পরের দিন কাপ্তান সাহেব অফিসিয়ালি আমাদের জানাল অফিসের ইন্সট্রাকশন । এখানের চারটা পোর্টের ভিতর পোর্ট লেই ছাড়া অন্যকোন পোর্টে সবাইকে বাইর বেড়াতে নিষেধ করলেন। কিন্তু ব্যাপারটা আমরা মানতে পারলাম না। কারন পাপুয়া নিউ গিনি এসে রাবাউল সিটি দেখব না সেটা হবে না । কাপ্তানকে সবাই মিলে অনুরধ করলাম। এবং সে শর্ত সাপেক্ষে রাজি হল।
রাবাউল বিভিন্ন কারনে বিখ্যাত । এখানে এখনও জীবন্ত আগ্নেয়গিরি আছে। এর তাভুরভুর আগ্নেয়গিরি নিজ চোখে দেখে আসলাম। এই সিটিটাই এক সময় ছিল পাপুয়া নিউ গিনির রাজধানী। কিন্তু জীবন্ত আগ্নেয়গিরি / সুনামি / ভুমিকম্প’র কারনে বারবার জনপদ ধ্বংশ হয়েছে। সর্বশেষ ১৯৯৪ সালে আগ্নেয়গিরির থেকে নির্গত ছাই এ পুর শহর নিমজ্জিত হয়।এর পর সিটিটি এখান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুধ্বের সময় জাপান এই শহরটিকে নেভাল বেস হিসাবে ব্যাবহার করে। আমেরিকার পার্ল হারবার আক্রমণের পর জাপানের যুধ্ব জাহাজ,প্লেন এখানে এসে ঘাটি করে। এর পর মিত্র বাহিনীর ব্যাপক আক্রমণে শহরটি ধ্বংশ প্রাপ্ত হয়। জাপানের অনেক যুধ্ব জাহাজ এখানে এখনও ডুবে আছে। রাবাউলের সমুদ্রের পানি অনেক স্বচ্ছ যা আন্ডার ওয়াটার ডাইভিং এর জন্য উপযুক্ত। তাছাড়া ফিশিং, বার্ড ওয়াচিং ,ট্র্যাকিং এবং সার্ফিং এর জন্য জায়গাটা প্রসিধ্ব।
আমারা পোর্টে ঢুকতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। লোকাল এজেন্ট আমাদের কিছুতেই বাইরে যেতে দেবে না। অনেক কষ্টে ওকে রাজি করান হল। সে একজন আদিবাসী জোগাড় করে দিয়ে বলল , সে আমাদের তাভুরভুর আগ্নেয়গিরি দেখাতে নিয়ে যাবে। বিনিময় তাকে এক প্যাকেট সিগারেট এবং পুড়ান ১/২ টা কাপড় দিলেই হবে। জীবনে এই প্রথম কোন জীবন্ত আগ্নেয়গিরি দেখলাম। সে অনুভুতি লিখে প্রকাশ করা যাবে নয়া।
পাপুয়া নিউ গিনিতে প্রায় ১২ দিন ছিলাম। এখানকার লোকজন খুবই লজ্জিত হয় , তাদের মানুষ খেকো বললে। তবে ঘটনাটা তাড়া অস্বীকার করে না। সারা বিশ্বে তাদের মানুষ খেকো পরিচিতির কাহিনী নিয়ে ভাবছি লিখতে বসব।
গাছের গুরি দিয়ে বানান নৌকায় মাছ ধরছে এক আদিবাসী
টাভুরভুর আগ্নেয়গিরি
রাতের বেলা টাভুরভুর আগ্নেয়গিরি দর্শন
আদিবাসী গাইডের সাথে আমরা
রাবাউল রহস্যভরা এলাকা
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৪৫