বাংলাদেশ অতি ক্ষুদ্র জনসংখ্যায় ঠাসা মিস্কিন একটা দেশ। যেখানে কর্মসংস্থান খুবই সীমিত। আর এই কর্মসংস্থানের অভাবে এইখানকার জসাধারণ, তথা যুব সমাজ নিয়ম শৃংখলার বাহিরে ভবঘুরে জীবন কাটায়। আবার কেউবা কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকিলেও ভবঘুরে জীবন কাটাইতে বেশি সাচ্ছন্দবোধ করে। যাহাদেরকে বলা হয় ভাদেম বা ভাদাইম্মা। নিয়ম শৃংখলা বহির্ভুত এই সকল যুব সমাজকে একত্ত্রিত করিবার লক্ষ্যে আমরা এক মহৎ উদ্যোগ হাতে লইয়া একটা সংগঠন সৃষ্টি করিয়াছি। যাহার নামঃ
বাংলাদেশ ভাদেম সংগঠন (বিভাস)

আমাদের সংগঠনে যোগদানের সাধারণ যোগ্যতা সমূহ নিন্মে প্রনীত হইলঃ
১/ নিজে ভাদেম হইতে হইবে এবং অন্যকে ভাদেম বানানোর উদ্দেশ্যে আপ্রান চেষ্টা করিতে হইবে।
২/ সত্য কথা বলিতে হইবে তবে সকলের সঙ্গে নহে।
৩/ প্রচুর জ্ঞান আহরণ করিতে হইবে। সকল বিষয়ে অল্প অল্প করিয়া। কোন বিষয় বেশি জানা যাইবে না।
৪/ বড়দের শ্রদ্ধা করিতে হইবে। কারন তাহারা টাকার ডিপো। আর ঐ টাকায় আমাদের হক। কিন্তু ছোটদেরকে স্নেহ করা যাইবে না। কারণ ইহাতে তারা মাথায় চড়িয়া বসে।
৫/ শিক্ষিত হইতে হইবে। কিন্তু শিক্ষার প্রতি তেমন আকর্ষন থাকিবে না। অনেকটা চলিতেছে গাড়ি যাত্রাবাড়ির মতন।
৬/ প্রচুর বই পড়িতে হইবে। তবে পাঠ্য বই পড়া চলিবে না। পাঠ্য বই পড়িতে হৈবে পরীক্ষার আগের রজনীতে।
৭/ কথা দিয়া কথা রাখিবার আপ্রান চেষ্টা করিতে হৈবে। যদিও ভাদেমদের কথা এবং কর্মে সাধারনত কোন মিল থাকে না।
৮/ পরোপকারী হইতে হইবে। তবে মাসে ৪ টির অধিক উপকার করা যাইবে না। ৪ এর অধিক উপকারী ভাদেমকে বিভাস দন্ড বিধির ৩৭ ধারা মোতাবেক ৭ দিন গৃহবন্ধি করা হৈবে।
৯/ রাজনীতি হইতে নিজেকে ১০০ হাত দূরে রাখিতে হইবে। এমনকি রাজনৈতিক আলাপও নিষিদ্ধ। যদি কেউ রাজনৈতিক আলাপ করে তবে অপরাধ স্বরুপ তাহাকে বিভাস দন্ড বিধির ৫১ ধারা মোতাবেক ১ মাসের জন্য সশ্রম যেকোনো চাকুরী দিয়ে দেওয়া হইবে। সংগঠনে থাকাকালিন রাজনীতিতে যোগদান করিলে শাস্তি দ্বিগুন হইবে।
১০/ নিশি জাগরণের অভ্যাস থাকিতে হইবে। কিন্তু নিদ্রায় ডুবিতে হইবে দিবসে। ভোর ১২ টার পূর্বে বিছানা ত্যাগ করা যাইবে না। দিবসে ঝিমাইলে Disqualify
১১/ পায়ে হাটিবার ক্ষমতা প্রচুর থাকিতে হইবে।
১২/ ভ্রমনে অধিক আগ্রহী হইতে হইবে। কমপক্ষে টানা ৭ দিন গাড়িতে চড়িলেও গোতর দূর্বল হইবে না। যদি কোন ভাদেম দূর্ঘটনাক্রমে চলন্ত গাড়িতে বমি করিয়া ফেলে তাহা হইলে বিভাস দন্ড বিধির ১৪১ ধারা মোতাবেক তাহার সদস্যপদ তিন মাসের জন্য বাতিল ঘোষিত হইবে।
১৩/ কমপক্ষে ২৪ ঘন্টা বিনা ভক্ষনে স্বাভাবিক কার্যক্ষম থাকিতে হইবে।
১৪/ খাওয়া দাওয়ার প্রতি তেমন আগ্রহ থাকিবে না এবং খাওয়ার নির্দিষ্ট কোন সময় থাকিবে না। প্রচন্ড ক্ষুধায় খাওয়া পরিত্যাগ করিতে হইবে। তখন চা পান করিয়া ক্ষুধা নষ্ট করিতে হইবে।(বলাবাহুল্য ভাদেমরা সর্বক্ষন চা পান করে)-
চা নাই না।
১৫/ গৃহের সকল কর্মের প্রতি যেমন মনোযোগ থাকিবে না ঠিক তামনি নিজের প্রতিও উদাসীন থাকিতে হইবে।
১৬/ ভাদেমরা হইবে সর্বক্ষেত্ত্রে সর্বদা SMART. সকল বিষয়ে উদাসীন থাকিলেও পোশাকে এবং চলাফেরায় হইবে রুচিশীল এবং পাশ্চাত্যের ভাবধারা সম্বোলিত। লুঙ্গী পরিধান করিয়া কোন অবস্থায় ঘর হইতে বাহির হওয়া যাইবে না। বাহিরে লুঙ্গী পরিয়া ধরা খাইলে বিভাস দন্ড বিধির ৪৮(খ) ধারা মোতাবেক সঙ্গে সঙ্গে লুঙ্গী খুলিয়া ফেলা হইবে।
১৭/ এলাকার সমস্ত অলিগলি সহ সকল রাস্তার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ্য সম্মন্ধে সম্যক ধারণা থাকিবে।
১৮/ উদ্যোগী হইতে হইবে। তবে এক্ষেত্রে একটি কাজ সম্পন্য হওয়ার পূর্বেই অন্য কাজের প্রতি বিপুল উদ্যোমে উদ্যোগী হইয়া পরিতে হইবে।
১৯/ রাগ, বিরক্তি, অপমানবোধ, হিংসা-বিদ্বেষ প্রভৃতি থাকিবে না।
২০/ চিন্তাশীল হইতে হইবে। কিন্তু যেখানে সেখানে চিন্তা করা চলিবে না। চিন্তা করিতে হইবে বাথরুমে বসিয়া। এইকারণে বাথরুমে যতটা সম্ভব অধিক সময় অতিবাহিত করিতে হইবে।
২১/ দুষ্ট হইতে হইবে তবে দুপুর (৪-৫) পর্যন্ত দুষ্টামি কার্যক্রম বন্ধ থাকিবে।
২২/ নিজেকে পুরোপুরি বুঝিতে দেওয়া যাইবে না। যতটা সম্ভব নিজেকে আড়াল করিয়া রাখিতে হইবে।
২৩/ লোভ থাকিবে না। এবং লোভী ব্যাক্তিকে সনাক্ত করিয়া সর্বদা তাহার ক্ষতি করিবার চেষ্টায় ব্রত থাকিতে হইবে।
২৪/ ক্ষমা একটি মহৎ গুন। কিন্তু ভাদেমরা ক্ষমাশীল হইবে না। অপরাধ করিলে কিছুতেই তাহাকে ক্ষমা করা যাইবে না। তবে সদস্যদের জন্য এ নিয়ম বিবেচনা সাপেক্ষ।
২৫/ দুঃসাহসী হইতে হইবে। কিন্তু সাহসের পরিচয় দেওয়া চলিবে না।
২৬/ সদস্য ব্যতীত অন্য কাউকে ঋন দেওয়া যাইবে না তবে যে কাহারো কাছ হইতে ঋন লওয়া যাইবে। ৮৭ ধারায় এ বিষয়ে বিস্তারিত নিয়ম লিপিবদ্ধ রহিয়াছে।
২৭/ ভাদেম কোন বিষয়ের প্রতি খুব বেশি আগ্রহী হইবে না এবং কোন কিছুতে বিচলিত হইবে না।
২৮। প্রেমের ব্যপারে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকিবে।নীতিমালার ব্যাপারে সদস্য ব্যতীত অন্য কাহারো সঙ্গে আলোচনা করা যাইবে না।
২৯/ ছ্যাকা খাওয়া ভাদেমকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হইবে। এবং বিশেষ পদ মর্যাদায় ভূষিত করা হইবে।(প্রমান সাপেক্ষে)
৩০/ ললনাদের প্রতি আকৃষ্ট থাকিবে। কিন্তু বুঝিতে দেওয়া যাইবে না।
৩১/ নিজ নিজ এলাকার ললনাদের পূর্ন রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব নিজ দায়িত্বেই লইতে হইবে। এবং প্রত্যেক রমনীর সংক্ষিপ্ত বৃত্তান্ত ঠোটের আগায় রাখিতে হইবে।
৩২/ উদার প্রকৃতির হইতে হইবে, তবে নিজের কিছু বিলিয়ে দিয়ে নয়।
৩৩/ অন্যের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করিতে হইবে। অর্থাৎ বাম হাত সর্বদা সক্রিয় থাকিবে।
৩৪/ জীবে দয়া থাকিতে হইবে।(জীবে দয়া করে যেইজন সেইজন ভাদেমজন)।বিশেষ করিয়া পাখিদের প্রতি অধিক দয়া দেখাইতে হইবে। কারণ ইহারা প্রকৃতির সৌন্দর্য বর্ধক। বিঃদ্র- কুকুর দেখিলে সদয় হোন।
৩৫/ খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ থাকা চলিবে না। তবে তাস, ক্যারাম প্রভৃতি সময় সাপেক্ষ বলিয়া খেলা যাইতে পারে।
৩৬/ নিজ জান মালের হাফাজত করিতে হইবে।
৩৭। প্রশাসনিক কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ চলিবে না।
৩৮/ সিগারেট ছাড়া অন্য কোন প্রকার নেশা জাতীয় দ্রব্যে আসক্ত হইবে না। যদি সদস্য থাকাকালিন কোন ভাদেম আসক্ত হয়, তবে বিভাস দন্ড বিধির ১৫৩ ধারা মোতাবেক সঙ্গে সঙ্গে তাহার সদস্যপদ বাতিল করিয়া মাদকাশক্ত নিরাময় কেন্দ্রে রাখিয়া আসা হইবে।
৩৯/ সিনেমা হলে যাওয়া চলিবে না। গেলেও সিনেমা দেখার উদ্দেশ্যে যাওয়া যাইবে না। যদি কোন ভাদেম সিনেমা দেখার উদ্দেশ্যে হলে যায়, তবে বিভাস দন্ড বিধির ১৭৭ ধারা মোতাবেক তাহাকে ৭ দিনের জন্য চা বহিষ্কৃত করা হইবে। অর্থাৎ ১ সপ্তাহ তাহাকে চা পান করিতে দেওয়া হইবে না।
৪০/ টিভি দেখা চলিবে না। দেখিলে এক সঙ্গে ৭ টি চ্যানেল মনোযোগ সহকারে দেখিতে হইবে এবং আলোচনা সভায় প্রত্যেক অনুষ্ঠানের বর্ননা করিতে হইবে। অন্যথায় বিভাস দন্ড বিধির ৬৩ থারা মোতাবেক ইভা রহমানের কোকিল কন্ঠে ১২ টা গান একটানা শুনিতে হইবে।
৪১/ সংস্কৃতিমনা হইতে হইবে। সকল ধাচের সংগীত শুনিতে হইবে। এবং তাহা গাওয়ার আপ্রান চেষ্টা করিতে হইবে। গুনগুন করিয়া সংগীত চলিবে না। সংগীত করিতে হইবে উচ্চস্বরে। কেহ গুনগুন করিয়া গাইলে তাহাকে বিভাস দন্ড বিধির ৯৮ ধরা মোতাবেক সভাপতির পায়ে সজোরে একখানা পি.এল (পাছায় লাত্থি) ভক্ষন করিতে হইবে।
৪২/ পকেটে প্রয়োজনের অধিক টাকা থাকিবে না। অন্যের দ্বারা(সদস্যের বাইরে) কি করিয়া চালানো যায় সেই বিদ্যা পুরোপুরি আয়ত্ব করিতে হইবে।
৪৩/ সকল শ্রেনীর মনুষ্যের সঙ্গে বাক বিনিময় এবং মিশার আধ্যাতিক ক্ষমতা থাকিবে।
৪৪/ কেহ চাপাবাজি করিলে তাহাকে চাপাবাজ হিসেবে সনাক্ত করিয়া তাহার সঙ্গে দ্বিগুন চাপাবাজি করার ক্ষমতা থাকিবে।
৪৫/ দুই বা ততোধিক ব্যাক্তির মধ্যে গিরিংগি লাগানোর বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী হইতে হইবে তবে নিজেকে কখনও চিপায়া পরিতে দেওয়া যাইবে না।
৪৬/ বিয়ের প্রতি পূর্ন আকর্ষন থাকিবে। তবে কোন ভাদেম বিবাহ করিতে চাইলে উচ্চ পদস্থ হইতে নিন্ম পদস্থ সকল ভাদেমের সম্মতিক্রমে কমপক্ষে ৩০ বছরের পরে করিতে পারিবে। এবং বিবাহিত ভাদেমের কোন অবস্থায়ি সন্ধ্যা ১২টার পর বাহিরে থাকা চলিবে না। সন্ধ্যা ১২টার পর কোন বিবাহিত ভাদেমকে দেখা মাত্রই বিভাস দন্ড বিধির ৩৪৪ ধারা মোতাবেক ১ জগ গরম স্যালাইন খাওয়ানো হইবে।
৪৭/ যৌতুক লওয়া যাইবে না। তবে যতটা সম্ভব শশুর বাড়িতে পড়িয়া থাকিতে হইবে। আবার স্থায়ীভাবেও থাকা যাইবে না। অর্থাৎ লোকে যাতে ঘরজামাই বলিয়া সম্মান করিতে না পারে সেই দিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখিতে হইবে।
৪৮(ক)সকল ভাদেমের সম্মতি ব্যতীত নতুন ভাদেমকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা যাইবে না বা ভাদেম বলিয়া উক্ত ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করা যাইবে না।
(খ) যদি কোন প্রতারক নিজেকে ভাদেম বলিয়া দাবী করে তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অবস্থা অনু্যায়ী কঠোর ব্যবস্থা লওয়া হইবে।
৪৯/ ভাদেমরা শাস্তি স্বরুপ নিত্য নতুন চটুল এবং চমকপ্রদ পদ্ধতির উদ্ভাবক। তাই ভাদেম হইতে হইলে কোন ব্যক্তিকে অবশ্যই ব্যতিক্রমী জ্ঞান ও প্রজ্ঞার অধিকারী হইতে হইবে।
৫০/ সহজে অনুধাবন যোগ্য কোন বিষয় লইয়া ভাদেমরা কখনো আলোচনা করিবে না।
৫১/ ভাদেমের মহাত্ব ছড়াইয়া দিবার জন্যে প্রয়োজনে তাহারা বহির্বিশ্বে গমন করিবে।

উপরিউক্ত যোগ্যতা সম্পন্য আগ্রহি ভাদেমকে আমাদের সঙ্গে যোগদান করিবার বিশেষ আহ্ববান জানানো যাইতেছে।


শপথঃ- আমি শপথ করিতেছি যে, আমি উপরিউক্ত সকল নীতিমালা মানিয়া লইয়া স্বজ্ঞানে এবং সুস্থ্য মস্তিস্কে ভাদেম সংগঠনে যোগদান করিলাম। এবং উপরিউক্ত নীতি বহির্ভূত কোন কাজ করিলে প্রশাসন কর্তৃক যেকোন শাস্তি কল্লা পাতিয়া লইবো! আমিন!!

বিভাস আপনাদেরই সংগঠন। আসুন দলে দলে যোগ দিন এবং সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করে তুলুন।

বিশেষ সহযোগিতায়ঃ-
এককড়ি

সদস্যবৃন্দঃ-

হা...হা...হা...

বিপদতাড়িনী