এথেনা
গ্রিক Παλλας αθηνα প্যালেস্টাইন, গ্রীক ও রোমানদেবী। প্যালেস্টাইন ও গ্রীক নাম এথেনা কিন্তু রোমান নাম মিনার্ভা। এথেনার নাম ও জন্ম নিয়ে নিয়ে বিভিন্ন মতবাদ রয়েছে। যেমন-
১. প্যালেস্টাইন পুরাণ অনুসারে ইনি জন্মেছিলেন লিবিয়ার ট্রাইটনস হ্রদের ধারে। এখানে লিবিয়ার তিনটি পরী দ্বারা প্রতিপালিত হন। এই সময় ইনি ছাগলের চামড় পরিধান করতেন। এঁর শৈশবের খেলার সাথী ছিলেন প্যালাস। দুর্ঘটনাক্রমে এথেনার হাতে প্যালাস-এর মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পর ইনি অত্যন্ত দুঃখিত হন। এবং তাঁর এই বন্ধুর নামটি নিজের নামের আগে জুড়ে দেন।
২. এথেনের পিতা ছিলেন প্যালাস। এঁর পিতা নামানুসারে তাঁর নামকরণ করা হয় প্যালাস এথেনে।
৩. হোমারের মতে, ইনি জন্মেছিলেন জিউসের মাথা থেকে পূর্ণযৌবনা এবং যুদ্ধের সাজে উৎপন্ন হন। ইনি ছিলেন জিউসের সবচেয়ে প্রিয় সন্তান।
৪. অন্য মতে- একবার জিউস জলপরী মেটিসকে দেখে তীব্র কামাসক্ত হয়ে পড়েন। মেটিস নিজেকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন রূপ ধরে পালাতে থাকেন। অবশেষে ইনি জিউসের ভোগের শিকার হন। এরপর গেইয়া ভবিষ্যৎবাণীতে জিউসকে জানান যে, জিউসের ঔরসে মেটিস একটি শক্তিশালিনী কন্যার জন্ম দেবে। কিন্তু জিউস যদি তাঁর সাথে পুনরায় মিলিত হন, তবে তিনি একটি পুত্র সন্তান প্রসব করবেন। এই পুত্র সন্তানটি জিউসের চেয়ে শক্তিশালী হবে এবং সে জিউসকে পরাজিত করে দেবরাজ্য দখল করবে। এই ভবিষ্যৎ বাণী শোনার পর জিউস ভয়ে মেটিসকে গিলে ফেলেন। কিন্তু প্রথমবার মিলনের ফলে মেটিস গর্ভবতী হয়েছিলেন। এই অবস্থায় মেটিস জিউসের পেটেই রয়ে গেলেন। জিউসের পেটে থাকা অবস্থায় মেটিস একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন। এই কন্যাই গ্রীকের বিখ্যাত দেবী এথেনা।
পরে এথেনা জিউসের পেটে বর্শা ও মস্তকাবরণসহ জন্মেছিলেন। এথেনা জিউসের পেট থেকে বের হওয়ার জন্য, তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করলে, ইনি ব্যথায় কাতর হয়ে পড়েন। এই কন্যা ট্রাইটন হ্রদের ধারে জিয়াসের মাথা ফেটে বের হন। গ্রিক পৌরাণিক কাহিনি মতে– এথেনা যুদ্ধ সাজে সশস্ত্র অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এটি ছিলজিউসের সবচেয়ে বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা।
৫. হেরোডোটাস মতে- ইনি ছিলেন সমুদ্র দেবতা পসাইডোনের কন্যা। জিউস পোসাইডোনের কাছ থেকে এথিনাকে দত্তক হিসাবে গ্রহণ করেন। ধারণা করা হয়, প্যালেস্টাইন দেবী প্যালাস এথেনা গ্রিক পৌরাণিক কাহিনীতে প্রবেশ করেছিল। গ্রিক পুরাণেও ইনি অযোনীসম্ভবা হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকেন। তবে গ্রিক পুরাণে ইনি জিউসের কন্যা হিসাবে সর্বাধিক পরিচিতা।
এথেনা ছিলেন শুদ্ধতমা কুমারী দেবী। এমনকি তাঁর নামে সামান্যতম বদনামও পাওয়া যাবে না। যুদ্ধসাজে ভয়ঙ্কর অবস্থায় তাঁর বিভিন্ন গ্রিক পৌরাণিক কাহিনীতে পাওয়া গেলেও, ইনি ছিলেন মূলত জ্ঞান, ন্যায়বিচার, পবিত্রতার দেবী। এছাড়া তাঁকে নগরলক্ষ্মী বা নগরের দেবী হিসাবে বিবেচনা করা হতো। তাঁর মাথায় ছিল শিরস্ত্রাণ, গায়ে বর্ম ও হাতে তরোয়াল। আবার শান্তির প্রতীক হিসাবে ইনি ধারণ করতেন জলপাই গাছের ডাল। উল্লেখ্য ইনি জলপাই গাছ সৃষ্টি করেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে পুরো গ্রিকক পৌরাণিক কাহিনীতে তাঁর মতো সাহসী দেবতা বা দেবী দেখা যায় না। দেবতাদের সাথে দৈত্যদের যুদ্ধে সকল দেবতা পালিয়ে গেলেও অনেক সময় একা যুদ্ধক্ষেত্রে রয়ে গেছেন।
গ্রিক পুরাণে বর্ণিত বিখ্যাত ট্রয় যুদ্ধের পিছনে ইনি জড়িত ছিলেন। একবার এথেনা, হেরা ও এ্যাফ্রিদাইতে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়ে প্যারিসের কাছে উপস্থিত হলে, প্যারিস এ্যাফ্রিদাইতেকে সর্বশ্রেষ্ঠা সুন্দরী ঘোষণা করেন। এরপর ইনি প্যারিসের উপর খুশি হয়ে, পৃথিবীর শ্রেষ্ট সুন্দরী হেলেনেকে উপহার দেন এবং প্যারিস কর্তৃক হেলেনের অপহরণে সাহায্য করলে ট্রয়যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। এই কারণে, হেরা ও এথেনা ট্রয় যুদ্ধে গ্রিকদের সহায়তা করেছিলেন।
এথেনার এক মন্দিরে পোসেইডোনের সাথে মেডুসা সহবাস করলে এথেনা অত্যন্ত ক্ষিপ্ত হন। শক্তিশালী পোসেইডোনের বিরুদ্ধাচারণ করা ক্ষমতা এথেনার ছিল না। তাই তিনি মেডুসাকে দানবীতে পরিণত করেন। এই কারণে পার্সেয়ুস যখন মেডুসার মাথা সংগ্রহের উদ্যোগ নেন, তখন এথেনা তাঁকে সাহায্য করেছিলেন। যেহেতুমেডুসার মুখের দিকে যে কেউ তাকালে পাথরে পরিণত হয়ে যায়, তাই এথেনা তাঁকে দিলেন আয়নার মতো একটি উজ্জ্বল ঢাল। যাতে পার্সেউস সরাসরি মেডুসার মুখের দিকে না তাকিয়ে, ঢালের উপর পতিত মেডুসার ছবি দেখে তাকে হত্যা করতে পারেন।
সূত্রঃ
* http://www.paleothea.com/
* greek myth/Robert Graves, cassel & comoany, fourth edition 1995
* Mythology/Edith Hamilton/New American Library, 1969
* Click This Link
সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো
রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন
যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে
ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন
আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন
মসজিদ না কী মার্কেট!
চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷
আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন