মঞ্চের উপর অতিথিদের আসনে হাস্যজ্জল মুখে বনে আছেন কবি। নির্ধারিত সময়ে বক্তৃতা করতে উঠে এলেন মাইকের সামনে, মাত্রই বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সম্মাননা গ্রহণ করেছিন তিনি। হয়তো তাই গর্বের সহিতই বললেন- এ সম্মাননা গ্রহণকে নিজের জন্য ন্যায় সংগত ভেবেছি, কৃতঞ্জতা জানাচ্ছি আয়োজকদের, এ সংবর্ধনা ইতিহাসে অনিবার্য!!
হায়! একি বললেন কবি? কেন বললেন? কেনই বা করলেন? জামায়াতে ইসলামীর গড়া বির্তকিত সংগঠন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের দেয়া এই সংর্বধনা গ্রহণ কি সাজে আপনাকে? কাল কি জামার বোতাম দিয়ে হৃদয়কে ডেকে দিয়েছিলেন কবি? কাল কি ভুলে গিয়েছিলেন ৭১ কে? ভুলে গিয়েছিলেন আপনি মুক্তিযোদ্ধা? ভুলে গিয়েছিলেন এই সব রাজাকার আল বদরদের রাষ্ট্রদ্রোহীতার স্মৃতি?
পত্রিকায় পড়েছি অর্থ মূল্যে এই সম্মাননার দাম ৫০ হাজার টাকা ( সত্যি কত জানিনা)। সত্যি অনেক টাকা! আমাদের মতো বুভু, লোভীদের জন্য সে তো আরও অ-নে-ক টাকা! কিন্তু আপনি না কবি? আপনি না বাংলাদেশের অন্যতম কবি আল মাহমুদ? আপনি না বাঙলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা? একবার বলবেন- কাল কি সত্যি ভুলে গিয়েছিলেন এসব?
নজরুলের সেই বাণীটা মনে পড়ছে খুব- ...যেদিন আমি চলে যাব-সেদিন হয়তো বড় বড় সভা হবে। কত প্রশংসা, কত কবিতা বেরুব আমার নামে! দেশপ্রেমিক, ত্যাগী, বীর, বিদ্রোহী বিশেষণের পর বিশেষণ। টেবিল ভেঙ্গে ফেলবে াপ্পড় মেরে বক্তার পর বক্তা। এই অসুন্দরের শ্রদ্ধা নিবেদনের শ্রাদ্ধ দিনে বন্ধু তুমি যেওনা। যদি পার চুপটি করে বসে আমার অলিখিত জীবনের কোন একটা কথা স্মরণ করো। তোমার ঘরের আঙিনায় বা আশে পাশে যদি একটি ঝরা পায়ে পেষা ফুল পাও সেইটিকে বুকে চেপে বলো- বন্ধু আমি তোমায় পেয়েছি।
আপনিও না কবি? তবে কেন পারলেন না আপনি? দেশের মানুষ আপনাকে কবি বলে, যোদ্ধা বলে হৃদয়ের উষ্ণতায় যে সম্মানের আসনে বসিয়েছেন তা চেয়ে কতগুলো কাগুজে নোট, ভোল পাল্টানো ঘাতকদের কটা মিথ্যা প্রশংসার বুলিই বড়ো হয়ে গেল?
ছিঃ কবি, ছিঃ
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:২৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



