somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের মুসলমানিত্বের মোজেজা এবং কামড়া-কামড়ির রকমফের-২

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাড়ে তিনহাত শরীরে ইসলাম কায়েমের অর্থ আছে কি?

জ্বী আছে, কিন্তু তাহা কিভাবে সম্ভবপর হইবে? আসলে হুজুররা যেইভাবে সহজভাবে বলেন, সেইভাবে কি সাড়ে তিনহাত শরীরে ইসলাম কায়েম করা সম্ভব, অন্তত বর্তমানের এই চরম ইসলামবিরোধী পরিবেশে? নাহ, সম্ভব নহে যদি না চার খলিফার মতোন ইসলামী সমাজব্যবস্থা কায়েম থাকে!!

যেই সমাজে বিদেশ হইতে চড়া সুদে আমদানিকৃত সকল কিছুই যেমনঃ আপনার পরিহিত জুব্বা-কোর্তার কাপড়, খাদ্য-বস্থু, ব্যবহৃত ও ভোগ্য জিনিসপত্র আমরা ভোগ করিয়া থাকি এমনকি মসজিদ-মাদ্রাসায় প্রাপ্ত টাকা বা বেতনের সহিতও সুদ-ঘুষের টাকার সম্পর্ক রহিয়াছে এবং কুরআন নির্দেশিতমতে আপনার পর্দা রক্ষা করা আদৌ সম্ভবপর নহে, যেইখানে অসহায় ধর্ষিতাদের আপনি ইসলামী বিধানে সুরক্ষা দিতে ১০০% ব্যর্থ এবং ধর্ষক, চোর-ডাকাত, সরকারী-বেসরকারী লুটেরাদের, জুয়াড়ু-মদারুদের আপনি সংশোধনী কিংবা শাস্তি দিতেও অক্ষম; সেইখানে কী করিয়া আপনি আপনার সাড়ে তিনহাত বডিতে ইসলাম ধারণ করিবেন, তাহাতো আমার মতোন কম শিক্ষিত বান্দার বুঝেই আসিতেছে না।

নোংরা-পচা সমুদ্রসদৃশ এই সমাজে বা বিষাক্ত-দুষিত বাতাসে নিজের শরীর ডুবাইয়া রাখিয়া বা নাপাক পানিতে অজু করিয়া আপনি কিভাবে বলিতে পারেন যে, আপনি পাক-পবিত্র আছেন এবং আপনার শরীরে হারাম খাদ্য ঢুকিয়া যায় নাই, আপনার পর্দা আপনি রক্ষা করিতে পারিতেছেন? আপনার ইবাদত-বন্দেগী সঠিক হইতেছে কিনা, আপনার আমার মতোন দায়িত্ব-জ্ঞানহীনের প্রার্থনা মহান বিবেচক আল্লাহর কাছে কবুলই হইতেছে কিনা--সেইটাই আগে ভাবিবার বিষয়। তাহার পরেই না আপনি অন্যের খুঁত ধরা কিংবা অন্য ইসলাম্পন্থীদের সমালোচনার জাবর কাটিতে পারেন মাত্র!!

আপনার শরীরে হারাম বস্তু আছে কিনা, আপনার পোশাক পবিত্র কিনা, আপনার ক্রয়করা জায়নামাজ নির্ভেজাল কিনা, আপনার খাদ্য হালাল কিনা, আপনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে জিহাদ করিতেছেন কিনা, চার খলিফার মতোন আপনিও আল্লাহর আইনমতে ''আকিমুদ্দিন'' মানে সমাজ-রাষ্ট্র হইতে সকল খারাবী দূর করিয়া ন্যায় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইসলাম কায়েমের চেষ্টা করিতেছেন কিনা--পরকালে মুক্তির জন্য ইহাই হইলো আসল বিবেচ্য বিষয়। কেননা হাদীসে এমন কথাও লিখা আছে যে, ইসলাম বা দ্বীন কায়েমের চিন্তা ব্যতীত যে মৃত্যুবরন করিলো তাহার মরণ হইলো জাহিলিয়াতের মৃত্যু। এখন ভাবুন--আমরা কেমন মুসলিম হিসাবে বড়াই করিয়া যাইতেছি!! সুতরাং কাঁদার ভিতরের পিচ্ছিল গছিমাছ হইয়া বাঁচিলেই কিন্তু পবিত্রতার দোহাই দিয়া আমরা পরকালে রক্ষা পাইবোনা।।

মুসলিমের প্রকারভেদ (!)

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলিয়াছেন---হজরত ইব্রাহীমই আঃ তোমাদের পরিচয় মুসলিম নামে নির্ধারণ করিয়াছেন। ইহার অর্থ কী দাঁড়াইল? মুসলিম মানে আল্লাহতে বা ইসলামে সম্পূর্ণভাবে আত্মসমর্পিত যাদের খণ্ডিত বা আংশিক ইসলামের পালনের চেষ্টার কোনোই সুযোগ নাই। আবার মুসলিম দাবী করিয়া ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো জীবনবিধান পালনেরও একবিন্দু সুযোগ নাই। ইসলামের নামে বা মুসলিম হিসাবে জগাখিচুড়ি জাতীয় কিছু পালনেরও কোনো ফাঁক নাই। তাই মুসলিম কমুনিস্ট, ধর্মনিরপেক্ষ মুসলিম, আহাম্মদী মুসলিম, বাহাই মুসলিম, সুন্নি মুসলিম, শিয়া মুসলিম বলিয়া ইসলামে কিছুরই অস্তিস্ত্ব আমি অন্তত খুঁজিয়া পাই নাই। কুরআন-হাদিসেও এমন কিছুর চিহ্ন নজরে পড়ে নাই।

আমার মতোন অধমের মতে, যাহারা এমনধারা মুসলিম হিসাবে নিজেকে জাহির বা দাবী করেন, তাহারা যেমন কুরআনিক এই পরিভাষাটিকে কলঙ্কিত ও অপমানিত করিতেছেন, তেমনই যাহারা মওদুদী ইসলাম, ওয়াহহাবী ইসলাম বলিয়া অন্য ইসলাম্পন্থীদের গালি দিয়া থাকেন--তাহারাও আল্লাহর ঘোষিত ইসলাম পরিভাষাটিকেও কলঙ্কিত ও অপমানিত করিয়া থাকেন।

কুরআন-হাদিস পড়িয়া আমার যাহা ধারণা ও বিশ্বাস জন্মিয়াছে--তাহাতে বিভিন্ন ফেরকা বা উপদল নাম দিয়া যাহারা অমুকপন্থী মুসলিম, তমুকপন্থী মুসলিম হিসাবে পরিচিত করাইতেছেন, আল্লাহর কাছে তাহার কানাকড়িও মুল্য নাই বলিয়া আমার বিশ্বাস। বরং কুরআন বলে--হে মুসলিমগন তোমরা ইসলামে দড়িকে শক্তভাবে আঁকড়াইয়া ধরো, পরস্পর বিচ্ছিন্ন হইও না বা উপদলে বিভক্ত হইও না। তবে আমার মতে, ইসলামী আন্দোলন বা ইসলাম কায়েমের কৌশল হিসাবে বিভিন্ন ইসলামী নাম ধারণ করায় কোন অপরাধ নাই এবং ইহাকে উপদল বলিবারও কারণ নাই।

এই যখন বাস্তবতা, তখন শিয়া-সুন্নি, হানাফি-মালিকী-শাফিঈ-হাম্বলী-লা-মজহাবীর নামে মারামারি, বাহাস বা কুতর্কের সমর্থনে কোনো দলীল আমি কুরআন-হাদিসে খুজিয়া পাই নাই!!
(ধারাবাহিক)

পূর্বের পর্ব-১ পড়িতে ভুলিবেন না- ক্লিক করুন

সর্বশেষ এডিট : ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:০৫
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×