somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Ankhon Dekhi ( আঁখো দেখি) - অন্যরকম এক সিনেমা :)

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সিনেমার নাম- Ankhon Dekhi ( আঁখো দেখি)

বাংলা ভাবানুবাদ- চোখ যে মনের, কথা বলে :P

দিল্লীর মধ্যবিত্ত এক পরিবার। দুই ভাইয়ের আনন্দের সংসার। বড় ভাইয়ের মেয়ে সেই আনন্দ বেশিদিন থাকতে দিল না, খবর এল সে নাকি কোন এক ছেলের সাথে এই অল্প বয়সেই 'পিরীত" শুরু করেছে এবং সেই প্রেমের পরিমাণ "তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচব না" পর্যায়ে চলে গেছে! ছোট ভাই (মেয়ের চাচা) তো রেগেই আগুন! রাগ সামলাতে না পেরে বড় ভাইকে নিয়ে চলে গেলেন ছেলের বাসায় তার "কত বড় বুকের পাটা" দেখতে। মেয়ের বাবা (বড় ভাই) ছেলের সাথে নরম সুরে কথা বললেন এবং আবিষ্কার করলেন- এই ছেলে আচার আচরণ, ব্যবহারে, উপার্জনে - এ প্লাস (পরীক্ষার প্রশ্ন ফেসবুকে পাওা ছাড়াই, নিজের সামর্থ্যে :P ;) )। নিজের কাছেই খারাপ লাগলো- না দেখে, না জেনেশুনেই শুধু লোকের কথা শুনে শুধু শুধু ছেলেটা সম্পর্কে কত খারাপ কথা ভেবেছেন, নিজের আদরের মেয়েটাকে বকা দিয়েছেন! এই অনুশোচনাবোধ তার মাঝে নতুন এক "বোধ" এর জন্ম দিল- আজ থেকে নিজের চোখে কিছু না দেখা পর্যন্ত, নিজের জ্ঞান এ না ধরা পর্যন্ত- সেই জিনিসে আমি আর বিশ্বাস করব না, সেটা স্বয়ং ঈশ্বর ই বলুন না কেন!

এই একটা সিদ্ধান্ত তার জীবনে অদ্ভুত প্রভাব ফেলা শুরু করল- সংবাদপত্র পড়া বাদ দিয়ে দিলেন, "ওগুলা তো সাংবাদিক লিখসে, ওগুলা যে আসলেই সত্যি তার প্রমাণ কি?", গণিতে তার বিশ্বাস চলে গেল, ধর্মের কথাও আর ভাল লাগলো না -"এগুলা তো আমি নিজের চোখে দেখিনি- কোন যুক্তিতে বিশ্বাস করব?" আশেপাশের মানুষ বিনোদনের নতুন "উৎস" খুঁজে পেল, তাকে "কুয়োর ব্যাঙ" বলা শুরু করল। তিনি মেনেও নিলেন নিজের সেই "পদবি" আর বললেন- "কুয়োর ব্যাঙ হলেও নিজের সিদ্ধান্তে, নিজের জ্ঞানে ব্যাঙ, তোমাদের মত মানুষের কথায় কান দেই না!" কিন্তু এভাবে আর কতদিন? এই মানুষটার পরিণতি কি হবে শেষ পর্যন্ত?

২০১৩ সালে বিভিন্ন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে মুক্তি পেলেও, বলিউড এ এটি মুক্তি পেয়েছে ২০১৪ তে। মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন সঞ্জয় মিশরা, যিনি সাধারণত বড় বাজেটের সিনেমাতে ছোট রোলে অভিনয় করে থাকেন বলে তার প্রতিভা বাকি সুপারস্টারদের আলোতে তেমন একটা দেখা যায়না- কিন্তু এই সিনেমাতে নিজেকে দেখিয়েছেন, চিনিয়েছেন নিজের অভিনয়ের মাধ্যমে- দুর্দান্ত! সিনেমার কাহিনী লিখেছেন আর পরিচালনা করেছেন রজত কাপুর, অভিনয় ও করেছেন ছোট ভাই চরিত্রে। একেবারেই অন্যরকম একটা প্লট আর ন্যাচারাল অভিনয় এই সিনেমার সবচেয়ে শক্তিশালী দিক। যেই থিমের উপর বেজ করে সিনেমাটা, যদিও মাঝে গিয়ে মনে হয়েছে সেই থিম থেকে সিনেমা কিছুটা সরে গিয়েছে- তারপরেও ভাল্লাগে অনেক। যৌথ পরিবারের ভাঙ্গন, ভাইয়ের সাথে ভাইয়ের সম্পর্ক, মধ্যবিত্ত পরিবারের টানাপড়েন- এত সুন্দর আর সিম্পল্ভাবে ফুটে উঠেছে এই সিনেমাতে- অদ্ভুত ভাল লাগে!

সিনেমার ফিনিশিং একেবারেই অপ্রত্যাশিত ও অদ্ভুত কিন্তু একই সাথে দারুণ এক ভালোলাগা ও অন্যরকম এল "অনুভূতির" জন্ম দেয়! শেষ কবে এই রকমের অনুভূতির স্বাদ পেয়েছি- মনে নেই। হায়দার আর পিকে ইতিমধ্যেই গতবছরের সেরা সিনেমা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে- কিন্তু এই সিনেমাকেও বাকি দুটোর কাতারে ফেলা যায়। কিন্তু অনেকেই এই সিনেমার নাম শুনেননি বা দেখেও দেখেননি- কারণ এটাতে আমির বা শহিদ কাপুর নামক "নাম" নেই। নাম না থাকলেও- অনুভূতির কমতি নেই। ইটস আ মাস্ট ওয়াচ।
সিনেমাটা দেখার আগ্রহ আরেকটু বাড়িয়ে দেই- আইএমডিবি রেটিং ৮.৩ এই সিনেমার :D

ডাউনলোড লিঙ্ক--- Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৯
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×