"জনি, জনি
ইয়েস পাপা
ইটিং সুগার!
নো পাপা"
ময়ূর কখন পেখম তুলবে এই আশায় হেঁটে চলা। তার মাঝখানে ছড়ানো ছিটোনো শতমাথাতাজ...ধূলোয় কেন যে পড়ে থাকা মিশিয়ে অহম মনে!
আর নাকের পাশে শিরশির চোখের জল। শুকিয়ে কাঠ কাঠ অনুভব-- সেও অনেক দিন। কেউ তাকায়নি আমার দিকে। কেবল যখন প্রশংসা করেছি তাঁর কবিতার, তখন ছাড়া। আর আমি জমিয়ে রেখেছি বালিশের ওয়ারে, ঘরের কার্ণিশে ঝাক ঝাক কবিতা। কী আসে যায় পোকাদের সাম্রাজ্য থেকে নির্বাসন হলে তাদের অন্তর্জালের শূণ্যতায়।
কোন কোন সতীর্থ ভাবছেন আমার এইসব নিয়ে। ভাবছেন খ্যাতির জন্য মোহাবিষ্ট এক পাগলের প্রলাপ এইসব। তাদের বলার কিচ্ছু নেই আমার।
আমার ধুলোয় পড়ে থাকা শিরোস্ত্রাণগুলি কাঁদুক আরো কিছুদিন। বিদায় ব্লগের বন্ধুরা। আলটিমেটলি, আমি তো আর লিখিই না। সবার মঙ্গল হোক।
অবাঙমানসগোচর
যে লেখে সে আমি না। যে লেখে সে অন্য কেউ।
অথর্ব কি আর ভাঙতে পেরেছে ভাষার সীমানাদেয়াল
আর তার কাটাতার?
কিংবা কলজে ছিঁড়ে আনা নতুনের সংসার?
যে লেখে সে আমি না।
সংসারের গোপন ফাটল দেখতে দেখতে
নদীর কিনারে কেটে যাওয়া ছেলেবেলা দেখেছি।
লড়াই জেতা ষাড়ের পৃষ্ঠকুণ্ডির মতো
মাংসল জলের স্রোত-ঢেউ গুণেছি।
খুঁজেছি আমার আমাকেই দেখবার মতো
কোনো আয়না জলের ভেতর।
খুঁজতে খুঁজতে কান্ত হয়েছি,
ভেঙে ফেলেছি।
ভাঙন ভাঙন শব্দে নদীর নিজের শুকিয়েছে জল,
একজন মানুষ নদীর উচ্ছিষ্ট জলে পা ধুয়ে
নদী পার হয়ে গেলো
আমি নদীর শুকনো বুকের ভেতরের হাহাকার
আর তার চোখের জল দেখতে পেলাম...
বাবা বসে আছে দাওয়ায় । মা বন্ধ চুলোর সামনে।
আমরা ঘরের মেঝেতে দাগ কেটে খেলছি ষোলগুটি ।
রান্না হচ্ছে জল ।
লাল ঝুটি বেঁধে খুঁপড়ি গাড়িতে স্কুলে যাচ্ছে বোন,
কাঁদতে কাঁদতে, দেয়া যায়নি টিফিন।
এইভাবে ধীরে ধীরে অযুত নিযুত চষাতে মুহূর্তের ভীরে
লাঙল হাতলে বন্দি হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে আমার অনুভব।
শৈশব।
হাঁটাপথে স্কুলে গেছি।
প্রকাশ্য রাস্তায় বিদ্বানের বেশে
বই পড়ে ঘুমিয়ে পড়েছি সবুজের পাশে।
চয়নিকার ভেতর থেকে আসা প্রজাপতি রঙ ধরে,
ধরে বখতিয়ার খলজির লাগাম
শূণ্যতার অধিক কল্পলোকে রুপান্তরিত হয়েছি
অজেয় অসীম মতার ঘোড়সওয়ার-এ।
কোথায় যাইনি বলো?
অথচ তোমরা আমাকে ভুল গুণেছ।
আমি স্বীকার করি- যে লেখে সে আমি না।
আমার এসব হতাশ্বাস নাবিকের গান আকণ্ঠ গাইবার কথা নয়।
যে লেখে সে আমি না।
সে প্রেমার কোলে বুভু হৃদয় ঠোঁট নিয়ে শুয়ে আছে।
যে লেখে সে কার্জন পার্কের রাস্তায় হেঁটে যাওয়া
বেশ্যার দিকে তাকিয়ে আছে।
নিষ্পলক।
যে লেখে সে গোধূলীর সংশ্রবে দাঁড়িয়ে আছে পাহাড়চূড়ায়,
সাগরের ডুবে যাওয়া মধ্যিখানে জলের উপর
ভেসে থাকা সূর্য্যচিহ্ন দিগন্তে,
যে লেখে সে আমি না।
সে তো চৌকশ বাক্যের তিরে হাওয়াকেও বিদ্ধ করে,
সে তো উষ্ণতায় হাড়সেদ্ধ করে দেয় সব পঙ্কিলতার।
সে তো কপালের ঘাম মুছে
মানুষের
কাঁধে রাখে হাত।
যে লেখে সে আমি না। যে লেখে সে আমি না।
যে লেখে সে অবাঙমানসগোচর।
রিলকের রাস্তায় দাঁড়ানো প্রেমিক পার্থকে প্রতিদিন দেশলাই দেয়।
নদী-বিচ্ছেদের কাহিনী শোনায়।
পার্থর দিকে তাকিয়ে কালপুরুষের দিকে ধোঁয়া উড়ায়।
বুক ভরে কুয়াশায় জল চুঁইয়ে পড়া দেখে।
যে লেখে সে আমি না।
সে তো মুখ গুঁজে পড়ে থাকে মিছিলের নীলে,
তোমাদের হাসি গানে।
উৎসবের অরুনাভ নির্জনতায়।
সে তো কাৎরায় কেবল টেবিলে উরুতে ভেজাচোখমুখ গুঁজে।
যে লেখে সে- আমি না। আমি না। যে লেখে তাকে- দেখিনি। দেখিনি।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০০৯ বিকাল ৪:১০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




