দেখতে দেখতে কেটে গেলো ২০০৯। গতবছর পহেলা জানুয়ারীতেই আমার শুভ প্রত্যাবর্তন ঘটেছিলো সামুতে সেই হিসেবে সামুতে নিয়মিত হবার বর্ষপুর্তি আমার। অনেক সময় নিয়ে একটা ব্লগ লিখবো ভেবে রেখেছি। অনেকগুলো আইটেম থাকবে ব্লগে। দেখা যাক কি হয়
নববর্ষের স্মৃতি
দেশে থাকতে কোন সময়ই তেমন ভাবে নববর্ষ পালন করা হয়ে ওঠেনি। ছোটবেলায় আম্মু এই দিনে পোলাও কোরমা করতেন সব সময়, আমার অনেক পছন্দ বলে (মা'গো, অনেক মিস্ করছি আপনার হাতের রান্না)। তারপর কলেজে উঠে চলে গেলাম হোষ্টেলে। সেখানে থার্টি ফাষ্ট রাতে মজা হোত, মানে হলের সবাই মিলে আড্ডা দেয়া, একসাথে খাওয়া। কেউ পড়তে বসলে তাকে চেয়ার সহ তুলে আনা, মাঝে মাঝে তাকে নাচতে বা গাইতে বাধ্য করা - এই সব ছিলো মজার উপকরণ। আর নববর্ষের দিনটা সবাই ব্যস্ত থাকতো যার যার প্রেমিকার সাথে, যাদের কেউ ছিলোনা, তারা মাঝে মাঝে হানা দিয়ে খাবার জন্য টাকা বা সিগারেটের প্যাকেট নিয়ে যেত এই তো।
এখানে এসেই প্রথম থার্টি ফাষ্ট রাতে গিয়েছিলাম সিডনীর বিখ্যাত ফায়ার ওয়ার্কস দেখতে। সে সমইয় ক্যামেরা কেনা হয়নি, তাই শুধু স্মৃতীতেই বন্দি হয়ে আছে সময়টা। এত লোক যে ফায়ার ওয়ার্কস দেখতে যায়, না দেখলে বিশ্বাস করা যায়না। আর কি যা সুন্দর হয় জিনিসটা, বলে বোঝানো যাবে না। শুধু তো ফায়ার ওয়ার্কস না, সাথে থাকে আলোয় আলোয় সাজানো ছোট বড় জাহাজ, আলোক ঝলমল হার্বার ব্রিজ। পরের বছরে তোলা কিছু ছবি দিলাম।
আচ্ছা, অনেক কথা হলো, এবার সবার জন্য কিছু গিফট ...
১) আমার প্রিয় তিন ধারার তিনটি বাংলা গানঃ
ক) তুমি সন্ধার মেঘমালা - সুমন (রবীন্দ্র সঙ্গীত)
খ) ভালবাসি - তপু (এলবাম - সে কে ২০০৯)
গ) মুক্ত হাওয়ায় স্বপ্নেরই দরজাটা খুলে - (লাবণী)
২) আমার প্রিয় তিনটি ইংরেজী গানঃ
ক) Hello - Joy (album - Hello)
খ) You can take my breath away - Enrique Iglesias
গ) I Don't Wanna Miss a Thing - Aerosmith
৩) সোনামনিদের জন্যে তিনটা গেইমঃ
ক) ফার্ম ম্যানিয়া (ডাউনলোড ) ২৫.৩১ মেগাবাইট
খ) ফার্ম ফেঞ্জি (ডাউনলোড ) ৩৫.১৫ মেগাবাইট
গ) লিটল ফার্ম (ডাউনলোড ) ৩৪.৯৬ মেগাবাইট
সবগুলো গেইমই ফুল ভার্শান। প্রয়োজনীয় ক্রাক ফাইল সাথে দেয়া আছে। গেইমগুলো ছোটদের জন্য হলেও সবাই খেলতে পারবেন, প্রথম দিলে সহজ হলেও পরের দিকে অনেক কঠিন হয়ে যায় খেলাগুলো
৪) আমার পছন্দের ৩৩টি হাই ডেফিনিশন ওয়াল পেপার
ডাউনলোড করুন জিফ ফাইল আকারে ১২.৫৪ মেগাবাইট
৫) চমৎকার একটি স্কিন সেভার - ওয়াটারী ডেক্সটপ
ডাউনলোড করুন ১.৮১ মেগাবাইট
সফটওয়ারটি উইন্ডোজ এক্সপি, ভিসতা ও উইন্ডোজ সেভেনে টেষ্ট করা। ইন্সটল করার পর সাথে দেয়া ক্র্যাকটি চালিয়ে C:windows ফোল্ডার থেকে WATERYDS.SCR ফাইলটি খুজে দেবেন, তাহলে আর কয়েক মিনিট পর পর রেজিষ্ট্রি করতে বলবেনা
৬) রুপমের "পথে চলতে পথে চলতে" মিউজিক ভিডিওটি ডাউনলোড করুন -
পথে চলতে পথে চলতে - এভিআই ফরম্যাটে (avi format) ১২.৫৫ মেগাবাইট
পথে চলতে পথে চলতে - এফএলভি ফরম্যাটে (flv format) ১২.৯২ মেগাবাইট
এবার সিরিয়াস কিছু কথাবার্তা (ফান টক)
সামুর ব্লগারদের অজানা কিছু কথা
১) জানা আফাঃ আমাদের ব্লগ বুড়ী জানা আফা নিওমিত স্পঞ্জের স্যান্ডেল উলটা করে পড়েন মানে ডান পায়েরটা বা পায়ে, আর বা পায়েরটা ডান পায়ে পড়েন
২) নুশেরাঃ রান্না বিশারদ নুশেরা পোলাও রান্নার সময় এখনও তিনবার আলহামদু সুরা, তিনবার কুলহু আল্লাহ সুরা পরে পাতিলে ফু দিয়ে রান্না শুরু করেন
৩) অপর্ণাঃ (একলব্যের পুনর্জন্ম) ওকে খেপানো খুব সহজ, শুধু বলবেন - "ক্ষয়ে যাওয়া হাড়ের ভেতর ..." ব্যাস ... বাকিটা আর বলতে হবেনা
৪) বৃত্তবন্দিঃ ছোটবেলা ওর মা ওকে কোথাও বসিয়ে দিয়ে চারপাশে বৃত্ত এঁকে দিয়ে বলতেন - এর বাইরে গেলে তোর খবর আছে । বৃত্তবন্দি এখনও চারুকলার আশেপাশে বা মেঝেতে আঁকা কোন আলপনা সযতনে এড়িয়ে চলে
৫) শ্রাবনসন্ধ্যা আফাঃ উনি এখনও b & d লিখতে উল্টোপাল্টা করে ফেলেন
৬) বড় বিলাই আফাঃ চিড়িয়াখানার কিউরেটর বিলাই আফা বান্দর খুবই ভয় পান। অনেকদিন টারজান সাহেবকে ঘুমের ঘোরে বান্দর ভেবে ঠেলে বিছানা থেকে ফেলে দিয়ে পরে স্যরি বলেছেন
৭) অদিতিঃ (Kisuna) কথায় কথায় স্যরি বলা ওর মুদ্রাদোষ কোন না কোন ভাবে প্রতি মিনিটে অন্তত একবার স্যরি বলা তার চাই ই চাই
৮) বাবুনি সুপ্তিঃ ওকে শুধু বলুন - "বাবুনি, ছ্যাঙ্গা ..." দেখবেন বাবুনি লগ অফ পিসি ছেড়ে দৌড়ে পালিয়েছে কোথাও
৯) অনন্ত দিগন্তঃ শিশু সাহিত্যিক অনন্ত কত সুন্দর করে কোঁকড়া চুলওয়ালীর কথা লেখে অনন্তর নিজেরে চুলই কিন্তু অনেক কোকড়া। ওর গার্ল ফ্রেন্ড মাঝে মাঝে ওকে "তোমার কুকড়া কুকড়া চুল ..." গান শুনিয়ে ঘুম থেকে জাগায়
১০) নাহিনঃ নাহিন যে ওয়েষ্টার্ন মিলন ভচের কঠিন ফ্যান সেটা জানেন?
১১) অপসরাঃ যে কোন একটা রবীন্দ্র সঙ্গীতকে বলুন এটাতো নজরুল গীতি, ব্যস, অপসরা চেইতা বোম
১২) নীল-দর্পণঃ নীল-দর্পণ এখনও ঘুমের মধ্যে আঙ্গুল চোষে
১৩) স্বপ্নজয়ঃ উনার পেটে কেউ গুতা দিলে উনি খুবই খেপে যান
১৪) অরির্ল্ডঃ বিটিভির ছায়াছন্দ ওনার খুব ফেভারিট একটা অনুষ্ঠান
১৫) স্পৃহাঃ ওকে কেউ একটা সিগারেট অফার করেন, আপনার চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করে না ছাড়লে আমাকে বইলেন
========================================
এইবার একটা গল্প ...
একদা এক টুপিওয়ালা রাজশাহী শহরে টুপি বিক্রি করিতে যাইতেছিলো। পথিমধ্যে ক্লান্তিতে তাহার দুই চক্ষু মুদিয়া আসিলে সে টুপির ঝুড়ী মাটিতে নামাইয়া রাখিয়া এক আম্রকাননে শয়ন করিল। কিছু সময় পরে ঘুম হইতে জাগিয়া সে দেখিতে পাইলো যে তাহার ঝুড়ীতে একখানা টুপিও নাই। দিশাহারা হইয়া সে টুপি খুঁজিতে যাইয়া দেখিতে পাইলো যে আম্রশাখায় নৃত্যরত শাখামৃগের দল তাহার সকল টুপি নিজ দায়িত্বে গ্রহন করিয়া মস্তকে ধারন করিয়া রহিয়াছে নিজের এহেন বেয়াক্কেলিতে বিরক্ত হইয়া যে নিজের মাথার চুল ছিড়িতে উদ্যত হইলো এবং লক্ষ্য করিলো যে শাখামৃগের দল তাহাকে অনুসরন করিয়া আপন আপন মস্তকে অঙ্গুলী চালনা করিতেছে। টুপিওয়ালার মাথায় এক বুদ্ধি খেলিয়া গেল। সে তাহার আপন টুপিটি খুলিয়া নিজেকে বাতাস করিতে লাগিলো। এইবারেও কৌতুহলী বান্দরকুল তাহাকে অনুসরন করিতেছিলো। এক্ষনে সে তাহার টুপিটি মাটিতে ফেলিয়া দিলে আম্রবৃক্ষে বিচরনরত সকল বান্দর তাহাদের মাথার টুপি খুলিয়া মাটিতে ফেলিয়া দিলো। এই সুযোগের সদব্যবহার করিয়া টুপিওয়ালা তাহার সকল টুপি ফেরত পাইয়া মনের আনন্দে ঝুড়ি ভরিয়া রাজশাহীর পথে রওয়ানা হইয়া গেলো।
পঞ্চাশ বৎসর গত হইয়াছে। টুপিওয়ালার নাতি 'রনি' এখন তাহাদের পারিবারিক ঐতিহ্য বজায় রাখিয়া টুপি বিক্রয় করিতেছে। এই বৎসর সেমাই ঈদের পূর্বে বাড়তি কিছু লাভের আশায় রনি তাহার দাদাজানের মতই ঝুড়ি ভর্তি করিয়া টুপি লইয়া রাজশাহীতে আসিতেছে। পথিমধ্যে ক্লান্ত হইয়া সেও তাহার দাদাজানের ন্যায় আম্রতলে শয়ন করিয়া যথারিতি বান্দরের হস্তে সকল টুপি খোয়াইলো কিন্তু রনি তাহার দাদাজানের টুপি ফেরত পাওয়ার উদ্ভাবিত পদ্ধতির কথা ভাবিয়া আমোদিত হইয়া প্রথমে আপন টুপি খুলিয়া নিজেকে বাতাস করিলো ও পরে টুপিখানি মাটিতে ফেলিয়া দিলো। এক্ষনে একখানা মোটাগাটা বান্দর চক্ষের পলকে আম্রশাখা হইতে নামিয়া আসিয়া প্রথমে রনির ফেলিয়া দেওয়া টুপিটি হস্তগত করিলো তারপর রনির ডান গালে একখানা রাম থাপ্পর বসাইয়া দিয়া আম্রশাখায় ল্যাঞ্জা পেচাইয়া উলটা হইয়া ঝুলিয়া কহিলো -
"দাদা কি খালি তুমারই আছে না কি বাচ্চু? আমাগো নাইক্কা? ..."
========================================
স্বপ্নজয়ের ম্যালা প্রতিভার সাথে আপনারা পরিচিত এইবার শুনেন একখানি ছুডু ছড়া
রাশিকার টেডি বিয়ার বাঁকা হয়ে বসে
অদিতির হাত দুটি তারে শুধু খোঁজে
যখনই সুযোগ পায় টিপে দেয় গলা
জানিনা এ অদিতির কেমন আজিব খেলা ...
========================================
আচ্ছা ... অনেক উল্টাপাল্টা কথা হইছে। আপনাদের কিছুটা সময় আনন্দ দেবার এটাই ছিলো আমার হাস্যকর প্রচেষ্ঠা। নতুন বছর প্রথম দিনটাতে অন্তত একটি মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করুন। হতে পারে সে আপনার মা, বাবা অথবা আপনার ভাই বোন, স্ত্রী সন্তান, বন্ধু। অথবা পথে দেখা হওয়া কোন অপরিচিত মানুষ। সাধ্যের মধ্যে যা আছে তা দিয়েই চেষ্টা করুন না। যদি আপনার চেষ্টায় একটি মুখে ফুটে ওঠে এক চিলতে হাসির রেখা, তবে সেইটাই হবে আপনার জন্য - আমার জন্য - আমাদের সবার জন্য সব চাইতে বড় পাওয়া ...
সবাইকে নতুন বছরের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ...
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:১৫