somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় - সমস্যার শুরু না শেষ?

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবীতে শাহবাগে জড়ো হওয়া, দেশপ্রেমে উজ্জীবিত সকল বয়সের, সকল মতের, সকল শ্রেনীর মানুষের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিতে অম্লান হয়ে এক হয়ে যাওয়া বাংলাদেশীদের দেশমাতার প্রতি আবেগের জায়গাটিকেই স্মরণ করিয়ে দেয়। এ আবেগের কাছে যুক্তির স্হান তুচ্ছ, বোধন পরাজিত। মু্ক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার, গৌরবের আরেক নাম। কিন্তু সমাজের সবাই যদি আবেগের বলী হন তবে সে সমাজের স্হায়িত্ব নষ্ট হয়ে যায়।

রাজনীতি হচ্ছে জনগনের আবেগের সাথে এক ধরনের খেলা। আর যে দেশের মানুষের মাঝে আবেগের পরিমান বেশী থাকে সেখানে এই খেলায় আবেগ দ্রুত উঠা নামা করে। আর তাই সেখানে এই খেলা অনেক ঝুকি পূর্ণ হয়ে উঠে। বাংলাদেশের মানুষের আবেগের কারণেই এখানে রাজনীতির খেলা অনেক বেশী ঝুকিপূর্ন। এই আবেগের কারণেই এখানে পারিবারিক রাজনীতির উৎথান সার্কভূক্ত অন্যদেশ গুলোর মতোই প্রবল।

এবার আসল কথায় আশা যাক। যুদ্ধাপরাধ তথা মানবতাবিরোধি অপরাধের বিচার আমাদের প্রাণের দাবী। কিন্তু কিছু মানুষের ব্যার্থতার কারনে গত চার বছরেও এই বিচারটিকে শেষ করা গেলনা। আবার এখন তড়িঘড়ি করে এর কিছু বিচার শেষ করার একটা চেষ্টা দেখা যাচ্ছে। যার উদ্দ্যেশ্যই হচ্ছে আমাদের আবেগকে পুঁজি করে নির্বাচনের বৈতরনী পার হওয়া।

কিন্তু যে বিচারটিকে আমরা এতদিন টেনে আনলাম তার প্রক্রিয়াগুলো যথাযথভাবে শেষ না করলে এর কুফল দীর্ঘদিন বহন করতে হবে। যারা সাজা পাবে, তারা সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে হয়ে যাবে জাতীয় বীর - যা সহ্য করার থেকে আত্নহত্যা করাই শ্রেয়।

কাদের মোল্লার মামলার ক্ষেত্রে যে কয়েকটি আইনি বিতর্ক উঠেছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে রিভিউ করা যাবে কিনা। লিখার কলেবর না বাড়িয়ে সরকারকে বলছি রিভিউয়ের সুযোগ দিন (যদিও তা হবে আদালতের মাধ্যমে)। দ্বিতীয়ত নিম্নের লিখাটির উত্তর খোঁজা উচিত সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলেরঃ

" একটি ঘটনায় একমাত্র মহিলা সাক্ষীর জবানবন্দির ভিত্তিতে ফাঁসির দণ্ড ন্যায়বিচার কতটা নিশ্চিত করবে—সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যে ঘটনায় আবদুল কাদের মোল্লার দণ্ড বাড়িয়ে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়েছে, সে ঘটনায় সাক্ষী মাত্র একজন। ঘটনার সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৩ বছর। ওই মহিলার একটি জবানবন্দি ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে রয়েছে। সেই জবানবন্দিতে জড়িতদের মধ্যে আবদুল কাদের মোল্লার নাম নেই। আবার মামলার তদন্তকারীর কাছে দেয়া জবানবন্দিতেও আবদুল কাদের মোল্লাকে সরাসরি দেখেছেন—এমনটা উল্লেখ নেই। সাক্ষীর সময় তিনি বলেছেন আবদুল কাদের মোল্লাকে দেখেছেন। ঘটনার সময় অপ্রাপ্ত বয়স্ক একমাত্র সাক্ষীর ভিত্তিতে ন্যায়বিচারের মানদণ্ডে চূড়ান্ত শাস্তি কতটা গ্রহণযোগ্য—সেই প্রশ্ন এরই মধ্যে উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়।"
সুত্র: Click This Link

আমার প্রশ্নঃ এই মামলায় কি আর এর থেকে কোন ভাল উপাদান ছিলনা যেখানে তাকে ফাঁসি দেয়া যেত কোন প্রশ্ন উৎথাপনের সুযোগ না দিয়ে? যাদের অমনোযোগিতায়, যেনতেন ভাবে বিচার শেষ করার সুযোগে আজ রাজাকারের দোষরেরা এই প্রশ্ন উৎথাপনের সুযোগ পাচ্ছে তাদেরকে এর জবাব দিতেই হবে।

সবশেষে বলতে চাই, কাদেরের ফাঁসির দাবী যেমন বাংলাদেশের রাজনীতিকে পরিবর্তন করে দিয়েছে, সরকারের জনপ্রিয়তার স্হানে আঘাত করেছে, আঘাত করেছে আমাদের সামাজিক এবং রাজনৈতিক চরিত্রে। তার ফাঁসির বাস্তবায়ন সম্ভবত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের চরিত্র বদলে দিতে পারে। তবে আমাদেরকে আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে এই জন্যে যে তা রাষ্ট্রের চরিত্র কত গভীর ভাবে বদলায় তা দেখার জন্যে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৫:০০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×