somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাঠের তলোয়ার (আরম্ভ পর্ব)

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(পৌষের শেষ দিন অথবা জানুয়ারী ১৩। এর মাঝে এদিনের পিকনিক নিয়ে বেশ কিছু পোস্ট, দারূণ সব ফটো আর মোটামুটি সর্বাত্মক বর্ণনা প্রকাশ হয়ে গেছে। আমার পোস্টটা শুধু ডায়েরি লেখার মত। যাকে যা করতে দেখেছি আর যাকে যা বলতে শুনেছি - সবটা লিখে ফেলছি। কেউ মাইন্ড করলে আমি দায় নেব না!!!!)

খুব ভোরেই ঘুম থেকে উঠে শাহবাগ রওনা হলাম। বাস কোন রুটে যাবে নিশ্চিত ছিলাম না। যদি জানতাম, তাহলে বিশ্বরোড (কুড়িল) থেকেই উঠতাম। ৭:৫০-এ জাদুঘরের সামনে গিয়ে দেখি কত্তগুলা পিকনিকের বাস !!! আমি ভেবেছিলাম এই সাতসকালে একটা বাস-ই দাঁড়ানো থাকবে, আমি এসে সোজা উঠে যাব। তো যাই হোক এত্ত পিকনিক পার্টির মাঝে কারা যে ব্লগার বুঝতে পারছিলাম না, তেমন কাওকে চিনিও না !

ফোন দিলাম সাইরাস হেলাল ভাই-কে, "ভাইয়া, আপনি কই?" তিনি সরাসরি জবাব দেন না, "শাহেদ এত সকালেই পৌঁছে গেছে? একটু দাঁড়ান, আরেফিন আর দূর্জয় কাছাকাছিই আছেন...", তিনি নিজে কোথায় আছেন সেটা বলার কোনও প্রয়োজন অনুভব না করেই কথা শেষ করলেন! আমি অপেক্ষায় থাকলাম। আমি এমনিতে খুব মিশুক না, পিকনিক ইত্যাদিতে আমার আগ্রহ খুব কম। বেশি লোকজন দেখলে আমি ঘাবড়ে যাই। হেলাল ভাই বলাতেই আসা, ভাবলাম পরিচিত ক'জন থাকলে আড্ডায় সময় কাটাবো। কী ভাবি, আর কী হয় !

আস্তে আস্তে পরিচিত মুখ দেখতে শুরু করলাম। পুশকিন ভাই আসলেন। আশেপাশেই ছিলেন সকাল বেলার কাক। আমি নিশ্চিত উনাকে ব্লগ-ডে'তে দেখেছি, কিন্তু নাম মনে পড়ছে না দেখে আমি একটা অসস্তিকর অবস্থায় ছিলাম; তিনি সেটা আরও বাড়িয়ে বললেন, "শাহেদ ভাই কি মানুষকে ভুলে যাবার প্রবণতা আছে নাকি?" #:-S :|

বেলা বাড়ার সাথে সাথে ব্লগারের সংখ্যা বাড়তে লাগল। মোটামুটি ন'টা নাগাদ সবাই হাজির। ফটোসেশন চলল বাসের বাইরে। প্রচন্ড অলস আমি একটা সিট দখল করে ঠাঁই বসে রইলাম। ফারজুল ভাই, নষ্ট কবি, আশকারি, রুমকী আপু আর আরও কয়েকজন পরিচিত ব্লগারকে দেখে খানিকটা আশ্বস্ত হলাম - একদম একা থাকব না।

হেলাল ভাই আসে না।

ইঞ্জিন স্টার্ট দেবার পর এবার আমি আবার ফোন দিলাম, "ভাইয়া, কই আপনি?"; এবার তার জবাব পাই না, খটকা লাগল, "আপনি কি ঢাকায় এসেছেন?" হেলাল ভাই কি বললেন আমি আর শুনি নি অথবা আমার আর মনে নেই, আমি চুপ হয়ে বসে রইলাম জানালার পাশের সিটে।

আমার ধাতস্থ হতে খানিকটা সময় লাগল। কথা বলতে না পারলেও শুনতে লাগলাম। ব্লগার'রা বেশিরভাগই পরস্পরের অপরিচিত, আড্ডা শুরু হয় তাই ব্লগের বিভিন্ন পোস্ট নিয়েই, তারপর সেটা গড়াতে গড়াতে কোথায় যে চলে যায়। যেমন, কথার শুরুতে কেউ একজন আরেকজনকে বলে ওঠে, "আরে ভাই আপনের গত পোস্টে তো বিরাট ক্যাচাল !" আরও ক'জন হইচই করে ওঠেন ! মাঝে আশকারি সুক্ষ্ণ হিউমার সেন্সে খোঁচা মারে, "ওই পোস্ট স্টিকি করা হোক, আটা সাপ্লাই আমি দেব !" ;)

শুনতে শুনতে খানিক বাদে সহজ হয়ে আসলাম। পাশে বসা ফারজুল ভাই-য়ের সাথে কথা বললাম কিছুক্ষণ। হঠাৎ মাউথ-অর্গানের সুরে নষ্ট কবি সবাইকে চমকে দিলেন ! আর যায় কই ! ওয়ান মোর, ওয়ান্স মোর ! ক'জন বলল, "শাহেদ ভাই, গীটার'টাও বাইর করেন দেখি"। আমি চাচ্ছিলাম, পিকনিক-স্পটে গিয়ে ওটা বের করব। এত কোলাহল, গাড়ির শব্দে শোনা যাবে কিছু? কিন্ত আগ্রহের চেয়ে বড় অ্যামপ্লিফায়ার আর নেই ! সবার আগ্রহে জমতে টাইম লাগল না ! :)

শিপু ভাই, মাহি আর ছোট মির্জাও সামনে থেকে পেছনে আমাদের গায়কদলে চলে আসলেন। মাঝে সুমন আর জাহিদ ভাই, দুই ফটোগ্রাফার যোগ দিল। গীটারের তার ছিঁড়ে, আবার লাগাই। মাথার তারগুলা যে টানটান হয়ে আছে ! নষ্ট কবি'র অর্গান থামেনা। সবাই খোলা গলায় গান ধরল একসাথে। একটা মানুষও আর অপরিচিত না তখন ! একজনও না !

(চলবে...)

পরের পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ১০:৪০
৩৫টি মন্তব্য ৩৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×