somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উচ্চশিক্ষা তো?

২১ শে নভেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৫:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এখনও কুড়ালদের রাজত্ব। ছিদ্রদোষে দোষী করে সুইদের বন্দী করেছিল কুড়ালেরা। জানলেওয়ালা শ্রেণীর কুড়াল বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকবৃন্দ। এই যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বিভিন্ন সভা সমিতিতে, টিভি চ্যানেলের ক্যামেরার সামনে প্রায়শই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামী শিক্ষকরা (দামীও বটে) সুইদের সংসদভবনের অকার্যকরতার অভিযোগ তুলতেন। দেশের সুইদের, রাজনীতিকদের অনেক ছিদ্রের একটি- তারা কলহপ্রিয়, তারা পরমতসহিষ্ণু নন, বলতেন শিক্ষকবৃন্দ। অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ফোরাম- সিনেটে এমন সব কান্ডকারখানা করেন সেইসব নামী শিক্ষক মহোদয়েরা যাতে তাদের কুড়ালগুনের ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত না হয়ে পারি না।

কাছাকাছি একটা উদাহর দেই। বার্ষিক সিনেট অধিবেশন ২০০৮। পেশাগত দায়িত্ব- সংবাদ সংগ্রহের জন্য উপস্থিত থাকতে হয়েছিল আমাকে। অধিবেশনের প্রধান কাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরের বাজেট পাশ করা। সেই সাথে ২০০৭-২০০৮ এর সংশোধিত বাজেট। অধিবেশনের শুরুতে ছিল উপাচার্যের অভিভাষণ। তারপর কোষাধ্যক্ষের বাজেট-ভাষণ। কথা ছিল সিনেট সদস্যরা তারপর ভাষণের ওপর ‘আলোচনা’ করবেন। মানে বাজেট নিয়ে, বিশ্ববিদ্যালয়ের হাল-হকিকত নিয়ে আলোচনা। কিন্তু যা হলো তাকে ‘কথা ছোড়াছুড়ি’ না বলে ‘আলোচনা’ বললে ‘আলোচনা’ শব্দটার ওপর নিরেট অবিচার করা হবে। শিক্ষকরা কথা ছোড়াছুড়ি করলেন একে অপরকে লক্ষ্য করে। চার পাঁচজন সিনেট সদস্য একই সাথে নিজেদের মাইক্রোফোন অন করে রীতিমত চিৎকার করে কথা বললেন অনর্গল। কেউ কারো কথা শুনলেন না।

অথচ এরকম তুমুল তর্কেও একবারও বাজেটের কথা আসেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নের কথা বললেন না কেউ। আবাসন সমস্যা যে বিশ্ববিদ্যালয়ে চরমে সে কথা কারও মাথায় আছে বলে মনে হয় নি। হলে অবস্থানরত ছাত্রদের আবাসন সমস্যা কিংবা অনাবাসিক ছাত্রদের প্রাণান্তকর পরিবহন সমস্যার সমাধানের উপায় খুঁজতে আগ্রহী নন বক্তাদের কেউ। সমস্যার শিকার অবশ্য শিক্ষকবৃন্দও। যেমন- শিক্ষক আবাসন ব্যাবস্থার অপর্যাপ্ততা। যে সমস্যার কথা বলতে ভোলেন নি তারা। সিনেটে আলোচিত হয়েছিল ২২ আগস্টের কথা। ২২ আগস্টকে বিশেষ দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবী করা হলো তুমুল বক্তৃতায়। হলপ্রভোষ্ট পদে সাদা নীল ভাগাভাগি নিয়েও হৈ চৈ হলো খুব। ভালো কথা। নির্যাতনের বিরুদ্ধে সাহসের সঞ্চারণের উদাহরণ হয়ে আছে ২২ আগস্ট। দিবস ঘোষণাও খারাপ কিছু নয়। কিন্তু দিবস ঘোষণা করেই কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান বাড়ানো যায় বলে তো শুনিনি। হলপ্রভোষ্ট পদে সাদা নীল প্যানেল সমান থাকলে আপত্তি করার কিছু নেই। কিন্তু তাতে হলে নুন্যতম সুযোগ সুবিধা বাড়ার তো কোনো সম্ভাবনা নেই।

উপাচার্য নিজে যখন বক্তৃতায় জানান দেন বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশী শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ২৬ জন তখন তিনি আসলে কি বলেন? তিনি কি তো আসলে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম-শিক্ষাপদ্ধতি-শিক্ষক ও শিক্ষার পরিবেশের মানহীনতার কথা জানান দেন। আর্ন্তজাতিক রেটিং-এ প্রথম পাচঁশো বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম থাকে না।

এবারের বাজেট ১৬৪ কোটি টাকার অথচ শিক্ষার মান উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ মাত্র ৮ কোটি টাকা (প্রায়)। সিনেটে বাজেটের কথা হয় না, বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা হয় না। বাজেটে শিক্ষার মান উন্নয়নে বরাদ্দ যৎসামান্য। বলি, শিক্ষকবৃন্দ কোন জিনিসটাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য মনে করেন? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য উচ্চশিক্ষা তো? নাকি অন্যকিছু? এই যেমন- রাজনীতি।
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×