পাকিস্তানিরা আমাদের বিরুদ্ধে দী+র+ঘ দিন সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চালিয়েছে। তারা কার্যক্ষেত্রে পরাজিত হয়ে রণ ভঙ্গ দিয়ে পালালেও তাদের অনুশারীরা সেটি চালু করতে মরিয়া। তারা বর্তমানে নেতিয়ে পড়লেও যে কোন সময় মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে।
এই সময়ে আমাদের আরেক দলের সাথে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। সেটি হল প্রজন্ম রক্ষার যুদ্ধ। যাদের বিরুদ্ধে বর্তমানে যুদ্ধে আবতীর্ণ হয়েছি তারা সমাজের একটা বিশাল অংশ কে সু-শিক্ষার বাহিরে রেখে পাশ্চত্যের তথা কথিত প্রগতিশীল কে আমদানি করে আমাদের সাংস্কৃতিকে পাশ কাটিয়ে বর্তমান প্রজন্মের উপর জোড় করে চাপিয়ে দিতে মরিয়া।
আবার, এক শ্রেণি অভিযোগ করে, ভারত, আম্রিকা আমাদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতি আগ্রাসন চালাচ্ছে।আম্রিকা ভারতের সাংস্কৃতিক যুদ্ধের প্রধান হাতিয়ার নাটক, সিনেমা, একশন মুভি, ৩জি স্টাইল, ফ্যাশন, বিলাসিতা, যৌনচার, মিনিটে মিনিটে পুজা আর্চনা সংগে সংগে নায়িকা সেলিব্রেটিদের বুক আর পেটের কাপড় সরিয়ে দ্রুত তালে কোমর ঘুটার প্রসার ঘটানো, যাতে গরীবেরা ধর্ম, সাম্প্রদায়িকতা আর নগ্নতাতে মজে থাকে ।
এই আগ্রাসনের জবাব দেওয়ার ক্ষমতা কিন্তু যারা অভিযোগ করছে তাদের নেই। তারা কোন কার্যকরী পদ বাতলাতে পারছেন না। দু’একটা বিক্ষিপ্ত কথা বলছেন যা পর্যান্ত নয়।
আমাদের দেশে বামপঞ্থী, লেলিনবাদী, মার্কসবাদী এবং কিছু রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি, কিছু সু-চীল সমাজ তারা নিজেকে সাংস্কৃতির ধারক ও বাহক বলে পরিচয় দেয়। কিন্ত বাস্তবে তারা চলে উল্টোটা। তারা রবীন্দ্র কিংবা নজরুল স্বরণ/মৃত্যু/জন্ম দিবসে কপালে বড় বড় টিপ পড়ে, সুপার সপ থেকে দামি শাড়ি আর ব্লাউজ পড়ে সাস্কৃতিকমা সেজে শহীদ মিনার কিংবা সিম্পজিয়াম অথবা কোন সেমিনারে যায়। সেখানে গিয়ে আ………আ…….. করে দু’একটা রবীন্দ্ কিংবা নজরুল সংগীত গেয়ে মৌলবাদীদের চৌদ্ধ গৌষ্ঠী উদ্ধার করে। সব সমস্যার মূল মৌলবাদীরা, দেশে আর কোন সমস্যা নেই। সেগুলো আবার মিডিয়াতে হাইলাইট করে প্রচার হয়। ফলে তাদের নাম ধাম বাড়ে, সমাজে পরিচিতি পায়। নিজেকে অস্প্রাদায়িক হিসেবে জাহির করতে চায়। কিন্তু তাদের ঘরের সন্তানরা য়ূরোপ আম্রেরিকার প্যান্ট, কোর্ট, টাই পড়ে, তাদের মোবাইলে বেজে উঠে, ধুম্বা চলে…………………. অথবা আশিক বানায়…………কিংবা, জাস্টিন বিবার রিহানা, সারিকা বা মাইকেল জ্যাকস নের কোন সূর বা কন্ঠ এব্যাপারে কোন সময় কেউ যদি জিঙ্গেস করে তাহলে বলে, “ওরা বড় হয়েছে, ওদের স্বাধীনতা আছে নিজের পছন্দের অপছন্দের”। তাহলে ওরা আপনার থেকে কি শিক্ষা পেল? যেখানে নিজ সন্তানই আপনার কৃত্রিম শিক্ষা গ্রহন করতে পারল না সেখানে অন্যের ছেলেরা কিভাবে পারবে।
নব্য আরেক দল আছে, তারা তাদের কে দেশে সাংস্কৃতির ধারক ও বাহক হিসেবে পরিচয় দিতে হলে তাদের নিজেকে অসাম্প্রাদায়িক হিসেবে জাহির করতে হয়। ছোট প্যান্ট আর টেডি বিয়ার কোট পরে নিজেকে আধুনিক হিসেবে হাজির করতে হয়। মেয়েদের সমাজে যা দৃষ্টিকটু সেসব পোষাক পড়ে নিজেকে আধুনিক ও সাহসী হিসেবে তুলে ধরতে হয়, আর সর্বশেষ যা করতে হয় তাহলো গ্রুপিং, লগিং এবং দলবাজি।
তারা এত কিছু করার পর নতুন কিছু করার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলে। তখন আর জাতিকে দেওয়ার মত তাদের অবশিষ্ট কিছু থাকে না।
অন্য আরেক গ্রপ আছে, যাত্রাপালার কথা জোড়ে শোড়ে প্রচার করে, কিন্তু যাত্রাপালা এখন ভালো মানুষ দেখে না, সেগুলো নিম্ন আয়ের মানুষের সস্তা বিনোদন হয়ে গেছে। সেখানে উল্লংগ নাচ চলে, যা দেখতে দেখতে মানুষ এখন বিরক্ত।
যারা যাত্রাপালাকে নিচে নামাইছে, তারা প্রযুক্তি বুঝে না, খোজ নিয়ে দেখবেন, নিজের স্মাট ফোনটাও ভালো মত চালাতে পারে না। এরা নতুন প্রজন্ম ও যুগটাকে অস্বীকার করে।
এ থেকে আমাদের বেড় হয়ে আসতে হবে। তা না হলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম বড় ধরণের জটিলতার সম্মুখীন হবে। তারা বুঝতে পারবেনা কোনটা আমাদের সাংস্কৃতি, কোনটা আমাদের ধর্ম, কোনটা আমাদের মুক্তিযু্দ্ধের চেতনা আর কোনটি আমাদের জাতীয়তাবাদ। এখন সময় হয়েছে সাংস্কৃতির গাইড লাইন ঠিক করে তাকে মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনা, সেটি করতে প্রযুক্তি সাহায্য নিতে হবে, সকল মানুষের সু-শিক্ষা নিচ্ছিত করতে হবে। আগে মানুষের মৌলিক অভাব পূরণ করতে হবে তাহলে মানুষ নিজে থেকে আধুনিক ও সাংস্কৃতিকমনা হবে, কাউকে জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে না।
আশা করি তরুন প্রজন্মের কেউ না কেউ এগিয়ে আসবে আমাদের কুষ্টি, সাংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতীয়তাবাদ আর ধর্ম রক্ষা করতে। সেই আশায় রইলুম।
(বি:দ্র: টাইপ জনিত ভুলত্রুটি'র জন্য দু:খিত)
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:২০