অনেক অনেকদিন আগে রাত জেগে একজন যুবক আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবতো, এই আকাশ, চাঁদ, তাঁরা, সুর্য, দিন, রাত, চারিদিকের এতসব, কে সৃষ্টি করেছেন? কার কথায় এগুলো চলে? চারিদিকে তখন মুর্তি পুজার ধুম। সবাই মুর্তি কে তাদের রব মানত। এই যুবক সবাইকে নিষেধ করতো মুর্তি পুজা করতে। এজন্য তাঁকে অনেক লাঞ্ছনা সইতে হয়েছে। এমনকি তাঁর বাবা তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। তবুও সে থেমে থাকেনি। একদিন এলাকার সবাই মিলে মেলা দেখতে গেল। যুবকটি গেল না। সে একটা কুড়াল নিয়ে উপাসনালয়ের সব মুর্তি ভেঙ্গে ফেললো শুধু বড়টা ছাড়া। সেই বড় মুর্তিটির গলায় কুড়ালটি ঝুলিয়ে রাখলো।
মেলা থেকে ফিরে সবাই দেখলো সব মুর্তি ভাঙ্গা! সবাই বুঝে ফেললো, কার কাজ এটি। ডাকা হল সেই যুবককে। জানতে চাওয়া হল, কে এই কাজ করেছে? যুবকটি বলল, অই যে কুড়াল ঘাড়ে করে দাড়িয়ে আছে, ওকেই জিজ্ঞেস করুন! ও দেখেছে কে ভেঙেছে। সবাই হতবাক। তাদের নেতা বলল, মুর্তি কি কখনো কথা বলতে পারে? যুবকটি বলল, মুর্তি যদি কথা বলতে না পারে, তার সাথী মুর্তিদের বাঁচানোর ক্ষমতা যার নাই, তার পুজা কর কেন???
সবাই মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে লাগলো। কারো মুখে কোন কথা নেই।
এই যুবকটি কে ছিলেন, জানেন? তিনি ছিলেন, মুসলিম জাতীর পিতা ইব্রাহিম (আঃ)। এরপর থেকে তাঁর নাম হয়ে গেল, “মুর্তি ভাঙ্গা ইব্রাহিম।“
এরপর কেটে গেল অনেক অনেক দিন, মাস, বছর, যুগ। সেই মুর্তি ভাঙ্গা ইব্রাহিমের (আঃ) হাতে তৈরি করা আল্লাহ্র ঘর কাবা শরীফ।
শিরক অনেক বড় পাপ। এই পাপ তওবা না করলে কখনো ক্ষমা হবার নয়। ইবলিশ শয়তান খুব ভাল করেই জানে, মুসলমানের জন্য জাহান্নামের পথ তৈরি করতে ধর্ম নেতা এবং রাজনৈতিক নেতা দরকার। মানুষ এদের খুব মান্য করে।
তখন মক্কায় ছিলেন “আহমেদ বিন লোবাই” নামে অনেক বড় এক ধর্মিয় নেতা। মক্কার লোক সবাই তার কথা শুনত। তিনে গেলেন সিরিয়ায়। গিয়ে দেখলেন, সেখানকার লোক “হোবল” নামে এক মুর্তির পুজা করে। তাদের ধারনা, এই কারনে সেখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। তিনি অনেক অর্থ খরচ করে সেই মুর্তি নিয়ে মক্কায় ফিরলেন। মক্কার লোককে বোঝালেন, এই হোবলের উসিলায় বৃষ্টি চাওয়া হলে আল্লাহ্ খুব খুশি হবেন আর প্রচুর বৃষ্টিপাত দিবেন। এতবড় একজন ধর্মনেতা কি কখনো মিথ্যা বলতে পারে? সবাই তার কথা মেনে নিলেন, কারন মক্কা মরুভুমীর দেশ। বৃষ্টি খুব দরকার ছিল, সেসময়ে, এসময়েও।
সেই থেকে শুরু। যখন বিশ্বনবী, রাসুলগণের নেতা, রাহমাতাল্লিল আলামিন হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) মক্কা বিজয় করেন তখন কাবাঘরে ছিল ৩৬০ টি মুর্তি। তিনি লাঠি নিয়ে একা কাবাঘরে ঢুকলেন। পিটিয়ে সব মুর্তি ভেঙ্গে ফেললেন। মুখে বললেন, “এসেছে সত্য, চলে গেছে মিথ্যা।“
বাপ ভেঙ্গে গেছেন মুর্তি, বাপ কা বেটা! ছেলেও কম না।
সেই বাবার ছেলে হয়ে আমরা কি করে মুর্তির পক্ষ নিয়ে কথা বলি? ধিক আমাদের উপর! আমরা ইব্রাহিমের (আঃ) কুলাঙ্গার সন্তান!
সুলতানা কামাল, তুমি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের মুখে নিজে থুথু ছিটাও! নয়তো লক্ষ-কোটি ইব্রাহিমের (আঃ) সন্তান তোমাকে ছাড়বে না!
YOU CAN VISIT MY BLOG:
https://www.shishir54.xyz
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





