somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সেলিম আনোয়ার
পেশায় ভূতত্ত্ববিদ ।ভালো লাগে কবিতা পড়তে। একসময় ক্রিকেট খেলতে খুব ভালবাসতাম। এখন সময় পেলে কবিতা লিখি। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কার্জন হল ভালো লাগে খুব। ভালোলাগে রবীন্দ্র সংগীত আর কবিতা । সবচেয়ে ভালো লাগে স্বদেশ আর স্বাধীন ভাবে ভাবতে। মাছ ধরতে

বান্ধবী-২ (গল্প)

২০ শে জুন, ২০১৩ রাত ১১:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পাত্রি দেখা হলো।বেশ সুন্দর।রুমকি জয়া আহসানের ভক্ত।মনটা অনেক সহজ সরল।তবে সুমন কিন্তু তা নয়।তার প্রতিদিন শুক্রবার বিয়ে দাওয়াত থাকে। সুমন আর জনি ; মানিকজোড় প্রতি শুক্রবার সেজেগুজে দাওয়াত খেতে যায়।দাওয়াতের আসল রহস্য উদঘাটনে বন্ধুরা থ বণে গেলাম। তারা বর পক্ষ বা কনে পক্ষ হয়ে রেগুলার অবৈধ দাওয়াত খায়।তারা তাদের পছন্দ সই ভেন্যুতে খায়।ঢাকা সিটির নামকরা সব জায়গায় দাওয়াত খাওয়া প্রায় শেষ।অবাক হয়ে দেখি।হাবাগুবা চেহারা তার কি প্রোফাইল!ঢাকা শহরে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র লুঙ্গি পরে গাড়ীতে চড়া ব্যাপারটা কোন সাধারণ ঘটনা নয়। এ ই অসাধারণ ঘটনার অবতারণা সুমন প্রায় ই করে।

সে তো সাধারণ লোক নয়। এ জমানার নায়ক। টিভি নাটকে হালের সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম।তাকে সবসময় দেখা যাবে বাটপার ভন্ড টাইপ চরিত্রে।কলির জমানা । তাই সত্যিকারের নায়করা একটু স্মার্ট হওয়াই স্বাভাবিক। তাছাড়া হালে মেয়েদের যে ডিমান্ড তা মেটাতে হলে মিথ্যাবাদী ভন্ড না হলে চলে না।কবিগুরুর ভাষায় কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা মনে মনে….ওটা হালের নায়কদের ভাষায় বলতে গেলে কিছু ই আমার বলে ফেলতে নেই মানা মুখে মুখে।:) এইধরণের মুখের তাই নায়িকার অভাব হয়না।তাকে নিয়ে টানাটানি পর্যন্ত লেগে যায়।অপু ভাইকে নিয়ে তেমনই টানাটানি। সে তার সহপাঠীর সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করতো ।আধুনিক প্রেম।পরবর্তীতে আমাদের বর্ষের নীলার আগমন তার জীবনে। নীলা লড়াই করে জিতে গেছে।

আমাদের একজন সিনিয়র ভাই।বেচারা সহজ সরল।কবে থেকে চলছে তার পাত্রি খোজা পর্ব কিন্তু শেষ হচ্ছে না।ডিপার্টমেন্টে অনেক মেয়েকেই তিনি প্রপোজ করেছেন।কপাল মন্দ কেউ রাজি হয় নি। কপালটা তার একটু বেশিই মন্দ কারণ মেয়েরাও এখন তাকে দেখলে হাসে। অথচ বেচারা ভদ্রলোক। এমন অবস্থা হলো পাত্রী ঢাবির হলে সে তাকে বিয়ে করবে না এটা নিশ্চিৎ।বেচারার কত শখ তার বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা মেয়ে বিয়ে করবে । অথচ বিধিবাম।যাক সে দুঃখের কথা নাই বা বলি।/:)


মেয়েরা সাধারণত রিজেক্টেড জিনিস পছন্দ করে না।এটা জিনিস কিনার সাধারণ ফর্মূলা। কারণ রিজেক্টেড জিনিসের দাম কমে যায়। তাই ছ্যাকা খাওয়া পুরুষ কিক আউট।প্রেম করে স্যাকা দেয়া লোকের ডিমান্ড থাকে।তারা ফুলে ফুলে মধু খায়।তাদের প্রোফাইলটা বরাবরই অতিউচ্চমানের যদিও তাদের চারিত্রিক বিশুদ্ধতা নেই।তাদের ইতিহাস বিজয়ের ইতিহাস।মেয়েরা ষোল কলা জানলে তারা জানে আঠারো কলা। অতিরিক্ত কলা গুলো দিয়ে তারা মেয়েদের বশ করতে সক্ষম হন।সুমন,টিনার বয়ফ্রেন্ড এরা আঠারো কলা জানা লোক।তাদের পাল্লায় মেয়েরা পড়লে আর ছোটতে পারে না।সুমনের সঙ্গে ফোনালাপ করি।

সুমন তোকে একট কথা বলি।

বল।

রুমকি নামের মেয়েটা তো অনেক ভাল। তোর সঙ্গে তাকে মানাবেও ভাল। ওকে বিয়ে করে ফেল।

কোন রুমকি?

আমাদের সঙ্গে কোচিং করতো।

ও। ওই মেয়ে তো সাইকো।তার মানসিক সমস্যা আছে।

শুনলাম তোর সঙ্গে তার প্রেম।

কি যে বলিশ।

প্রায়ই বাসা থেকে খাবার নিয়ে আসতো।মজার মজার সব খাবার।তোর ওসিলায় আমরা খেতাম।

কি বলিস।ও গুলো সবাইকে খাওয়ানোর জন্য আনতো।

আচ্ছা তুই ওর কাছ থেকে তো প্রা্য়ই টাকা নিতিস।তোর হাত খালি আরো নানা বাহানা করে।ও কি এমনি দিত। তোদের একটা সম্পর্ক আছে বিধায় তো তা পেতিস।

এসব আলাপ বাদ দেতো।

একটা মেয়ের কাছে টাকা চাওয়ার মত ছোটলোকি তুই কিভাবী করতিস।

ওপাশ থেকে ফোন বন্ধ।পুরেপুরি ধরা খাওয়া থেকে নিরাপদ থকতে হলে এর বিকল্প নেই।:P

একদিন হঠাৎ করে রুমকি উত্তরায় এসে আমাকে ফোন দিল।তার ফোন পেয়ে অবাক।
রাতুল ভাই

জি বলেন।

আমি তো আপনাদের উত্তরায়।

তাই নাকি কি উপলক্ষ্যে।

বিয়ের দাওয়াত খেতে এসেছি।

ও গুড বেশি করে দাওয়াত খান। সুমনতো রেগুলার দাওয়াত খায়।তা সুমনের স্টাইলে কি দাওয়াত খাচ্ছেন নাকি?;)

আপনার সঙ্গে দেখা করতে চা্ই।

ঠিক আছে আমি আসছি।কোথায়?

ভুতের আড্ডায়।

ওকে 10 মিনিট লাগবে।

রাত সাড়ে নয়টায় ভুতের আড্ডায় হাজির হলাম।দেখি রুমকির সঙ্গে কালো এক মহীলা। আর রুমকী হেভি সাজে সেজে এসেছে।তারপর সেখানে কিছু ড্রিংকস সোপ এগুলো খেয়ে তার কাছ থেকে বিদায় নিলাম।তার সঙ্গে ক্যামেরা ছিল। সে আমার ছবি নিল। এবং আমার সঙ্গে ও ছবি ওঠালো।তার ভাবি ছবি ওঠিয়ে দিলেন।ছবি ওঠানোর কারণ জানতে চাইলে সে বিশেষ কিছু বলতে পারে নি।বলল সুমন গ্রামের বাড়ী ।আপনার খবর নিতে বলেছে।টিনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলাম

রুমকি বলল :-রাতুল ভাই টিনা তো পাগল। আস্ত সাইকো। এই মেয়েকে আপনি পছন্দ করলেন কিভাবে?ফোন করি সে গড়গড় আওয়াজ করে।আমি পরিচয় দিলাম আমি আপনার বান্ধবী।আপনাকে ভাল বাসি।টিনা যেন আমার পথ থেকে সরে যায়।সে কিছু না বলে ফোন কেটে দিল।মনে হয় হিংসা হয়েছে।আপনার সঙ্গে ফোনে কথা বলে না?

না।এখন তিনি আমার ফোন রিসিভ করেন না।আমার আর ওর সম্পর্কের ব্যাপারে কি বলে?

বলে ডিপার্টমেন্টের বড় ভাই।

আমাকে অপছন্দের কারণ কি?

সে বাপারে কথা হয়নি।

যাক অনেক ধন্যবাদ।আমার জন্য অনেক করেছেন।অন্তত ফোনে কথা বলেছেন।

টিনাকে ফোন দেই। সে রিসিভ করে না। আবার দেই। আবারও করে না। আবার দেই ফোন কেটে দিচ্ছে।আবার দেই। আবারও কেটে দিচ্ছে। আয়তুল কুরছি পড়ে তারপর ফোন দেই।এই বার অপরিচিত কন্ঠের একজন মেয়ের গলা।

হ্যালো কে আপনি?

আমি রাতুল।দীনা কোথায়?

দীনা আপুর তো বাইরে একটা হোটেলে কাজ ছিল সেখান থেকে কিচুক্ষণ আগে ফিরেছে।এখন গোসল করছে।(হি হি হি হাসির শব্দ)

এত রাতে হোটেলে কি কাজ?

আপু অনেক সুন্দরীতো তার অনেক ডিমান্ড।

কি বলেন এসব।

লাইন কেটে গেল।

প্রচন্ড রাগ হলো।অনেকদিন আগে তার বন্ধুদের নিয়ে মাখামাখির ব্যাপারে একটু শাসন করেছিলামে ।একটা গালিও দিয়েছিলাম।ফোনে এখন অন্যদের দিয়ে এমন কথা বলিয়ে নিজেকে পতিতা হিসেবে উপস্থাপন করে মজা নিচ্ছে।রুমকীর কথাই ঠিক।তার মাথায় ছিট।এর চেয়েও বেশি ।মানুষ এত নিচে নামে কিভাবে?

সিগারেটের প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট নিয়ে ছাদে ওঠি।আজ রাতের আকাশটা দেখবো।বিশাল আকাশের দিকে তাকালে মনটা বিশাল হয়ে যায়।অজস্র তারার বাস সেখানে ।মিটমিট করে জ্বলছে।আকাশে অর্ধচন্দ্র।মেঘের দল ভেসে চলছে।মাঝে মাঝে চাঁদ মামা ডুব দিচ্ছে।একটি তারা খসে পড়ল বোধ হয়।ওটার নাম দিলাম টিনা। আমার বিশাল হৃদয় আকাশ থেকে প্রবলবেগে খসে পড়ছে টিনা নামের তারাটি।আমি মধ্যাকর্ষণ শক্তি প্রয়োগ করে ও তার পতন রোধ করতে পারছি না ।আকাশ আর আমার হৃদয়াকাশের পর্থক্য একটাই। আকাশে অনেক তারা।

একটি তারা খসে গেলে আকাশের কিছুই যায় আসে না। আর আমার হৃদয় আকাশে একটাই টিনা ।একটাই তারকা।সেটি খসে পড়লে হৃদয়টা মহাশূন্য।জন্মের আধার। সিগারেটের আগুনে ঠোটাটাকে শাস্তি দিচ্ছি।অবাধ্য এই ঠোটে দীনার ঠোটের স্পর্শ।আর ফুসফুসটাকে সিগারেটের ধূয়ায় রাহুমুক্ত করার ব্যর্থ প্রয়াস চালাচ্ছি।মুখে সিগারেটের ধোয়ার কুন্ডলী বানিয়ে তা উপরে ছুড়ে দিচ্ছি ।

সিগারেট।
জ্বলে জ্বলে জ্বলছে কেমন বিভীষিকায়
আমি ও ঠিক তাই
জ্বলাতেই তার শেষ জ্বলাতেই যেন ব্যর্থ জনমের খেলা
আত্নহনের পথ বেছে নিয়ে জন্ম থেকেই জ্বলা
তিলে তিলে নিজেকে শেষ করে নিষ্ঠুর পথ চলা।

সিগারেটে সুখটান সিগারেটে বিষপান
সিগারেটে ব্যথা নাশ
সিগারেটে ধোয়ার কুন্ডলী
জ্বলাতেই সিগারেট জ্বলাতেই তার পরিচয়।

জ্বলে জ্বলে শেষ হওয়াতেই তার স্বার্থক জনম!
বিষপানে জীবন নাশ
নিকোটিনের ধোয়ায় তেমনি ব্যথা নাশ।

..............................................> অসমাপ্ত
বান্ধবী (গল্প)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুন, ২০১৩ সকাল ৭:৩৫
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×