somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তেলিয়াপাড়া সম্মেলন ১৯৭১ ও আমাদের মুক্তিযুদ্ধ

০১ লা এপ্রিল, ২০১২ রাত ৯:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


হবিগঞ্জ জেলার পূর্ব প্রান্তে ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী একটি ছোট্ট গ্রাম তেলিয়াপাড়া। সিলেট হবিগঞ্জ রেল পথে ইটাখোলা রেল স্টেশন থেকে মেঠো পথে ৩০ মিনিটের দূরত্বে গত শতাব্দীর প্রথম ভাগে মাত্র ২৩ ঘর চা বাগানের শ্রমিক নিয়ে গড়ে ঊঠেছিল এই গ্রামটি। ১৯৭১ সালের আগে মাত্র একবার ই উল্লেখ করার মত একটি ঘটনা ঘটেছিল এই গ্রামে। ব্রিটিশদের কাছ থেকে মালিকানা পাওয়া এ এন মুখোপাধ্যায় বাগানটি আনোয়ার হোসেন নামের একজন বাঙালি মুসলমানের কাছে বিক্রি করে দিয়ে ভারতে চলে যান ১৯৬৫ সালে। ততদিনে বাগানের কলেবর বেড়েছে, শ্রমিকের সংখ্যা, বেড়েছে তবে যোগাযোগ ব্যবস্থার তেমন কোন উন্নতি হয়নি। একটি চা বাগান, একটি ক্ষীণকায় পাহাড়ি নালা আর অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে গড়া নির্জন গ্রামটি হঠাৎ করেই কোলাহল মুখোরিত হয়ে পড়ে ১৯৭১ সালের এপ্রিলে। ২৭শে মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিদ্রোহের পর তেলিয়াপাড়া চা বাগানে হেড কোয়ার্টার স্থাপন করেন ৪র্থ ইস্টবেঙ্গলের সহ অধিনায়ক মেজর খালেদ মোশাররফ। তার এক সপ্তাহ পর ১৯৭১ সালের ৪ঠা এপ্রিল এখানে অনুষ্ঠিত হয় মুক্তি যুদ্ধের সেনা নায়কদের প্রথম সম্মেলন। সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের অন্যান্য অনেক ঘটনার মত এই সম্মেলনটিও তেমন কোন পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতি ছাড়াই অনুষ্ঠিত হয়। তবে সম্মেলন শেষ হয় দেশ স্বাধীন হবার আগ পর্যন্ত সরবাত্নক লড়াইয়ের পরিকল্পনা নিয়ে।
একথা আজ আর অস্বীকার করার উপায় নেই যে ৭০ এর নির্বাচনে বিজয়ের পরও ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা, পশ্চিমা শাসক গোষ্ঠীর ছলচাতুরী, ছাত্র সমাজের সশস্ত্র আন্দোলনের মহড়া এবং বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ বাঙালির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌছে দিলেও লড়াই করে বিজয় অর্জনের প্রস্তুতি ছিল অপ্রতুল। উনসত্তরের গণ অভ্যূত্থানের সাফল্য, দলের বুর্জোয়া চরিত্র এবং নেতৃত্বের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের উপর বিশ্বাস এক্ষেত্রে আওয়ামীলীগের যুদ্ধ প্রস্তুতির প্রধান প্রতিবন্ধক হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। ৭ই মার্চের ভাষণ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বাঙালি ইউনিট গুলিকে উদ্দীপ্ত করলেও যুদ্ধারম্ভের আহ্বান সেখানে স্পষ্ট হয়নি। ফলতঃ এই ইউনিট গুলির যুথবদ্ধতা নষ্ট করার জন্যে মহড়া এবং আইন শৃংখলা রক্ষার অজুহাতে সেনানিবাসের বাইরে পাঠাতে পাকিস্তান সেনা নেতৃত্বের তেমন কোন বেগ পোহাতে হয়নি। অপারেশন সার্চ লাইটের নামে পাকিস্তান বাহিনীর নজির বিহীন হত্যাযজ্ঞই মূলতঃ বাঙালিকে স্বাধীনতার জন্যে অকুতোভয় করে তোলে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আক্রমণের প্রায় সাথে সাথেই বাঙালি সতঃস্ফূরত ভাবে এর জবাব দিতে শুরু করে। ৭ই মার্চের ভাষণ সেখানে যতটা প্রেরণা হিসাবে কাজ করে, বাঙালির আত্মরক্ষার মরীয়া চেষ্টা তার চেয়ে বড় অনুঘটক হিসাবে প্রতিভাত হয়। সেনাবাহিনীর বাঙালি ইউনিট এবং ইপিআরের ব্যাটালিয়ন গুলি বিভিন্ন সেনানিবাস ও শহরে বিচ্ছিন্ন ভাবে বিদ্রোহ করে। এই ইউনিট গুলির মধ্যে পারস্পারিক যোগাযোগ না থাকায় বিদ্রোহের প্রথম কয়েকদিন লেগে যায় খোঁজ খবর সংগ্রহে। মেজর জিয়ার নেতৃত্বে ৮ম ইষ্ট বেঙ্গল, এবং ক্যাপ্টেন রফিকের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের ইপিআর ২৫ মার্চ রাতেই বিদ্রোহ করলেও সে খবর তখনও খালেদ মোশাররফের কাছে পৌছেনি। অন্যদিকে মেজর সফিউল্লাহ ২য় বেঙ্গল রেজিমেন্ট নিয়ে ২৮ মার্চ বিদ্রোহ করলেও এর আগের দিন সঙ্ঘটিত ৪র্থ ইস্টবেঙ্গলের বিদ্রোহের কথা জানতে পারেন নি। ২৯ তারিখে খালেদ মোশাররফ সফিউল্লাহ’র বিদ্রোহ এবং ঢাকা আক্রমণের জন্যে কিশোরগঞ্জে ২য় বেঙ্গলকে সংগঠিত করার খবর পান। ঢাকায় পাকিস্তানি ২টি ব্রিগেড সহ প্রচুর সৈন্য মোতায়েন থাকায় খালেদ, সফিউল্লাহ কে ঢাকা আক্রমণের পরিবর্তে সিলেটে এসে নিজ বাহিনীকে সংগঠিত করার জন্যে অনুরোধ করেন। কিশোরগঞ্জের সাথে যোগাযোগের তেমন কোন ব্যবস্থা না থাকায় তিনি একটি চিঠি দিয়ে লেঃ মাহবুব কে সফিউল্লার উদ্দেশ্যে পাঠান। অন্য কোন বাহন না থাকায় মাহবুব কে যেতে হয় রেলের ইঞ্জিনে চেপে। তিনি চিঠিতে লেখেন Do not go towards Dacca. You will be banging your head against wall. We have liberated an area whole of Brahmanbaria Subdivision and a part of Sylhet. Before taking any further action on Dacca, we should jointly liberate this whole area and then go for Dacca. I had already contacted Indian BSF officers and they have agreed to help us. I could not come and meet you today because I am going to meet Brigadier B.C. Pandey of BSF who promised me to help us.
খালেদের পরামর্শ অনুযায়ী সফিউল্লাহ ব্রাহ্মনবাড়িয়া হয়ে তেলিয়া পাড়া পৌঁছেন এবং ৩ এপ্রিল তেলয়াপাড়ায় তাঁর হেড কোয়ার্টার স্থাপন করেন। ইতমধ্যে চট্টগ্রামের বিদ্রোহ, কালুরঘাটের ঘোষণা এবং কুস্টিয়ার যুদ্ধের খবর তেলিয়াপাড়া পৌঁছে। ফলে সামগ্রিক যুদ্ধ পরিস্থিতি এই সমর নায়কদের কাছে পরিস্ফুট হয়ে ওঠে। যুদ্ধের গতিময়তা এবং এই ন্যায় যুদ্ধের বৈধতা দেবার জন্যে নেতৃত্বের বিষয়টি তাদের কাছে জরুরী হয়ে পড়ে। ২ এপ্রিল কুমিল্লার মতি নগরের কাছে খালেদের সাথে কর্নেল ওসমানী ও লেঃ কর্নেল ওসমানীর দেখা হয়ে যায়। এই দু’জনই তখন সামরিক বাহিনী থেকে অবসর নিয়ে আওয়ামীলীগের টিকেটে একজন এম এন এ এবং একজন এমসিএ হয়েছেন। মতিনগর হয়ে ভারতের আগরতলায় যাচ্ছেন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। খালেদের অনুরোধে তাঁরা ৪ এপ্রিল তেলিয়া পাড়ায় ফিরে আসেন বিদ্রোহী এই অফিসারদের সম্মেলনে যোগ দিতে।
৪ঠা এপ্রিল সকাল ১০টায় তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ম্যানেজারের বাংলোয় কর্নেল ওসমানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া সেনা অফিসারদের প্রথম সম্মেল। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন
লেঃ কর্নেল আব্দুর রব (অবঃ)
লেঃ কর্নেল সালাউদ্দিন মোঃ রেযা
মেজর কাজী নুরুজ্জামান (অবঃ)
মেজর জিয়াউর রহমান
মেজর কাজী মোহাম্মদ শফিউল্লাহ
মেজর খালেদ মোশাররফ
মেজর নুরুল ইসলাম
মেজর মঈনুল হোসেন চৌধুরি
মেজর শাফায়েত জামিল
লেঃ আখতার আহমেদ
এছাড়া বিএসএফের ব্রিগেডিয়ার পাণ্ডেও পর্যবেক্ষক হিসাবে এ সভায় যোগ দেন। সভায় বিদ্রোহের তাৎক্ষণিক ও সুদুরপ্রসারী ফলাফলের পূর্বাপর বিশ্লেষণের পর রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখে বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবার সঙ্কল্প ব্যক্ত করা হয়। এছাড়া এই যুদ্ধকে বৈধতা দেওয়া এবং বিদেশি সাহায্যের জন্যে সরকার গঠনেরও প্রয়োজন অনুভূত হয় তেলিয়াপাড়াতেই। এই সম্মেলনে গৃহিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রাথমিক ভাবে চট্টগ্রাম-পারবত্য চট্টগ্রামের যুদ্ধের ভার দেয়া হয় মেজর জিয়া কে, সফিউল্লাহ পান ব্রাহ্মনবাড়িয়া-সিলেটের যুদ্ধের ভার আর খালেদ মোশাররফ কে দেওয়া হয় কুমিল্লা – নোয়াখলির দায়িতব। ৮ম বেঙ্গলের জনবল ছিল এমনিতেই কম। খারিয়া সেনানিবাসে বদলীর জন্যে তাদের অস্ত্র শস্ত্র যুদ্ধের আগেই তুলে দেয়া হয়ে ছিল জাহাজে। তার ওপর কালুর ঘাট সহ অন্যান্য যুদ্ধের ক্ষয় ক্ষতির কারনে ক্যাপ্টেন এজাজ আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ২য় বেঙ্গলের একটি কোম্পানীকে ৮ বেঙ্গলে দিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্তও হয় এই সম্মেলনে।
এই সম্মেলনের ফলে পরিকল্পনাহীন বিদ্রোহ একটি যুদ্ধের রুপ নেয়। স্পস্ট হয়ে ওঠে সশস্ত্র মুক্তি যুদ্ধের রুপ রেখা।
ওসমানী পরদিনই আগরতলা যাত্রা করেন এই সম্মেলনে গৃহিত সিদ্ধান্ত দলীয় নেতৃবৃন্দকে জানাবার জন্যে। একইসময় বাংলাদেশর প্রথম প্রধান মন্ত্রী তাজ উদ্দিন একটি ছোট্ট ডাকোটা বিমানে আগরতলা পৌঁছান জনমত গঠন ও সাহায্যের আশায়। ১০ এপ্রিল গঠিত হয় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার। শিলিগুড়ির একটি বেতার কেন্দ্র থেকে তাজ উদ্দিন সারা বিশ্বকে জানিয়ে দেন নতুন একটি দেশ, একটি জাতি এবং এক্তি যুদ্ধের কথা। সে দিন ১১ এপ্রিল ১৯৭১।
তথ্য সূত্র
Major General Shafiullah; Bangladesh at War
মেজর আখতার আহমেদ; বার বার ফিরে যাই
সাক্ষাৎকার; ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ; মুক্তিযুদ্ধের দলিল পত্র; ৯ম খন্ড
সাক্ষাৎকার; কর্নেল শাফায়েত জামিল; মুক্তিযুদ্ধের দলিল পত্র; ৯ম খন্ড
August Assemblage; Quamrul Hasan Bhuyan; dailystar
আমিই খালেদ মোশাররফ; সম্পাদনাঃ এম আর আখতার মুকুল
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কথা: দাদার কাছে—একজন বাবার কিছু প্রশ্ন

লিখেছেন সুম১৪৩২, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৫



দাদা,
কেমন আছেন? আশা করি খুবই ভালো আছেন। দিন দিন আপনার ভাই–ব্রাদারের সংখ্যা বাড়ছে—ভালো তো থাকারই কথা।
আমি একজন খুবই সাধারণ নাগরিক। ছোটখাটো একটা চাকরি করি, আর নিজের ছেলে–মেয়ে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×