somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সেলিম আনোয়ার
পেশায় ভূতত্ত্ববিদ ।ভালো লাগে কবিতা পড়তে। একসময় ক্রিকেট খেলতে খুব ভালবাসতাম। এখন সময় পেলে কবিতা লিখি। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কার্জন হল ভালো লাগে খুব। ভালোলাগে রবীন্দ্র সংগীত আর কবিতা । সবচেয়ে ভালো লাগে স্বদেশ আর স্বাধীন ভাবে ভাবতে। মাছ ধরতে

ত্যাগের ও মিলনের মহিমায় ঈদ-উল-ফিতর

২৪ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শাওয়াল মাসের প্রথম তারিখে যে ঈদ সেটি ঈ্দুল ফিৎর। ঈদ মানে খুশি। এ ই খুশি দুই অর্থে ;এক আল্লাহকে খুশি করা। দুই নিজেও খুশি থাকা।এই দিন নামায পাচ ওয়াক্তের জায়গায় ছয় ওয়াক্ত। এই দিনে সকল মুসলমান একত্রিত হয়ে শোকর আদায়ের জন্য দুই রাকাত নামায পড়া ওয়াজিব।

ঈ্দুল ফিতর এর দিন কমবেশি ১৩ টি কাজ সুন্নত। যথাঃ-


১) শরীয়তের মধ্যে থেকে যথাসাধ্য সুসজ্জিত হওয়া ( এবং হাসি খুশি থাকা) (মাদারেজ)

২)গোসল করা।

৩) মিসওয়াক করা।

৪)যথা সম্ভব উত্তম কাপড় পরিধান করা।

৫)খোশবু লাগানো।

৬)সকালে অতি প্রত্যুষে বিছানা থেকে গাত্রোত্থান করা

৭)ফযরের নামাযের পরেই অতি ভোরে ঈদগাহে যাওয়া।

৮)রসুল সাঃ ইদগাহে যাওয়ার পূর্বে কয়েকটি খেজুর খেতেন। এগুলির সংখ্যা বেজোড় হতো। যেমন ,তিন,পাঁচ,সাত (বোখারী তিবরানী)

৯)ঈদগায়ে যাওয়ার পূর্বে ছদকায়ে ফিৎরা দান করা।

১০) ঈদের নামায মসজিদে না পড়ে ঈদগায়ে গিয়ে পড়া।(মুসলিম,বুখারী)

১১) ঈদগায়ে একরাস্তায় যাওয়া ও অন্যরাস্তায় ফিরে আসা। ( বোখারী,তিরমিজী, মাদারেজ)

১২) ঈদগায়ে পায়ে হেটে যাওয়া ।(ইবনে মাজা)

১৩) ঈদগায়ে যাওয়ার সময় আস্তে আস্তে নিম্নলিখিত তকবীর বলতে বলতে যাওয়া।
আল্লহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাহু আল্লাহু আকবার ওয়াল্লিাহিল হামদ।


রাসুল সাঃ ঈ্দুল ফেতরের দিন কিছু আহার না করে বের হতেন না আর ঈ্দুল আজহার দিন না খেয়ে বের হতেন এবং ঈদের নামায ও কোরবানী সম্পন্ন না করে কিছু খেতেন না।
(তিরমিজী, ইবনে মাজা,মাদারেজুন্নবুওয়াত)


হাশরের ময়দানে ৫টি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে কোন ব্যক্তি স্বীয় কদম তিল পরিমান হঠাতে পারবে না তার দুইটি হলো ১) এলেম কতটুকু হাসিল করেছো ও ২) তদুনুযায়ী কতটুকু আমল করেছো।

তাই ব্যপারগুলো জেনে রাখা যেমন জরুরী তেমনি সেগুলোর উপর আমল করা জরুরী। এগুলো সরসরি রসুল সাঃ এর মোবারক অভ্যাস। তিনি ছিলেন সর্বজনীন নবী। শুধু আরব ভূখন্ডের জন্য নন।

ঈদ উল ফেতরের সঙ্গে ফেতরা ব্যাপরটা জড়িত।প্রত্যেক সামর্থবান মুসলমানের উপর ফেতরা ওয়াজিব। এবং সেটি ঈদ গাহ থেকে ফেরার পূর্বে দিয়ে দেয়া উত্তম।দরিদ্র অভাবগ্রস্ত লোকদের ফেতরা দিতে হয় ।

যখন কোন মুসলমান সাক্ষাতে সালাম দেন মুসাফাহা করেন আর মুসাফাহার দোয়া পড়েন আল্লাহ তায়ালা এত খুশি হোন যে তাদের উভয়ের কৃত সগীরা গুনাহ সমূহ মাফ করে দেন। আল্লাহতায়ালা মানুষের মধ্যে মিল মহবতকে এতটাই পছন্দ করেন। ইবরাহীম আঃ খাওয়ার সময় মেহমান সহ খাবার খেতেন। এমনকি তিনি মেহমানের অপেক্ষায় থাকতেন। কাউকে পেলে তাকে সঙ্গে নিয়ে খেতেন। রসুল সাঃ বলেছেন যে মেহমানকে সঙ্গে নিয়ে খাবার খায় সে খাবারের কোন হিসাব নেয়া হবে না ।

পুরো একমাস সিয়াম সাধনার পর যখন কোন মুসলমান ঈদগাহে গিয়ে সালাত আদায় করেন তাদের সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যায়। তারা নিষ্পাপ শিশুর মত হয়ে যান।

ঝগড়া ফ্যাসাদ আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করেন না ।রসুল সাঃ শবেক্বদরের রাত্রি নির্ধারিত করে দিতে গেলে দুইজন মুসলমানের ঝগড়ার কারণে তা ভুলে যান ।ফলে শবে ক্বদর অনির্ধারিত থেকে যায়।ঝগড়া করা এতটাই অমঙ্গলজনক ও স্রষ্টার কাছে অপছন্দনীয়।

পবিত্র ঈদুল ফিতর ,সিয়াম সাধনার একমাস পূর্তিতে তার আগমন।রমযান মানুষকে খাবার থেকে সংযমের শিক্ষা দেয়।শুধু তাই নয় নিষিদ্ধ জিনিস দেখা , হাত দিয়ে স্পর্শ করা এমনকি কল্পনা করা থেকে বিরত থাকার শিক্ষা দেয় । আর পবিত্র ঈদুল ফিতর ফিতরার টাকা দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণের মাধ্যমে দানের মন্ত্রে দীক্ষিত করে ।শুধু তাই নয় সুন্দর পোষাকে সজ্জিত থেকে সকল আত্নীয় স্বজন প্রতিবেশি দরিদ্রদের ভাল খাবার পরিবেশন করে তাদের বাসায় গিয়ে খোঁজখবর নেয়ার মাধ্যমে হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করে।সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করে ।

ঈদুল ফিতর তা্ই খুশির বাণী পৌছে দেয় ।বিশ্বের প্রতিটি মানুষের দ্বারে দ্বারে শান্তির বার্তা পৌছে দেয়। সকল প্রকার সংঘর্ষ হানহানি নিরুৎসাহিত করে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করে সবাইকে।

তাই ঈদ মানে স্রষ্টাকে খুশি করা আর ঈদ মানে সকল মানুষকেও খুশি করা।ঈদ আমাদের সবার জন্য মঙ্গল বয়ে আনুক।
১১টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×