মহানগর উঠছে বেড়ে উঁইপোকাদের ঢিবি'র মতন
চৈত্রমাসের আর্দ্র বাতাস, দেয়াল-তোষক ভ্যাপসা গরম
ঘড়ির কাঁটায় আটকে সময় - মধ্যরাতের রেল ইস্টিশন
শান্তাহারের কলাওয়ালা'র দীর্ঘশ্বাসে মেঘ জমে না।
দু-তিন টাকায় দুঃসংবাদ, আশি টাকায় ফ্যাশন জগৎ
কারেন্ট আসলে ডুকরে কাশে চা-দোকানের টেলিভিশন
ছুটছে সবাই - এত্ত কী কাজ ! কার তরে? - কে বলতে পারে?
আমি শুধু জানি, তুমি বৃষ্টি আনবে শুক্রবারে...
উঁইপোকারা শহর গড়ে, এখন ভীষণ অশান্তিতে
মৌনমুখর মিছিল চলে বুকের তেষ্টা জানান দিতে
পেপসি কেবল তেষ্টা বাড়ায়, চা খাব না - ধুত্তোরি ছাই -
আঁখের রসের দশ টাকা মগ- ওসবও না - বৃষ্টিকে চাই !
গজগজিয়ে একটা সময় সবাই ঢুকে পড়ে খাঁচায়
আমি তখন অপেক্ষাতে - বৃষ্টি আসবে সকালবেলায়।
ভোরের দিকে ট্রেন'টা আসে, খেয়াল করার কেউ ছিল না
সবাই তখন গভীর ঘুমে, উদাস অল্প ক'জন জেগে
যেই না তুমি নেমে এলে বিষন্ন এই প্লাটফরমে
অমনি আমি বুঝে ফেলি - এই গাড়িটা বোঝাই মেঘে !
সবাই ভাবে 'রাত কাটেনি', আমি বুঝি 'মেঘের কালো'
এত্ত কালো ! - দুশ্চিন্তায় আকাশটার'ও কপাল ঘামে
চোখের পাতায় একফোঁটা জল ঘুম ভাঙাতে - ঠিক তারপর
আকাশ ভেঙে উথাল-পাতাল বৃষ্টি নামে বৃষ্টি নামে !
উঁইপোকারা বাঁধ ভেঙে সব ভীষণ জলে আছড়ে পড়ে !
উঁইপোকারা আমার মত - ভীষণ সুখে কাতরে মরে...
আলাদা কথা : গত মঙ্গল কী বুধবারে এক বন্ধু জানালো, সপ্তাহ-শেষে 'ঢাকা' আসবে; উদ্দেশ্য শুধুই বেড়ানো। এমন চৈত্রের গরমে বিদ্যুৎ-পানির বিকট সংকটে এই ধুলা-বালি'র নগরে কেউ 'হাওয়া-বদল' করতে আসবে - এরকম চমকপ্রদ সংবাদ ইতোপূর্বে অনেকদিন শুনি নাই। যাই হোক, তাকে শুধু জানালাম, 'এমনি আসবা না। পারলে কিছু বৃষ্টি-বাদল নিয়ে আসবে সাথে করে, ঢাকা'য় এখন খুব প্রয়োজন।'
বন্ধুটি রওনা হল বৃহস্পতিবার রাতে। ঢাকা'র আকাশও টের পেয়ে মেঘে ঢাকা'র ব্যবস্থা করতে শুরু করল। শুক্রবার সকালে সে যখন ঢাকা'য় নামে, আকাশ কালো করে বৃষ্টিও আর দেরি করে না। আমার চমকে উঠা'র কথা না। অন্ততঃ আমি তো জানি, কেউ একজন এই সকালে বৃষ্টি নিয়ে আসবে বলে কথা দিয়েছিল।
সৃষ্টিকর্তা এইসব 'সেন্স অব হিউমার'-এর নিদর্শন দেখান বলেই আমরা এখনও মাঝে মাঝে কবিতা-টবিতা লিখি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



