আধা ঘন্টা ধরে রেডী হয়ে বসে আছি তোমার আর কতক্ষন লাগবে
রেডী হয়ে বসে আছি মানে কি ? তোমাকেত আমিই রেডী করে দিলাম। ইনটা এখনও ঠিক করে করতে পারনা, টাইটা বাঁধতে পারনা। তোমার ইন ঠিক করে দিয়ে , টাই বেঁধে দিয়ে আমি রেডী হতে বসলামতো মাত্র পাঁচ মিনিট হল।
এভাবে হা করে তাকিয়ে থাকবানা, যাও টিভি দেখ, আমি রেডী হয়ে আসছি।
এখনও হয়নি, তোমরা মেয়েরা একটা আজব জিনিস, এক ঘন্টার এক অনুষ্ঠানের জন্য সাজতে তিন ঘন্টা লাগাতেও তোমাদের গায়ে লাগেনা ।
(কিছুটা জোরে) তুমি এভাবে রাখালের মত দাঁড়িয়ে আছ কেন। তোমাকে বলছিনা টিভি দেখ।
আমি রাখাল !!!
তো কি ! তেমন ভাবেই তো দাঁড়াইয়া আছ।
আরও কত কি বলবা, রাখাল- ড্রাইভার । আমাকে রেডী করতে গিয়ে তোমার দেরী। আমাকে রেডী করছ কারন ড্রাইভার টাকে যাতে একটু সুন্দর লাগে এই জন্যইত- তাইনা!!
হাতে মাশকারা না আই লাইনার কি যেন ছিল সেটা ড্রেসিং টেবিলের উপর ছুরে দিয়ে - চল, আমার আর রেডী হওয়া লাগবেনা।
এই বস বস। আরে কানের দুল আরেকটা পড়নাইত এখনও । দাঁড়াও আমি লাগিয়ে দিচ্ছি।
তুমি যাবার জন্য এত তাড়াহুড়ো করছ- কাহিনী কি।
আরে তোমার বান্ধবীর ম্যারেজ ডে, দেরী করে গেলে হবে নাকি।
কি ব্যাপার অন্য দিন গাড়িতে বসলে কত কথা বল, আজকে এমন মুখ গোমড়া করে আছ কেন।
চুপ করে থাক। দেখি রেডীও টা ছাড় । ওফ আল্লাহ কি অভিশাপে যে এই মোটা বাঁশের মত গলার প্যানপ্যান আমারে শুনতে হচ্ছে।
দেব নাকি !!
কি !
সামনে ট্রাক টার নিচে গাড়ির ডান পাশটা ঢুকিয়ে দিই ।তাহলে তোমাকে আর কখনো মোটা বাঁশের গলার প্যানপ্যান শুনতে হবেনা।
আল্লাগো (সাথে নাকি কান্না ) তুমি দয়া করে থাম।
টিস্যু টা নাও। এত কষ্ট করে সাজলে, সবতো নষ্ট হয়ে যাবে।
চুপ কর !!
গাড়িটা পার্ক করলাম। ম্যাডাম দেখি নামছেননা। দরজা খুলে নামাতে হবে।
ম্যাডাম নামুন।
ম্যাডাম নেমে আসলেন। মুখে কোন আঁধার নেই। আলো ঝলমল করছে। কাছে এসে ডান হাত দিয়ে আমার বাম হাতটা ধরলেন। আরেক হাতে ভ্যানিটি ব্যাগ।
তোমার মুখের দুই পাশে দেখি দুইটা পূর্ণিমার চাঁদ ঝলমল করছে।
চুপ কর। তোমারে বলছিনা কোন কথা বলবানা। ভিতরে গিয়েও চুপচাপ থাকবা।
আচ্ছা এক কাজ করি- আমি ভিতরে নাই যাই ।এখানে গাড়ি পাহারা দেই।
কথা কম- হাঁট।
এই আপু কেমন আছ (বান্ধবীর ছোট ভাই)। ভাইয়া কেমন আছেন।
আরে তুইত অনেক বড় হয়ে গেছিস। ওরা কই।
ভিতরে আছে। তোমরা যাও।
আমি একটা হাসি দিলাম।
তুমি ওর সাথে কোন কথা বললানা কেন।
তুমিইত বলছ- কোন কথা না বলতে, তাই শুধু একটা হাসি দিলাম।
তুমি আসলেই একটা রাখাল !!
দোস্ত হ্যাপী ম্যারেজ ডে। তোদের কে জটিল লাগছে।
ভদ্রতা বসত আমিও বললাম- হ্যাপী ম্যারেজ ডে।
ম্যাডাম আমার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিলেন।
যাক ঠিক কথাই বলেছি মনে হয়। হ্যাপী ম্যারেজ ডেতে হ্যাপী বার্থ ডে বলে একটা টেষ্ট করা যাইত পরবর্তী পরিস্হিতি কি হয়। অবশ্য ওটা সামলানো তখন আর আমার আয়ত্বে থাকত বলে মনে হয়না। বেশী রিস্ক নিয়া কাজ নাই।
(বান্ধবী ) এই তোর শাড়ীটা না অসম্ভব সুন্দর হইছে। তোরে দারূন লাগতেছে।
এটা ও পছন্দ করে কিনছে। আমারও অসম্ভব পছন্দ হইছে।
ভাই আপনিত ভাল শাড়ি চিনেন দেখছি। ওকে নিয়া শাড়ির দোকানে গেলেত ও চোখ খোলা রেখে ঘুমাই।
হাসি দিয়া মনে মনে ভাবি- আমিও তাই করি , এই শাড়ি কিনার সময় আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল- কালারটা সুন্দরনা, আরও এক ঘন্টা বসে থাকার চেয়ে যদি হ্যাঁ বলে মুক্তি মেলে তাই আমি সম্মতি দিয়েছিলাম।
আড়চোখে একবার দেখে নিলাম, বেশ ভালইত লাগছে দেখি।
রাত্রী সাড়ে এগারটা।
থমথমে বেডরূম। ইজি চেয়ারে হেলান দিয়ে ম্যাডাম গান শুনছেন- আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান, তাও আবার লুপে ফেলে ।
আমি আলমিরা থেকে ক্যামেরাটা নিয়ে রুম থেকে বের হচ্ছি।
এত রাতে ক্যামেরা নিয়ে কই যাও।
ছাদে যাচ্ছি, চাঁদের ছবি তুলব।
কেন !! দুইটা চাঁদ না আমার দুই গালে আলো ছড়াচ্ছে ।
ছড়াচ্ছিল , কিন্তু এখনতো ঐ খানে শতাব্দীর শেষ পূর্ণ চন্দ্রগ্রহন , তাই ছাদে গিয়ে দেখি কি অবস্হা।
এই একটু এদিকে আস।
কেন কি হইছে।
আরে আসনা।
ম্যাডাম ডাইনিং রুমে ঢোকার সাথে সাথেই ফোম স্প্রে দিয়ে তাকে পুরা ঢেকে দিলাম।
কি, কি, এসব কি হচ্ছে।
ম্যাডাম চোখ মুখ থেকে ফোম সরাচ্ছেন।
HappY Birth Day To u Dear .....
(টেবিলে একটা চকলেট কেক আর মোম জ্বলছে.....)
আমাকে জড়িয়ে ধরে...তুমি না একটা, বলতে বলতে ম্যাডাম এর চোখ জলে ভিজে গেল.।
আমি আর কি, আমিত একটা রাখাল।
চুপ কর, তুমি কোন কথা বলবানা।
--------------------------------------------------------------
-------------------------------------------------------------
দিল্লিকা লাড্ডু খাইতে মন চায়, বিবাহিতরা কি বলেন !!

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




