somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সেলিম আনোয়ার
পেশায় ভূতত্ত্ববিদ ।ভালো লাগে কবিতা পড়তে। একসময় ক্রিকেট খেলতে খুব ভালবাসতাম। এখন সময় পেলে কবিতা লিখি। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কার্জন হল ভালো লাগে খুব। ভালোলাগে রবীন্দ্র সংগীত আর কবিতা । সবচেয়ে ভালো লাগে স্বদেশ আর স্বাধীন ভাবে ভাবতে। মাছ ধরতে

বান্ধবী (গল্প)

১৭ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রুমকি চৌধুরী ওরফে রুমকি। আমার বান্ধবী।পৃথিবীতে তার মত আমার শুভাকাঙ্খি দ্বিতীয়টি নেই। আজ সে মেকাপ করে দারুণ সাজে সজ্জিত হয়ে এসেছে। রুমকি জানে আমার মন খারাপ। রুমকি জানে আমি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছি।আমার মনের অবস্থা জেনেই ও আমাকে ফোন করেছে।

রাতুল আপনি রমনা পার্কে চলে আসুন।

মন খারাপ কোথাও বেরুতে ইচ্ছা হচ্ছে না।

আরে আসুন। গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে।

কি গুরুত্বপূর্ণ কাজ?

আপনাকে পাত্রী দেখাবো।

বলেন কি?পাত্রী? কোথায় থাকে কি করে?দেখতে কেমন?

দেখতে জয়া আহসানের মতন।আর পাত্রী আপনি চিনেন।

আজকে না হলে হয়না?

না হয় না। গুরুত্বপূর্ণ।পাত্রী চয়েজ করে হা বললে আপনার বিয়ে সুনিশ্চিত।

পাত্রী আমাকে পছন্দ না করলে?

আরে করে। পছন্দ করে। পছন্দ করবে। আর আমি আইচক্রিম পাওনা আছি।

ওটা খাওয়াতে হবে।

ঠিক আছে বিকেল পাঁচটায় আসব।

এমনিতে মনটা বিশেষ খারাপ।টিনাকে নিজের করে পাবার সকল চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।বান্ধবী রুমকি অনেক সাহায্য করেছে। এমনকি আমার প্রেমে ফিদা একজন সেজে টিনাকে মটিভেট করার চেষ্টা করেছে। এতটুকু উপকার কে করে? আর তা ই বান্ধবীকে আমি মন থেকে শ্রদ্ধা করি। দেখতে সে পুতুলের মত সুন্দর । হাইট বাঙালী মেয়েদের হিসেবে তুলনামূলক ভাবে বেশি।স্লিম। আর চুল একেবারে কোমর পর্যন্ত। কালো ঘনচুল। স্নিগ্ধ একটা চেহারা।



সেই স্নিগ্ধ কন্যা বায়না ধরেছে সুতরাং যেতে হবে। পড়ন্ত বিকেলে যথাস্থানে হাজির হলাম।রুমকি আসতে দেরী হচ্ছে। ফোন ধরলে রিসিভ করছে না্ ।কিছুটা বিরক্ত লাগছে।নানান স্মৃতি ভেসে আসছে মনে। রুমকি আমার বন্ধু সুমনের প্রেমিকা। এটা রুমকি ই বলেছে। আবার সুমনকে ব্যাপারটা বলতে না করেছে। তার ভাষ্য মতে তার আর সুমনের বিয়ে হবার নয়। সুমনকে রুমকির বাড়ী থেকে গ্রীন সিগন্যাল দিবার পরও তা হচ্ছে না।কারন সুমন খুব ভীতু। তার মেজো ভাইকে সে খুব ভয় পায়। মেজো ভাই ভেটো দেয়ায় ফ্যামিলিতে জোর দিয়ে বলার সাহস পায়নি।

সুমনকে ভাল লাগার কারণ জিজ্ঞাসা করলে রুমকি বলত তার রুবোটিক আচরণ।হাবা গুবা স্বভাব। অবশ্য আমি জানতাম সুমন আসলে কি জিনিস। বুয়েটের ছাত্র পরিচয় দিয়ে ছাত্রী পড়াতো। ছাত্রীর সঙ্গে সে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছে। এ ধরণের কথা ক্যাম্পাসে প্রচলিত ছিল। তার একাধিক ছাত্রীকে সে এমন কাজ করেছে। ধরে নিয়েছিলাম সুমন হয়তো রুমকির সঙ্গেও একই কাজ করেছে।

তবে একটা কথা আছে যত রটে ততটা ঘটে না।সুমনকে বোকা সহজ সরলই মনে হত। তবে আমার বিশেষ আগ্রহ ছিল সুমন আর রুমকীর সম্পর্ক কতটা গভীর তা জানার জন্য।আর সুমন অনার্স এ ৩য় শ্রেণী পাওয়ার পর আর পড়ালেখা করে নি। আর রুমকি জানত সে ঢাবি থেকে মাস্টার্স।বন্ধত্বেুর কথা ভেবে সুমনের এসব ব্যাপার রুমকি কে বলিনি। তাদের সম্পর্কটা যখন ভেস্তে গেল রুমকি দারুণ কষ্ট পেলেও আমি তাকে শন্তনা দিয়েছিলাম। যা হয়েছে ভাল হয়েছে।

রুমকির সঙ্গে দেখা একটা কোচিং সেন্টারে। বিসিএস কোচিং সেন্টার। সুমন আর রুমকি আগে ভর্তি হয়েছিল আমি পরে ভর্তি হই।সেখানে গিয়ে দেখি সুমন পুরো বদলে গেছে। সে কোচিং এর ভাল পড়ুয়াদের একজন।ইংরেজি ,বাংলাদেশ বিষয়াবলী, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী সবকিছুরবিশেষজ্ঞ সুমন। অবাক হলাম সম্মানে তয় শ্রেনী পাওয়া ছাত্রের এই মেধাবী রূপ দেখে। আরো অবাক হয়েছিলাম সেই ৩য় শ্রেণী পাওয়া ছাত্রের ১ম শ্রেনীর এক রূপসীর প্রেমিক হওয়া নিয়ে। হুমায়ূন আহমেদ এর নায়করা প্রায় ই দেখতাম তৃতীয় শ্রেণী পাওয়া আর নায়িকা বোর্ড স্টান্ড করা ।বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা হবেন এমন । জয়তু হুমায়ূন।সুমন রুমকি কে বলেছিল সে মাস্টার্স কম্প্লিট করেছে। এই সময়কার হিরু। ভন্ড না হলে হয়্ । জমানা এখন ভন্ড আর দুর্নীতিবাজদের। সুতরাং কারনে এসময়কার নায়ক হবেন একজন উন্নত মানের ভন্ড এটা সময়ের দাবী।

সুমন আর তার সম্প র্ক যখন শেষ। তখন রুমকি প্রায়ই আমাকে ফোন দিত। আর আমিও তাকে আমার দুঃখের কথা শেয়ার করতাম। টিনা আমাকে ভাল বাসে না একসময় বাসত্। সে এখন এক ডাইল খুর ছেলের সাথে প্রেম করে। তাকে বোধ হয় বিয়েও করবে। ছেলেটা যে এত বদ সে তা জানে না। তার সঙ্গে বিয়ে হলে টিনার জীবন শেষ। ছেলেটা সুদর্শন। কিন্তু বদ। মেয়েঘটিত ব্যাপারে যা তা। দুজন ব্যথিত হৃদয় আমি আর রুমকি কিভাবে যেন বন্ধু হয়ে গেলাম।

আজ বান্ধবী আমাকে পাত্রী দেখাবে। কিছুটা রহস্য বোধ করছি। কিছুটা সারপ্রাইজ নিয়ে অপেক্ষা করছি।হঠাৎ যা দেখলাম তা বিশ্বাস করার মত নয়।রুমকি নিজে মেকাপ করে জয়া আহসানের মত সেজে হাজির। ওর হাইট জয়ার চেয়ে বেশি। আমার চেয়েউচ্চতায় ইঞ্চি দুয়েক বেশি হবে।গলায় অর্নামেন্টস। ঠোটে সুন্দর করে লিপস্টিক দেয়া ।আমাকে অবাক হওয়ার সুযোগ না দিয়ে বলল। আজ আপনার সঙ্গে রিকশায় ঘুরবো। বেলী রোড এ আইচ ক্রিম খাবে্া ।রুমকির সঙ্গে রিকশায় উঠলাম্ সবাই আমাদের দেখছে।

রুমকি সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে কেন?

এত সুন্দর মেয়ের পাশে এমন সাধারণ একটা ছেলে বসে আছে তাই।

বলেন কি? আপনাকে আজ সত্যি পরীর মত লাগছে। আপনি আসলে ই আমাকে বিয়ে করতে চান?আই মিন করবেন !

আপনি করতে চাইলে অবশ্যই করবো।

সুমনের কি হবে?

সুমনের আর যাই হোক আমার সঙ্গে বিয়ে হবে না।

তাহলে আমার সঙ্গে হবে?

হা হবে।

আমার আর টিনার প্রেম ছিল জানা সত্ত্বেও।

আমি তো আপনাদের দুজনের ছিড়ে যাওয়া সম্পর্ক বেধে দেয়ার কম চেষ্টা করিনি তাতে লাভ হলো কি?

নিয়ন লাইট গুলো জ্বলে ওঠেছে। ব্যস্ত শহর ঢাকা। চারিদিকে শব্দ। ট্রাফিক জ্যাম গতিময় জীবনের গতির লাগাম আটকে দিচ্ছে শক্ত হাতে ই।মানুষজন সবাই ব্যস্ত। যার যার কাজে। সেখানে দুটি ব্যথিত প্রাণ আমি আর রুমকি অজানার উদ্দেশ্যে রিকাশায় পাশাপশি বসে। দুটি প্রাণের সন্ধির সম্ভাবণা যাচাই করছি।রুমকি সে তো অসাধারণ রূপবতি সুন্দর মনের একজন মানবী। তার ছুয়ায় একজন পুরুষের জীবন পরিপূর্ণ হয়ে ওঠাটা ই স্বাভাবিক। রুমকি সঙ্গে বিয়ে হবে কি না জানি না। তবে দারুণ কষ্টদায়ক মুহূর্তে তার নাটকিয়তা ভালই লেগেছে।...................চলবে



সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:৩৬
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×