এই পোস্ট টি লিখার আগে খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ বক্তব্য আবারো পড়লাম। দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ফাঁসির আদেশ পরবর্তী সারাদেশে যে তান্ডবলীলা তৈরী হয়েছিলো কোন অবস্থাতেই খালেদা জিয়ার তার পক্ষে দাঁড়ানো ঠিক হতোনা। ৫ জন পুলিশ আর গুটি কয়েক শিবিরের কর্মী ছাড়া বাকি যারা মারা গিয়েছে প্রত্যেকেই সাধারণ মানুষ, খেঁটে খাওয়া মানুষ। জাতীয়তাবাদীর একজন সৈনিক হিসাবে সবসময় চেয়েছি দলীয় প্রধান সাধারণ মানুষের কাছে থাকবেন। সাধারণ মানুষের ইচ্ছা-আকাঙ্খাকে বুকে ধারণ করবেন।
গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের নিষ্কিয়তা দেখে আমি অবাক হয়েছি। হরতাল ও সাঈদীর রায় দুই মিলিয়েই দেশ গতকালকে অগ্নিগর্ভ ছিলো। সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় কেনো আগে বাগেই ব্যবস্থা নিলোনা? কেনো সন্ধার পরে দেশব্যাপী বিজিবি নামাতে হয়? কেনো ঘটনার মূহুর্তেই ব্যবস্থা নেওয়া হলোনা?
কাদের মোল্লার রায়ের আগেও সারাদেশব্যাপী একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরী হয়েছিলো। ভাংচুর, তান্ডব, হানাহানিতে জড়িয়ে পরেছিলো দেশ। ঠিক তখনি সরকারের ইশারায় জামায়াত-শিবির মতিঝিল সহ সারাদেশে বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ করেছে।
তখন আমরা দেখেছি - স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী শামছুল ইসলাম টুকু শিবিরের তরুন নেতাদের প্রশংসা করতে।
সেই সময় বাতাসে একটা গুন্জন ছিলো আওয়ামীলীগ সরকার জামায়াতের সাথে আতাঁত করেছে। সেটার নমুনাও আমরা দেখেছি কাদের মোল্লার রায়ে। রায়ে আদালত একদিকে বলেছে শত শত হত্যার জন্য দায়ী এই কাদের মোল্লা অন্যদিকে তাকে গুরুতর অপরাধে লঘু শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
এরপরইতো শাহবাগ আন্দোলন। ব্লগার ও অনলাইন এ্যাক্টিভিস্টের ব্যানারে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিলো সেটা কিভাবে ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে চলে গেলো। শাহবাগের আহবায়ক স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে রাজাকার সম্বোধন করেছে। প্রমাণ আছে আমাদের হাতে। সে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও স্বাচীপের বর্তমান নেতা। যার নেতৃত্বে আন্দোলন শুরু হয়েছে সে আমাদের নেতাকে রাজারকার সম্বোধন করে, স্বাধীনতার ঘোষককে রাজাকার সম্বোধন করে। সুতরাং তার পক্ষে সাফাই গাওয়ার আমাদের কিছু নাই।
কারন আমরা দুইটা জিনিস অবগত হলাম গত কয়েকদিনে। এক. সরকার প্রথমে চেয়েছিলো জামায়াতের সাথে আতাঁত করতে। তখন সেটা ব্যর্থ হয় সাধারণ দেশপ্রমিক মানুষের জন্য। সৃষ্টি হয় প্রজন্ম চত্বর। দুই. তখন সরকার কৌশলে প্রজন্ম চত্বরের আন্দোলন দিয়ে দিলো ছাত্রলীগের কন্ট্রোলে।
খালেদা জিয়ার বক্তব্যের পর সামহোয়্যারইন ব্লগে দেখলাম কতিপয় ব্লগার খালেদা জিয়ার মুন্ডুপাত করছে। এটা নতুন কিছু না। এরা সবসময় জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও জিয়া পরিবারের উপর প্রপাগন্ডা চালিয়েছে। যখন খালেদা জিয়াকে তার বাড়ী থেকে উৎখাত করেছে এরা ব্লগে ব্লগে পৈশাচিক উল্লাসে মেতে উঠেছে।
বিএনপি সবসময় বলে এসেছে, বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়। কিন্তু সেটা হতে হবে স্বচ্ছ, দলীয় সংকীর্ণতার উর্দ্ধে থেকে। আজো খালেদা জিয়ার বক্তব্যে কোথাও দেখলাম না উনি যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে বলেছেন।