somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহানবী (সাঃ) ও জিব্রাঈল (আঃ) যেদিন এক সাথে কাঁদলেন ।

২৫ শে মে, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একদা জিব্রাঈল (আঃ) মহানবী (সাঃ) এর নিকট এমন সময় উপস্হিত হন সাধারণত যেসময় তিনি উপস্হিত হন না । নবীজী তৎপর হয়ে অগ্রসর হলেন এবং তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে জিব্রাঈল ! কি হয়েছে ? আপনাকে এমন বিবর্ণ দেখাচ্ছে কেন ? তিনি বললেন, আল্লাহতায়ালা দোযখের অগ্নিকে উত্তপ্ত করার হুকুম দিয়েছেন । তারপরেই এসে আপনার কাছে হাজির হলাম ।

হুযুর (সাঃ) বললেন, আমাকে কিছূ বিবরণ শুনান । হযরত জিব্রাঈল (আঃ) বললেন, আল্লাহতায়ালা দোযখকে উত্তপ্ত হওয়ার হুকুম করলেন । অতঃপর সে এক হাজার বছর পর্যন্ত উত্তপ্ত হতে থাকে । ফলে দোযখের আগুন শ্বেত বর্ণ ধারণ করে । অতঃপর আবারও হুকুম করেন । এবারও এক হাজার বছর জ্বলতে থাকে ফলে দোযখের আগুন লাল বর্ণে রূপান্তরিত হয় । আল্লাহতায়ালা পুনরায় দোযখের আগুনকে আরো উত্তপ্ত হওয়ার হুকুম করেন । অতএব দোযখের আগুন আরো এক হাজার বছর জ্বলতে থাকে । পরিশেষে এ আগুন কৃষ্ঞবর্ণ ধারণ করে । বর্তমানে সেই আগুনের অবস্হা এই যে, এর স্ফূলিঙ্গের কোন শেষ নাই এবং এর লেলিহানেরও কোন অবধি নাই ।

তারপর তিনি বলেন, ইহা রাসূলূল্লাহ ! সেই পবিত্র সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্য নবী করে পাঠিয়েছেন - একটি সুইয়ের পরিমাণ অংশও যদি দোযখের ফুটা হয়ে যায় - তাহলে জগতের সমস্ত মানুষ এর আতংকে মরে যাবে । ঐ সত্তার কসম , যিনি আপনাকে সত্য নবী করে পাঠিয়েছেন । দোযখের প্রহরীদেরদ মধ্যে যদি একজনও দুনিয়াবাসীর সামনে প্রকাশ পায় , তবে সমগ্র দুনিয়াবাসী তার ভয়ে মৃত্যুবরণ করবে ।

তারপর আবার বললেন, ঐ পবিত্র সত্তার কসম ! যিনি আপনাকে সত্য নবীরূপে পাঠিয়েছেন । দোযখের শিকল সমূহের মধ্যে এমন একটি শিকল যার উল্লেখ পবিত্র কুরআনে করা হয়েছে । যদি দুনিয়ার পাহাড়-পর্বতের উপর রাখা হয় । তবে পাহাড় সমূহ বিগলিত হয়ে যাবে এবং শিকলটি দুনিয়ার সর্বশেষ অংশে গিয়ে থেমে যাবে ।

এ অবস্হায় মহানবী (সাঃ) ভয় পেয়ে গেলেন আর বললেন, ক্ষান্ত হও হে জিব্রাঈল , আর বলো না ; মনে হচ্ছে যেন আমার অন্তর ফেটে যাবে আর আমি এখনই মৃত্যু বরণ করব । একথা বলে নবীজী জিব্রাঈল (আঃ) এর দিকে তাকিয়ে দেখলেন তিনি কাদছেন । নবীজী (সাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কাদছেন কেন ? আল্লাহতায়ালার নিকট তো আপনার বিশেষ মর্যাদা রয়েছে । জিব্রাঈল (আঃ) আরজ করলেন , আমি কেন কাদব না, আমার তো আরো বেশী করে কাদা উচিত । কেননা, আল্লাহ তায়ালার নিকট যদি আমার বর্তমান অবস্হার স্হলে অন্য কোন অবস্হা হয়ে থাকে , তবে আমার কি উপায় হবে ? আমি জানিনা, ইবলিশের উপর যেভাবে বিপদ এসেছে, সেরূপ আমার উপরও পতিত না হয় । অথচ সেও ফেরেশ্তার মর্যাদা সম্পন্ন ছিলো । জানিনা, হারূত ও মারুতের উপর যেভাবে আপদ এসেছে আমার উপরও সেরূপ না পড়ে । একথা শুনে রাসূলূল্লাহ (সাঃ) কাদতে লাগলেন এবং জীব্রাঈল (আঃ) ও কাদতে লাগলেন । এভাবে উভয়-ই কাঁদতে থাকলেন ।

এমন সময় গায়েব থেকে আওয়াজ আসলো, হে জীব্রাঈল, হে মুহাম্মদ ! আল্লাহ'তায়ালা আপনাদের উভয়কে তার নাফরমানী ও অবাধ্যতা থেকে পবিত্র ও নিস্পাপ করে দিয়েছেন । অতঃপর হযরত জীব্রাঈল (আঃ) ঊর্ধ্বজগতে চলে গেলেন । মহানবী (সাঃ) উনার গৃহ থেকে বাইরে তাশরীফ আনলেন ।

বাইরে এসে তিনি দেখলেন, কয়েকজন আনসারী ক্রীড়া কৈাতুকে লিপ্ত রয়েছেন । তাদেকে উদ্দেশ্য করে নবীজী বললেন, তোমরা হাসি-ঠাট্রা ও ক্রীড়া কৈাতুকে মগ্ন রয়েছে । অথচ তোমাদের মাথার উপর রয়েছে জাহান্নাম । আমি যা জেনেছি, তোমরা যদি তা জানতে, তবে খুব কমই হাসতে এবং অতি অধিক মাত্রায় ক্রন্দন করতে । খাওয়া-দাওয়া তোমাদের ভালো লাগতো না এবং নির্জন জঙ্গলে আল্লাহর তালাশে তোমরা বের হয়ে যেতে । এমন সময় অদৃশ্য থেকে আওয়াজ আসলো, হে মুহাম্মদ ! আমার বান্দাদেরকে নিরাশ করো না । তোমাকে সুসংবাদরূপে পাঠিয়েছি ; হতাশ করার জন্য নয় । হুযুর (সাঃ) এরশাদ করেন, তোমরা সকলে দুরস্ত ও সঠিক পথের পথিক হয়ে যাও । হক ও সত্য থেকে দূরে সরে যেওনা ।

ইমাম আহমদ (রহঃ) বর্ণনা করেন, নবী করিম (সাঃ) হযরত জীব্রাঈল (আঃ) কে জিজ্ঞাসা করেছেন, হযরত মিকাঈল (আঃ) কে কখনও হাসতে দেখি নাই - এর কারণ কি ? তিনি বললেন, যখন থেকে দোযখ বানানো হয়েছে তখন থেকে মিকাঈল (আঃ) এর হাসি বন্ধ হয়ে গেছে ।

উৎসঃ মুক্কশাফাতূল ক্বুলুব । আত্নার আলো- হযরত ইমাম গাজ্জ্বালী (রহঃ)


সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৩:৩৫
১৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×