুন্দরী মেয়ে দেখলে টিজ করা লাগবে।সে থেকেই এর সূত্রপাত। কাওসারের নামে বেশ কিছু কুৎসা রটনা শুনা গেছে সহপাঠীদের কাছে। আগে ভাবত ঈর্ষান্বিত হয়ে সহপাঠীরা কাওসারে বদনাম করছে। কারণ সহপাঠীদের অনেকেই তার জন্য ফিদা। কাওসারকে সরাতে পারলে তাদের লাভ্ । কাওসারের নারী আসক্তি নিয়ে কানাঘুষা সে পাত্তা দেয়নি।

মানুষের জীবনটা অনেক জটিল। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের দায়িত্ব ও বেড়ে যায়।দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হাপিয়ে ওঠে সবাই।প্রিয়ার ভাবনা সামনের দিকে। এখনই তার সবকিছু বিরক্তিকর মনে হয়।মাঝে মাঝে মনে হয় বেঁচে থাকা কঠিন। অনেক দায়িত্বের ;মরে যাওয়াটা সহজ।

একটা প্রজেক্টে কাজ করার সুবাদে কিছটা আয়ের সুযোগ হয়েছে।রাজা ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় ও সে সূত্রে ই।না হলে তার সাথে কথা বলার সুযোগই হত না।রাজা ভাই কখনো দাঁড়িয়ে থেকেছেন এমনটি হয়নি।দ্রত হাটছেন। এদিকে যাচ্ছেন ও দিকে যাচ্ছেন। লেকজন আসছে তার সাক্ষাতে তিনি হয়ত অন্য কোথাও অন্য কোন খানে অন্যকাজে ।সংক্ষিপ্ত রাস্তা তিনি হেটেই চলে যান।তার যুক্তি সময় বাঁচানো আর শরীরের ফিটনেস দুটোর জন্য হাটা দরকার! রিকশা পেতে পেতে সেই সময়ে তিনি গন্তব্যে খামাখা দুটো পয়সা অপচয়।সেই টাকা দুস্থদের দেয়াই বেটার।কাজের সময় অন্য কিছু নয়।তবে সারাক্ষণ মজার মজার কথা বলছেন সবাইকে মাতিয়ে রাখছেন।

ইদানীং প্রিয়াকে ভাল গুরুত্ব দিচ্ছেন। ছেলে মেয়েরা একসাথে কাজ করলে ছেলেরা প্রিয়াকে টিজ করে কথা বলে প্রায়ই তাই তাকে চোখের সামনে রেখে কাজ করান। অন্যরা বিরক্ত হলেও প্রিয়া খুব খুশি।রাজা ভাইয়ের সঙ্গ তার দারুণ ভাল লাগে। আরসেনিক বিষয়ক জরীপ ।সরাসরি গ্রামের মহীলার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তথ্য সংগ্রহ করা লাগে। এ বিষয়ক কাজে সমস্যা হলে রাজা ভাই সহযোগিতা করেন।

এক অতি উৎাসী মহীলা রাজা আর প্রিয়াকে তার বাসায় দপুরের খাওয়ার দাওয়াত দিল।খেতেই হবে।তার ছেলে ছেলের বউ দুবাই থাকে।তার কথা খুব মনে পরেছে।পিয়াকে খুব করে অনুরোধ তুমি আর তোমার স্বামী আজকে দুপুরে আমার এখানে খাবা ।তোমার স্বামীকে বল ।এ কথা শুণে প্রিয়ার রাজা দুজনেই থ।প্রিয়ার মাথায় দুস্টুমী বুদ্ধি ।সে মহীলাকে বলে স্বামী আমার কথা শুনবে না আপনি শক্ত করে বললে শুনবে।রাজা ভাই হোচট খেলেন বোধ হয় ।প্রিয়া মজা পাচ্ছে।তার জোরাজুরিতে রাজা ভাই খেতে বাধ্য হলো। মহীলা বিদ্যুৎ চলে গেলে হাত পাখা দিল প্রিয়ার হাতে ।বলল স্বামীকে বাতাস কর আর খাও।স্বামীর সেবা করতে হয় বুঝছো মাইয়া।তইলে সব কথা শুনবে। প্রিয়া বাতাস করছে রাজা ভাইকে আর মনে মনে রঙিন স্বপ্ন আঁকছে ।খাবারের মেন্যু ছোট মাছ এর ঝাল তরকারী ,টাকি মাছের ভর্তা, করলা ভাজি আর ডাল ।ঝালে রাজা ভাইয়ের ঠোট টকটকে লাল।প্রিয়ারও ।হাতপাখায় বাতাস দিচ্ছে একাজ জীবনেও করেনি।আজ তার দারুণ ভাল লাগছে।রাজা দ্রুত খাবার সাবার করার চেষ্টায় ঝালের জন্য খেতে দেরী হচ্ছে । আর মাঝে মাঝে পানি খাচ্ছে।মহীলার নির্দেশ অনুযায়ী পানি দেয়ার দায়িত্ব প্রিয়ার ।সেটা সে বাধ্যগত স্ত্রীর মত পালন করছে। মহীলা দারুণ খুশি।মহীলার চোখে পানি।তার ছেলেকে কতদিন খাওয়ায় না।নিজের ছেলে আর ছেলের বউকে খাওয়াচ্ছে এমন ভাবছে আর সুথে চোখে অশ্রু আসছে।প্রিয়াকে জ্ঞান দিচ্ছে বুঝলা মা এখনকার মেয়েরা স্বামীর খেদমত করতে চায় না।নিজেরাও খায়না ।না খেয়ে এত শুকনা দূর্বল হলে সেই পেটে বাচ্চা রাখবা কিভাবে?রাজা ভাইয়ের তালুতে ঝাল ওঠেছে। তিনি কাশছেন। লজ্জায় চেহারা লাল্ ।------------>>>

প্রেম অপ্রেমের গল্প-৪

প্রেম অপ্রেমের গল্প-৩

প্রেম অপ্রেমের গল্প-২

প্রেম অপ্রেমের গল্প-১

-------------------------------------------------------------------
উৎসর্গ -সুপ্রিয় সহ ব্লগার এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল স্বর্ণা

সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৪৭
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×