প্রথম পর্ব
২য় পর্ব
শেষ পর্বঃ
ভয়ের চোটে স্বামী গেল তাড়াতাড়ি ঘর ছাড়ি,
মানছুরার গা জ্বরে পুড়ে যায়-মাথাটা ভীষন ভাড়ী
শিয়রে বসিয়া কাশেম কহিল," ওহে ভগ্নি আমার-
কস্ট করিয়া একটু খানি মুখে তুলে নে খাবার।"
-"জ্বিহ্বা আমার ভাড়ী হয়ে গেছে, গলায় নামে না কিছু-
মৃত্যু আমায় তাড়া করে ফিরে সারাক্ষন পিছু পিছু।"
জোড় করিয়া কাশেম তাহারে খাওয়াইল কিছু ফল।
না খাইলে হইবে কেমনে তাহার গায়ে বল।
অনাহারে থেকে মানছুরার দেহ হইয়াছে পুরো নস্ট
এটুকু খাবার খেতেও তাহার কি নিদারুন কস্ট।
-" ভ্রাতা আমার, দাবি জানাই- আমার কন্যারে দেখো,
আমায় যেভাবে মমতা দিয়াছ- ওরেও সেভাবে রেখ।"
স্বামী তাহার গাড়ি আনিয়াছে, দাড়াইয়া আছে দূরে।
" যাইব না আমি"-এই বলিয়া শুইয়া থাকে ঘুরে।
কাশেম বোন কে কোলে তুলিয়া রাখিল গাড়ির 'পরে।
শ্বশুর শাশুড়ি কেউ আসিল না- বসিয়া রইল ঘরে।
স্বামী আসিয়াছে কন্যারে লইয়া-যাইবে ওদের সাথে,
কন্যাকে একটু ছুয়ে দিতে চায় কম্পিত ক্ষিন হাতে।
-" কন্যা আমার ভালো থাকিস , সোনা মানিক ওরে!
এই জীবনে দিলাম নাতো কোনো কিছুই তোরে"।
দু'চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরিছে, কহিতে পারেনা কথা-
কাপিয়া উঠিল সারা দেহখানি, বাড়িয়া গেল ব্যাথা।
-" ভ্রাতা আমায় আদর কর , কোলে লও মোরে তুলি-
তোমার কোলে মরিব আমি , দুঃখ ব্যাথা ভুলি।
কাশেম বোনের মাথাখানি -তুলিয়া লইল কোলে,
মানছুরা কি একটু হাসিল?- গাড়ি তখনো চলে।
চলিতে চলিতেই কখন যেল ফুরাইল তার আয়ু
ভাইএর কোলে মাথা রাখিয়া বাহির হইল প্রান বায়ু।
স্বামী কাদিল কন্যাও কাদিল, কাদিল কাশেম ভাই।
এই জগতে মৃত্যু ছাড়া কোনো সত্য নাই।।
---------------------******সমাপ্ত******--------------------------------
কিছু কথাঃ "মানছুরা" আমার লেখা একটি কবিতা যা বাস্তব একটি ঘটনার উপর ভিট্টি করে লিখেছি। সামুতে এটা আগেও পোস্ট করেছি। সম্প্রতি আমি একটি ক্যামকর্ডার গিফট পাই। কি বানাই? কি বানাই?- ভাবলাম। গেল ঈদে আমার বাড়ির প্রতিবেশি কিছু ছোট ভাই, ভাতিজা, বোন- এদের সাথে আলাপ করলাম আমার " বখাটে" বানানোর বিষয়ে। ওদের খুব উতসাহ দেখা গেল। ১ ঘন্টায় ওটা শ্যুট করে ফেললাম। ২ দিন পর "মানছুরা" করার স্বিদ্ধান্ত নেই। এটা করতে সারাদিন লেগেছে। ভাতিজা জনি(মানছুরার স্বামী চরিত্রে) ও চাচাতো বোন সুবর্ণার(মানছুরার) উতসাহ বেশি। জনির গোঁফ বানানো হয়েছে পাতিলের কালি দিয়ে। আর খুব ইন্টারেস্টিং বিষয় হচ্ছে, মানছুরার ভাই কাশেমের চরিত্রে সত্যিকারের কাশেম ভাইই অভিনয় করেছেন। উনি বাস্তবেই মানছুরার বড় ভাই। এদের কেউই এর আগে এভাবে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ায় নাই। আর আমিও এভাবে ভিডিও করি নাই। চারিদিকে সব পরিচিত মানুষের ভীড়- শুটিং দেখতে আসছে। আমি লজ্জায় বাঁচিনা।
"মানছুরা"য় বর্ণিত ঘটনা সত্য। আমি শুধু ছন্দ মিলানোর স্বার্থে কিছু চেঞ্জ করেছি। যেমন- কাশেম ভাই মানছুরাকে ফরিদপুর থেকে ঢাকা আনার পথে মানিকগঞ্জেই মারা যায়।
এই ফিল্মটা বানাতে আমার মোট খরচ হয়েছে ২০০টাকা। ১০০টাকা ভ্যান ভাড়া আর ১০০টাকা সুবর্নাকে সামান্য সম্মানী।
মানুষ ফিল্ম বানিয়ে টিভিতে/ হলে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার করে। আমি আমার প্রথম কাজ আমার প্রিয় সামহোয়্যার ইন ব্লগের মাধ্যমে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার করলাম। আমার প্রিয় ব্লগারদের সাথেই সর্ব প্রথম শেয়ার করলাম।
যারা আমার এই ফিল্মটি দেখলেন এবং মন্তব্য করলেন, উতসাহ দিলেন- তাদের সবাইকে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও শুভকামনা।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুন, ২০১২ দুপুর ১:৫৩