somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফোনালাপের রাজনীতি - কার ফাঁদে কে পা দিয়েছে?

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের গত কয়েকদিনের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন এবং গতকালের টেলিফোন আলাপের পর নির্বাচনের যে সম্ভাবনাটুকু ছিল তাও শেষ হয়ে গেছে। বর্তমান অবস্হা অনুসারে চলতে থাকলে সম্ভবত ২০১৫ সালের আগে দেশে কোন নির্বাচন হবেনা। বর্তমানে যারা রাজনৈতিক কর্মী, সবাই কিছুটা দ্বিধা দ্বন্ধে আছেন - কি আওয়ামীলীগ কি বিএনপি। তারা ভাবছেন - নেত্রী কি ভূল করলেন টিলিফোন করে, বা নেত্রী কি দাওয়াত কবুল এবং হরতাল চালিয়ে গিয়ে কি ভূল করলেন? কি হবে বা কি হতে পারে সামনে? আসুন আজ আমরা বিষয়টি একটু বিশ্লেষণ করি।

সবাই যা জানেন - বাংলাদেশের রাজনীতি কঠিন কাল পার করছে। কিন্তু কতটা কঠিন? আমি হতাশাবাদী নই, তবে আবারও বলছি রাজনীতির নাটাই এখন আর দুই দলের হাতে নেই। আর সামনে যে ফলাফল আসছে তা অধিকাংশের কল্পনারও বাহিরে। আসুন প্রথমে ফোনালাপের রাজনীতি নিয়ে কথা বলি।

এক সপ্তাহ আগ থেকে ঘোষণা দিয়ে আলটিমেটামের শেষ মিনিটে টেলিফোন - কেন এই সময় নেয়া? এর একটাই কারণ সমাযোতার মুলো ঝুলিয়ে বিএনপিকে আন্দোলনের মাঠ থেকে সরিয়ে নেয়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিা তাঁর সরকারের শেষ সপ্তাহটিতে খুবই ভাল খেলেছেন - ভাল বলছি এই কারণে যে বিএনপি ছিল কিছুটা দিশেহারা, এমনকি কি করবে শেষ মুহুর্তেও বুঝতে পারছিলনা। ফোনলাপের এটা যে নিছক রাজনীতি তা বিএনপি ভাল করে বুঝলেও কিভাবে সামাল দিবে তা বুঝে উঠতে পারছিলনা। আওয়ামীলীগ প্রধান খুব হিসেব নিকেশ করেই শেষ মুহুর্তে এই ফোনটি করেন যাতে খালেদা জিয়া কোন অবস্হাতেই আলোচানার টেবিলে বসার মত অবস্হায় না থাকেন। বাস্তবেও ঘটেছেও তাই।

খালেদা জিয়াকে এখন নতুন চ্যালেন্জের মুখে পড়তে হবে। যা খালেদা বা তার নেতারা কেউই অনুমান করতে পারেনি। বিএনপি বলে আসছিল ২৭ তারিখের পর এই সরকার অবৈধ। এখন এই অবৈধ সরকারের সাথে সরকার প্রধানের সরাকরী বাসভবনে আলোচনায় বসতে রাজী হওয়া এক ধরনের রাজনৈতিক পরাজয়। টেলিফোন আলোচানায় যদি খালেদা বিষয়টি আনতেন তাহলে তিনি যতটুকু সুবিধা পেতেন, এখন সে সুযোগ হারালেন। সংবিধান অনুসারে আজ থেকে নির্বাচনকালীন সরকারের যাত্রা শুরু হয়ে গেছে। এবং এই সরকারের প্রধান হচ্ছেন শেখ হাসিনা। কিন্তু এখনও বিএনপির অবস্হা না ঘরকা না ঘাটকা।

তবে খালেদ জিয়া হরতাল চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়ে সরকারকে চাপে রাখার যে কৌশল নিয়েছেন তা আরও স্পষ্ট হওয়ার দরকার ছিল। অস্পষ্ট অবস্হান নিয়ে বা গোজামিল দিয়ে বিএনপি কখনই তাদের দাবী আদায় করতে পারবেনা। এ ক্ষেত্রে বলেতে চাই আওয়ামীলীগ বিএনপির জন্য যে ফাঁদ পেতেছিল তাতে তারা কিছুটা হলেও সফল।

তবে বিএনপি জোট হরতাল প্রত্যাহার করলে আওয়ামীলীগের সফলতার ষোলকলা পূর্ণ হতো। হরতাল প্রত্যাহার না করে বিএনপি তার রাজনৈতিক কৌশলের রাস্তা কিছুটা হলেও খোলা রাখতে পেরেছে।

শুরুতেই বলেছি ২০১৫ সালের আগে নির্বাচনের সম্ভাবনা নেই। এই কথাটি বলার জন্যে খুব বেশি রাজনৈতিক বিশ্লেষক হওয়ার প্রয়োজন নেই। রাজনীতির নাটাই যেহেতু নেত্রীদ্বয়ের হাতে নেই, তাই এর সমাধানও তাদের হাতে এখন আর নেই। এই নাটাই ছুটে গেছে আরও ২ বছর আগে।

ড্যান মজিনার ভারত সফর ব্যার্থ হওয়া এবং তার চীন সফরের আগ্রহ অবশ্যই নতুন রাজনীতির ইংগিত। তার এই সফর যে ব্যার্থ হবে তা আগেই অনুমান করা গিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের কারণে ভারত - আমেরিকার সম্পর্ক শেষ হয়ে যাবে এটা ভাবার কোনও কারণ নেই। যেহেতু মজিনা ভারতে ব্যার্থ হয়েছেন তাই আমরা অনুমান করতে পারি একটি রক্তাত্ব ঘটনাই আমাদের এই সমস্যার সমাধান করবে। আর সেই রক্তাত্ব ঘটনায় সম্ভবত কিছু শীর্ষ নেতৃত্বের প্রাণহানির মাধ্যমে বাংলাদেশের নতুন যাত্রা শুরু হতে পারে। আওয়ামীলীগ প্রধান শেখ হাসিনা বুঝতে পারছেন না তিনি কিসের উপর দাড়িয়ে আছেন, যখন বুঝতে পারবেন (সম্ভবতঃ খুব সহসাই বুঝবেন) তখন তার কিছুই করার থাকবেনা, যেমন ছিলনা বংগবন্ধুর।

বাংলাদেশের রাজনীতি বাংলাদেশেই ফিরে আসুক এই প্রত্যাশায় ...।

এ বিষয়ের আগের লিখা: Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:০৯
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিজয় দিবসের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে, প্রতিবাদ ও ঘৃণা জানিয়ে । সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান ২০২৫, ১৬ই ডিসেম্বর।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৯




দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে ত্রিশ লক্ষ তাজা প্রানের এক সাগর রক্তের বিনিময়। দুই লক্ষাধিক মা বোনের সম্ভ্রম হারানো। লক্ষ শিশুর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত‍্যু। এক কোটি মানুষের বাস্তুহারা জিবন। লক্ষ কোটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×