ক্ষমতার মোহ মানুষ কে পশুতে পরিণত করে। ক্ষমতা লোভী মানুষ একটা দেশ এবং জাতির জন্য ভয়ংকর হতে পারে। কেননা ক্ষমতা সৃষ্টি হয় ভয় দেখানোর জন্য। যার ক্ষমতা আছে তার উচিৎ সুযোগ কাজে লাগানোর- এটা তৃতীয় বিশ্বের দায়িত্বশীল নেতা বা আমলাদের দর্শণ! কারণ ভয় যদি না থাকত তাহলে ক্ষমতার অস্তিত্ব থাকবেনা। ক্ষমতাবান নেত্রী, আমলারা মানুষের মাঝে ভীতি ছড়িয়ে দিয়ে ক্ষমতার চূড়ান্ত রুপায়ন করেন। এক্ষেত্রে পেশী বা বন্দুকের নল একমাত্র ভরসা। ক্ষমতার ধরণ একেক জনের কাছে একেক রকম হতে পারে। সেটা পাড়ার বখাটে কিংবা পাতি নেতা থেকে শুরু করে ট্রাম্পের দিকে তাকালে বুঝা যায়। ক্ষমতা বিষয়টা অমানবিক মধ্যযুগীয় এবং বর্বতার মধ্যে পড়ে।
গনতন্ত্রে ক্ষমতার চর্চা করা নিষিদ্ধ। একটি প্রকৃত গনতন্ত্রিক দেশের মালিক জনগন। এবং সেখানে সাংবিধানিকভভাবে সবার অধিকার সমান। গনতন্ত্রে সরকারী পিয়ন থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি কেউই ক্ষমতার অধিকারী না। তারা সকলেই কিছ সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করে মাত্র। হাসিনা/খালেদা কিংবা হামিদ সাবরা যদি নিজেদের অর্পিত দায়িত্বকে ক্ষমতা মনে করেন তাহলে সেখানে গণতন্ত্র থাকার কথা না।
অনেকের প্রশ্ন জাগতে পারে, তাহলে তারা যে রাষ্ট্রের জন্য কাজ করে তার বিণিময় কি পাবে? সোজা কথায়- তারা রাষ্ট্রের যে দায়িত্ব পালন করেন তার জন্য তারা মাসিক মাইনে পান এবং সে মাইনে দিয়ে তারা পড়নের শাড়ি, পায়ের জোতা এবং ভাতের হাড়িতে চাউলের যোগান দেন। অর্থাৎ তারা রাষ্ট্রীয় চাকুরে, জনগণের গোলাম।
তার মানে- গনতন্ত্রের দর্শণে কেউই ক্ষমতাশালী/শক্তিশালী না। ক্ষমতাশালী নেতারা জনগণের ভোটে সাংবিধানিকভাবে কিছু দিনের জন্য পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করেন। কেউ প্রশ্ন রাখতে পারেন শামীম ওসমান, এম্পি বদি কিংবা ইলিয়াস আলীদের খুটার জোর কোথায়? ঐ যে নেত্রীর আস্হা ভাজন। নেত্রী চাইলে তাদের ব্যবহার করে জনগণকে ক্ষমতার দাপটে তটস্থ রাখতে পারেন। এখানে নেত্রী থেকে যান ধোয়া তুলশি পাতা। এটা বাড়তি সুবিধা!
অতি পরিতাপের বিষয়, বর্তমানে দেশ জনগনের হাতে নেই। স্বাধীন তার পর থেকে দেশে কতিপয় নেতা/নেত্রী বিভিন্নভাবে ক্ষমতাশালী হয়ে কলোনিয়াল সিস্টেমে দেশ পরিচালনা করেছে। যারাই ক্ষমতায় এসেছে তারা বিভিন্ন ভাঁওতাবাজির উদাহরণ দিয়ে আকারে ইঙ্গিতে বুঝাইতে চাইছে এই দেশ আমার, আমার বাপের কিংবা আমার স্বামীর। এখানে আমরাই সব, বাকী সব ছাগলের তিন নম্বর বাচ্ছা। তোদের জন্ম হয়েছে কেবল আমাদের গোলামী এবং চাটুকারিতা করার জন্য। আমাদের ক্ষমতা খাটানোর অধিকার আছে। তোদের প্রজা হিসেবে থাকতে হবে। তাদের আকারে ইঙ্গিতে, হুংকারে প্রতক্ষ্য ক্ষমতার দাপট দৃশ্যমান হয়েছে বা হচ্ছে। জনগণ সব সময় তাদের ভয় করে, তোয়াজ করে। তানা হলে যে, তাদের গুম, খুন হত্যা বা ধর্ষণের শিকার হতে হবে।
প্রকৃত গণতান্ত্রিক দেশে সকল মানুষের সমান অধিকার নিচ্চিত থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে সেটা কি আদৌ ছিল কিংবা আছে?
ছবি: নেট
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৩৮