সমাজতন্ত্রীরা বলে, সমাজতন্ত্র তুলসিপাতার ধোয়া পানি। তাদের সিস্টেমে কোনো সমস্যা নাই, তারা সাম্রাজ্যবাদ সমর্থন করে না, বাক স্বাধীনতার পক্ষে, প্রগতিশীল। সত্যি কি তাই? তাদের তত্ত্ব ইতিহাস অন্য কিছু বলে!
প্রথমে আসি তাদের সবচেয়ে বড় চিল্লাচিল্লির বিষয় নিয়ে। সাম্রাজ্যবাদ! তারা নাকি সাম্রাজ্যবাদি না। তারা নাকি সাম্রাজ্যবাদি না? কে বলল? সমাজতন্ত্রীরা? তারা বলবেই। সোভিয়েত রাশিয়ার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী... আগ্রাসন, ইউক্রেন, কাজাখ, বেলারুশ, বাল্টিক রাষ্ট্র দখল করে সোভিয়েতের অন্তর্ভুক্তি, মাঞ্চুরিয়া জাপানের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে চিনকে দিয়ে দেয়া। মাঞ্চুরিয়া জাপানের হাতে আসার অনেক আগে থেকেই স্বাধীন সত্তা বজায় রেখেছিল। চীনের কথায় আসি। চীন দখল করল উইঘুর অঞ্চল, মঙ্গোলিয়া থেকে ইনার মঙ্গোলিয়া, লাওসের কাছে থেকে কয়েকটা জেলা, ভারত থেকে অরুনাচল আর লাদাখের অংশ, সম্পূর্ণ তিব্বত।
পূর্ব ইউরোপকে সোভিয়েতরা নিজের মতো করে রেখেছিল। কোনো সামান্য বিদ্রোহ করলে কঠোর হাতে দমন করত। হাঙ্গেরি, রোমানিয়াতে দেখা আছে। নিজের অর্থনীতি আর সমাজতন্ত্রী নীতি চাপিয়ে দিয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধত্তর পূর্ব ইউরোপে। চীনারা খেমার রুজের শাসনকে বৈধতা দিয়েছিল, ভিয়েতনাম তাতে বাধা দিলে ভিয়েতনামে আগ্রাসন চালায় চীন।
তাদের নাকি বাক স্বাধীনতা আছে। কেমন বাক স্বাধীনতা আমি জানি না। টিভি চ্যানেল পত্রিকা হবে রাস্ট্রের অধিনে। রাষ্ট্র যেমন চাইবে তেমন অনুষ্ঠান খবর প্রচারিত হবে। মানুষ মুখ খুলে কথা বলতে চাইলেই জেলে ভরবে। যেমনটা স্ট্যালিন করেছিল। বিক্ষোভ করলে বুকে ট্যাঙ্ক তুলে দিবে, যেমনটা করেছে চীন তিয়েনআনমেন স্কোয়ারে। রাশিয়া হাঙ্গেরী আর পোল্যান্ডে। অন্যদেশের সাথে বানিজ্য করছে চীন পুজিবাদি স্টাইলে। নাম সমাজতন্ত্র, জনতার টাকা জনতাকে না দিয়ে বিশাল বিশাল সাম্রিক বাহিনি পালছে দেশগুলা। কেমন উন্নতি হয়েছে সমাজতন্ত্রের দেশগুলোতে। পরে তো ঠিকি মুক্ত বাজার অর্থনীতিরে ফিরে আসছে। নাকি? ফিরে এসেছে, আর বিশ্ব ব্যবস্থায় দাঁড়াতে পারল না।
আসি তাদের নির্বাচন পদ্ধতিতে। এক পার্টি। পার্টিতে ক্রিশক/শ্রমিক থাকবে শুধু। তারাই নির্বাচন করবে তাদের প্রেসিডেন্ট। মধ্যবিত্ত আর শিক্ষিত সমাজ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তাহলে ওই রাজনৈতিক বুদ্ধিহীন মানুষগুলোকে মাথা ওয়াশ করে নিজের মতো মানুষকে খমতায় বসিয়ে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করে নেয়া যায়। তাই না? দুর্নীতি হয় সমাজতান্ত্রিক আর ইসলামিক মূর্খ দেশগুলোতেই পাল্লা দিয়ে।
মানুষের নাকি সব ক্ষমতা থাকে। ক্ষমতা থাকে এক নায়কদের হাতে। কোরিয়া, চীন, সোভিয়েত ইউনিয়নে দেখলাম। দেখলাম সিরিয়া আর লিবিয়াতেও। গনহত্যা আর ক্ষমতা নিয়ে দ্বন্দ্ব কম দেখলাম না। এখন সমাজতন্ত্রীরা মডারেট মুসলিমদের মতো বলবে, আপনি ভুল করছেন, অইটা আসল সমাজতন্ত্র না। আমাদের হাতে ক্ষমতা দেন, আমরা বোঝাব আসল সমাজতন্ত্র কি!
এখন দেশে কিছু চিনা সমাজতন্ত্রী জন্ম নিয়েছে। মাওবাদী টাইপের। এরা কিছু হইলেই ভারত আর মার্কিন পশ্চিমের পিছে লেগে থাকে। সব খারাপ তারা করে। ওই দুই দেশ নাকি বাংলাদেশের পুটু মারা নিয়ে ব্যস্ত। সব সাম্রাজ্যবাদিদের চক্রান্ত। আমি বলব সেই মাওবাদিদের, আপনাদের মাও কম যায় নাই। সাম্রাজ্যবাদ কাকে বলে কত প্রকার দেখায় গেছেন তিব্বত, অরুনাচলে। বি এস এফ এর আগ্রাসনের কথা অনেকে বলে তাদের মধ্যে। পাকিস্তানিদের গনহত্যার সাথে তুলনা করে ফেলে। হিজবুতদের সাথে এক সুরে চিল্লায়। আমি বলি বিএসেফ একটা সীমান্তের পুলিশ বাহিনি, তারা একটা গুলি করলে জবাব দিতে হয়, প্রতি হত্যার জন্য সাস্পেনশন আসে। এক গরুচোরাকারবারিকে পিটানোর পর সেটা সবার আগে ফাঁস হয় ভারতীয় মিডিয়ায়। বাংলাদেশি মিডিয়াতে না। তারপর ৫ বিএসএর সদস্যকে সাসপেন্ড করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের বাম আর হিজুদের কল্যানে সেটা শুধুই হত্যা আর পিটানো পর্যন্তই থাকে। বাকিটুকু মানুষের কানে আসলে জাত চলে যাবে। সেই ভারতে চিনা মাওবাদিরা ক্ষমতায় আসার জন্য সসস্ত্র সংগ্রাম করছে, পারছে না। ভারতে তারা ক্ষমতায় আসলে সীমান্ত হত্যাকে বলত বামেরা চোরা কারবারি নির্মূল। আর সেই ভারতে মুসলিমদের সংখ্যা বেশি হলে মুসলিমরাও একই কথা বলত। একে বলে হিপোক্রেসি। আর আনু মোহাম্মদের মতো মানুষকেও দেখেছি। ফেম স্লাট হবার ইচ্ছা সবার থাকে। তারও আছে। সব কিছুর বিরোধিতা তিনি যেভাবে করেন, আর তাকেও গালি না দিয়ে পারি না। তার এসবের পিছে আরেকটা কারন তার প্রচুর বই বিক্রি হয়। আর সমাজতন্ত্রীরা আমেরিকান, ভারতীয় কোম্পানিতে মোটা অঙ্কের বেতনে চাকরি করছে। কেউ ব্যবসা করছে, কেউ ব্যাঙ্কে আর কেউ এনজিও তে। কেউ আমেরিকা-ব্রিটেনে গিয়ে ভাগ্য বদলানোর চেষ্টা করছে। চরম মূর্খের দল।
এই লেখার পর হয়তো সমাজতন্ত্রীদের সাথে আমার স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হবে। তবুও আমি সত্য বলতে ভালোবাসি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




