somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ট্রেন ভ্রমন

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোট বেলায় আমার শব্দ করে পড়ার অভ্যাস ছিল।এই যেমন আশপাশের লোকজনকে শুনিয়ে জোরে জোরে ‘ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী’, ‘ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী’, ‘ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী’, ‘ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী’এভাবে বেশ কয়েকবার পড়া।এতে আমার পড়ার বারোটা বাজলেও আমার প্রতিবেশীদের জানতে বাকী থাকতো না যে আমি পড়াশোনা করছি,আর আমার পিতা মশাই আপ্লুত হতেন ছেলে পড়াশুনা করছে।এর ফলে আর যাই হোক পরীক্ষার হলে একটা লাইন একবার মনে করতে পারলেই হলো, পুরো প্যরাগ্রাফটা লেখা কমপ্লিট।যাকে বলে ঠোটস্থ।সেখানেউ একটু কৌশলের আশ্রয় নিতাম তা হলো প্রতি প্যারাগ্রাফের প্রথম লাইনটা মনে রাখার চেষ্টা করতাম।তাই ছোট বেলায় ট্রেন ভ্রমনে কি শিখেছি সেটা মনে না থাকলেও এটা মনে আছে যে রচনা টি তিনটি অংশে ভাগ ছিল।ভূমিকা, মূল বরনণা এবং উপসংহার। আজ যাই হোক ছোট বেলায় আপনার শেখা রচনার সাথে আমারটা মিলে গেলে আমার কিছু করার নেই, যদিও ছোট বেলার রচনার কিছুই আর মনে নেই।আজকের ট্রেন ভ্রমন বেইজিং-নানজিং-বেইজিং।


নানজিং শহর বেইজিং থেকে ১২০০ কিঃমিঃ দূরে।আমাদের পরিকল্পনা ছিল অক্টোবরের ১ থেকে ৭ তারিখের মধ্যে নানজিং-যাবো কারন চীনে প্রতিবছর ১লা অক্টোবর থেকে ৭ই অক্টোবর বিজয় দিবসের ছুটি থাকে।বিজয় দিবসের ছুটিতে চীনে আমাদের দেশের ঈদের ছুটির মতো অবস্থা থাকে।আগে থেকে টিকেট কেটে না রাখলে যাতায়াত করা খুবই মুশকিল। তাই আমাদের যা্ত্রা ৯ই অক্টোবর রাতের ট্রেনে ।১২০০ কিঃমিঃ পথের ট্রেন জা্রনি,সেই এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা,অন্য রকম অনুভূতি।১২০০ কিঃমিঃ হলেও আমাদের সময় মাত্র সাড়ে ১০ ঘন্টা,রাত ৯.৪৫ থেকে সকাল ৮.২০।যদিও হাই স্পীরড ট্রেনে সময় লাগতো ৩-৪ ঘন্টা আমরা ট্রেন ভ্রমন টাকে উপভোগ করবো বলেই এই ট্রেনে যাত্রা।

আমাদের ট্রেনে ছাড়ার সময় রাত ৯.৪৫ টায় হলেও আমরা ৮টার কিছু পরে আমরা ট্রেন স্টেশনে এসে পৌছেছিলাম।ট্রেন স্টেশনে ঢুকার পূরবেই বিশাল ফাকা জায়গা, না এটা কমলাপূর রেল স্টেশনের মতো পারকিং লট না। শুধুই ফাকা জায়গা।তাই ফটো সেশন চলল কিছু সময়।৮.৩০ ট্রেন স্টেশনে ঢুকার সিদ্ধান্ত নিলাম যদিও আরও কিছু সময় বাইরে থাকার ইচ্ছাছিল।কারন একবার ঢুকলে বের হওয়ার উপায় নাই(থাকলেও আমরা জানি না)।আবার চীনে এটা আমাদের প্রথম ট্রেন ভ্রমন হওয়ায় একটু আগে ভাগেই ঢুকার সিদ্ধান্ত নিলাম। ট্রেন স্টেশনে ঢুকতে গিয়েই দেখি বিশাল লাইন। বিশাল লাইন থাকলেও ৫ মিনিটেই আমাদের সিরিয়াল চলে আসলো।যেহেতু আমরা বিদেশী তাই টিকিট চেকার পাসপোট চাইলো । একটা গুন ভালো এই চাইনিজ জাতির নিজেরা ইংরেজি না পারলেও গুরুত্ব পূরন জায়গাগুলোতে যারা ইংরেজী পারে তাদের বসায়।যার ফলে আমাদের কোন অসুবিধা ছাড়া স্টেশনে ভিতরে ঢুকে পড়লাম।ঢুকেই যেন মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।আমাদের দেশের ট্রেন স্টেশনে সাথে কোন মিল খুজে পাচ্ছি তো নয়ই ট্রেনের কোন ছাপই খুজে পাচ্ছি না।আশেপাশে দেখে যেটা বুঝতে পারলাম উপরে উঠতে হবে।যাইহোক এলিভেটর দিয়ে সহজেই উপরে উঠে গেলাম।উঠার সময় মনে মনে চিন্তা করছিলাম ট্রেন তো মাটির উপর দিয়ে চলবে তবে আমাদের তিনতলার সমান দুতলায় উঠে লাভটা কি?উপরে উঠেই বুঝতে পারলাম ঠিক জায়গায় চলে এসেছি।কারন বিভিন্ন প্রবেশ পথে প্লাটফরমের নাম্বার ঝুলছে।আমি আমাদের টিকিটটা একজন দিক নিরদেকশককে দেখালাম (টিকেটে ইংরেজীর কোন বালাই নাই)।সে আামাদের প্লাটফরমের নাম্বার ৫, লাইন ১২ বগি১০ সিট নম্বর ৫ও৬ এর A টিকিট দেখিয়ে বুঝিয়ে দিল।যাক বাবা চাইনিজ নাবুঝতে পারলে আমাদের যাজানা দরকার তা টিকেট থেকে বুঝতে পারি।আমরা আমাদের টিকেটে উল্লেখিত ৫ নং প্লাটফরমে প্রবেশ করতে দেখি ওয়েটিং রুম। দাড়ান! দাড়ান!এটা বাংলাদেশের ১০/২০ জনের বসার ওয়েটিং রুম না ।এখানে বসার ক্যাপাসিটি ২৫০/৩০০ জন হবে (গুনে দেখা হয় নাই)। ওয়েটিং রুমা ঢোকা মাত্রই একজন সেবা প্রদানকারী এগিয়ে আসলেন (বিদেশী বলেই কিনা)।এসে টিকেট দেখলেন এবং ওয়াকি টকিতে কিছু বললেন ব্যাস ২/৩ মিনিট ,আরেকজন সেবা প্রদানকারী আসলেন এবং বললেন “ফলো মি”।আবার চেক।এতো মনে হচ্ছে এয়ারপোট চলে এসেছি।আবার চলতে শুরু করা।দল বেধে চলা।এখানে আগে থেকে ট্রেনে উঠার সুযোগ নেই।সবাই কে একসাথেই উঠতে হবে(ট্রন ছাড়ার ১ঘন্টা আগে কারযক্রম শুরু করে)।কিছুদুর গিয়ে ঠিক যে জায়গায় ট্রেন দাড়িয়ে আছে ঠিক সেই জায়গায় সিড়ি খোলা পেয়ে নেমে গেলাম।এবার বুঝতে পারলাম আমাদের তিনতলার সমান দুতলায় উঠানোর মাজেজা কারন আর কিছুই না কেউ যেন অন্য লাইনে গিয়ে বিশৃংখলা ৈতরি করতে না পারে।যাই হোক প্রতি বগীর সামনে আমাদের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য দাড়িয়ে আছে সেই বগীর সেবা প্রদানকারী।আমাদের টিকেট চেক করে ভিতরে প্রবেশ করলাম।


বিঃঃদ্রঃচলবে
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×