স্বরধ্বনির ষড়যন্ত্র
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
১
প্রায় মৃত, স্রোতহীন একটা নদীর মাঝখানে জেগে উঠা একটা অনুর্বর চর। কল্পনাপ্রবণ কোন লেখক দ্বীপ হিসাবেও দেখতে পারে। তবে কল্পিত দ্বীপের দিকে মনোযোগী না হয়ে চরটার একটা বর্ণনা দেখে নেয়া উচিত।
এখানে লাশকাটা ঘরের বিষণ্ণতা এবং হিমঘরের শীতলতায় ঘন নীলবর্নের মাছিদের একটানা বেসুরো গুঞ্জন, দিয়ে যায় এক অদ্ভূত ভয় পাওয়ার অনুভূতি। অনুভূতিটা হয়তো ভয়ের নয়তো ভয়কে মিথ্যে করে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জীবন্মৃত থাকার চেষ্টা।
পুরো চরটাতেই ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া ঘাস অপেক্ষা করছে মাটিতে মিশে যাবার জন্য।
এখানে কখনোই বাতাস বয় না, বৃষ্টি হয় না, বসন্তের কোন বালাই নেই এখানে। বৃষ্টির বদলে প্রায়ই ঝড়ে পড়ে বিষণ্ণতার দুর্বোধ্য আলো।
এখানটায় একসময় দলবেধে পাখিরা এসে আত্মহত্যা করত। কারণ অনুসন্ধিত্সু উত্সুক মানুষের দল প্রায়ই আসত এখানে। অনেকখানি সময় নষ্ট করার পর, একটা সিদ্ধান্তে উপনীত হবার পর এবার ফেরার পালা। তাদের জন্য অপেক্ষারত ব্যক্তিরা দাড়িয়ে থাকত উত্সুক দৃষ্টিতে। অপেক্ষার পালা শেষ হত না কখনোই, কে জানে হয়তো তাদের শেষ পরিণতিও হত পাখিগুলোর মতই হত।
তবে চরটার মধ্যে কিছুটা পরিবর্তন হচ্ছে সাম্প্রতিককালে। অনুসন্ধানী দলের চোখ এড়ায় না তা।
২
দুজন বসে আছে মুখোমুখি।
তাদেরকে বিভাজিত করে রেখেছে মাঝামাঝি সাজিয়ে রাখা একটা বোর্ড। আত্মহন্তক পাখিদের দল চমকে একবার তাকায় তাদের দিকে। একদিকে মৃত্যুদেবতার ডাক অন্যদিকে কৌতুহলদ্দীপক দুজন মানব মানবী।
পাখিগুলোর কিচিরমিচির স্পষ্টতই মৃত্যুদেবতার দিকে ছুড়ে দেয়া খিস্তিখেউর। নিজেদেরকে শেষ করে ফেলার আগে সম্ভবত দেখে নিতে চায় মৃত্যুময় দ্বীপটাতে হঠাত এ ধরনের পরিবর্তনের কারণ।
পাখিদের খিস্তিখেউর একসময় কোরাসে পরিণত হয়ে মাছিগুলোর গুঞ্জনের উপর কর্তৃত্ব শুরু করে। হারিয়ে যায় বিষণ্ণতার করুণ সুর। তার বদলে সংগীতময় একটা পরিবেশ তৈরী হতে সময় নেয় না খুব একটা।
বোর্ড সামনে নিয়ে বসে থাকা দুজনের দৃষ্টি এড়ায় না এমন একটা পরিবর্তন। তবে তারা ব্যাপারটাকে তেমন আমলে নেয় না, উল্টো আরও মনোযোগী হয়ে উঠে সামনের বোর্ডটায়। সম্ভবত জটিল কোন চাল দিয়ে পরাস্ত করতে চায় একে অপরকে, নয়তো সুরসম্বৃদ্ধ একটা পরিবেশ অজান্তেই অধিক মনোযোগী করে ফেলে তাদের।
দু একটা অতিউত্সাহী পাখি কাছাকাছিও চলে আসে কখনো কখনো। দুজনের মাথার উপর দিয়ে ঘুরপাক খেয়ে দেখে নিতে চায় দুর্বোধ্য খেলাটার সারমর্ম অথবা সারাংশ। একটা দুটো করে সদস্য বাড়তে থাকে উড়ন্ত পাখিদলের। পাখির ডানায় হয়তোবা আটকে যায় বিষণ্ণতার রং। ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া ঘাসগুলো বুঝিবা পাখির ছায়ায় আবারো সবুজ রং ফেরত পাওয়ার জন্য তোড়জোড় জুড়ে দেয়। একটা দুটো ঘাসফুলও উকি দেয় দ্বীপের বুকে।
যেন বসন্ত আনার দৃঢ় প্রত্যয় ঘাসফুলের।
ঘাসফুলের বনে জোনাকপোকার দল ভিড়তে শুরু করে যেদিন সেদিনই আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত্যুদেবতা মুখ ফিরিয়ে নেয় দ্বীপ থেকে।
একই সঙ্গে বিষণ্ণ কুয়াশার চাদর গলে ঢুকে পরে উষ্ণ জোছনা। স্বর্গীয় আবহের ষোলকলা পূর্ণ হয়।
বোর্ডের দু'প্রান্তে থাকা দুজন অবাক হয়ে জোছনাবৃষ্টি দেখে, জোনাকপোকার গতিবিধি লক্ষ করে মুগ্ধ চোখে, রাতপাখিদের সুরময় সংগীতের সাথে সুর মিলিয়ে একে অন্যের দিকে তাকায়। চোখজুড়ে ভর করে রাজ্যের মুগ্ধতা।
উত্সুক জনতার মধ্যে কেউ কেউ যখন দ্বীপটাতে আসতে শুরু করল আর এসেই দ্বীপের সাম্যাবস্থা নষ্ট করতে শুরু করল তখন থেকে দু'পক্ষের মনোযোগ বিঘ্নিত হতে শুরু করল। উত্সাহীদের কেউ কেউ আবার নিতান্তই শখের বশে জুয়ায় বসে যায়। পক্ষ বিপক্ষের দ্বন্দ উসকে দেয়ার পায়তারা করে। সমর্থিত পক্ষের বিজয় ছিনিয়ে আনতে চায় যেন অনেকটা ক্রোধোন্মত্ত হয়ে। বিপক্ষ দলের খেলুড়ের দিকে ছুড়ে দেয় দুয়োধ্বনি।
স্বাভাবিকভাবে মনঃসংযোগ ঘটাতে না পেরে ভুলভাল করতে থাকে তারা উভয়ই।
বোর্ডের বিভিন্ন অংশে এর ছাপ পড়ে।
কোন একজন খেলুড়ের আক্রমণাত্মক ভঙ্গি অপরপক্ষ লঘুকরণের দায়িত্ব নিয়ে নেয় অজান্তেই।
এভাবে চলেও যাচ্ছিল কিন্তু শেষ রক্ষা আর হল কই?
৩
তারা দুইজন।
বসে আছে সদ্য ধ্বংসপ্রাপ্ত একটা সাদাকালো বোর্ডটার দুইপ্রান্তে।
অনেকদিন ধরেই তারা খেলে আসছিল ক্লান্তিহীন, হৃষ্টচিত্তে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করবার চেষ্টায় ছিল তা মনে হয়নি একবারও। একে অন্যকে জিতিয়ে দেয়ার চেষ্টাও করেছিল কখনো কখনো। নিতান্তই করুণা ভেবে দুপক্ষের মধ্যেই হয়তো একটা মানষিক অনুশোচনা ভর করেছিল। তাই পরক্ষণেই আবার সামলে উঠেছে। এমন ভান করেছে যেন প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ একটি খেলায় অংশগ্রহণ করছি, আমিই জিতব। আর হ্যা তোমাকেও দেখে নিব একহাত।
তবে আজকের অবস্থা ভিন্ন। হঠাত করেই একজন নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে। দীর্ঘসময় নষ্ট করার পর হয়তো তার শুভবুদ্ধি উদিত হয়েছে। জিতটাকে হাতের নাগালে পাওয়ার লোভ হয়তো সামলে উঠতে পারে নি, আকষ্মিক সৃষ্টি হওয়া মোহ হয়তো কাটিয়ে উঠতে পারে নি।
আরো একটা সম্ভাবনার ব্যাপারও একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না, ধৈর্য্যচ্যুতি! এটা অবশ্যই দোষনীয় না। একঘেয়েমী পেয়ে বসলে তা কাটানোর চেষ্টা করতে হতেই পারে। তাতে জয় পরাজয় নির্ণীত হওয়াটাই মুখ্য নয় বরং একঘেয়েমী কাটিয়ে উঠতে পারাটাই বিবেচ্য হওয়া উচিত।
-চেকমেট!
দু'পক্ষের একজনের চোখে রাজ্যজয়ের উল্লাস। তার চোখ প্রতিপক্ষকে শাসিয়ে বলতে চাচ্ছে তুমি পরাজিত, আর কোন মুভ নেই তোমার।
সে তাকিয়ে আছে প্রতিপক্ষের ধূলোচ্ছন্ন, ঘোলাটে কাচের চশমার দিকে। উল্লাস ছাপিয়ে বিব্রতভঙ্গি প্রকাশের ব্যর্থ চেষ্টা যে করল না তা না। কিন্তু তাতে কোন কিছুই প্রমাণিত হয় না।
পরাজিত পক্ষ নির্বাক, তার চোখে পরাজয়ের গ্লানি নেই। বরং কিছুটা হালকা অনুভব করছে। এমন ফলাফলে সে সন্তুষ্ট না হলেও অন্তত অসন্তোষ প্রকাশ করারও প্রয়োজন বোধ করছে না। মূলত পরাজিত প্রতিপক্ষ আহত হবার বদলে বিষ্মিত।
একটু লুকোচুরি খেলা যাক বরং।
অবদমিত বিষ্ময়ের পর বিজয়ী পক্ষকে অভিনন্দন জানানো সাধারণ ভদ্রতার পর্যায়ে পড়ে। হ্যাঁ, অভিনন্দিত করাটাই শ্রেয়। ভদ্রতা প্রকাশ করবার একটা যুতসই উপায় বের হয়ে আসায় কিছুটা উত্ফুল্ল মনে হয় তাকে। এটাই মোক্ষম সময় বিজয়ী প্রতিপক্ষকে অর্থপূর্ণ একটি শব্দ বা বাক্য ছুড়ে দেয়ার।
"তোমাকে প্রতিযোগী হিসেবে পেয়ে পুরো ব্যাপারটাই হয়ে উঠেছিল উপভোগ্য!"
স্থানত্যাগ করার পূর্বমুহূর্তে তাকে এও জানিয়ে দেয়া যায়, পরবর্তীতেও তোমাকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেলে আনন্দিত হব। আমি তোমার সার্বঙ্গীন সাফল্য কামনা করছি।
অথবা এরকম মঙ্গলসূচক দুটি অর্থপূর্ণ শব্দ বা বাক্য।
এটুকু ভাবতেই সে খেয়াল করল গলার নিচটা অসাড়। শব্দযন্ত্রের নাড়াচাড়ায় একটা অর্থবোধক বাক্য বের হতে গিয়েও হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। ঠিকঠাক শ্রবণ কম্পাংকে পৌছে দিতে পারছে না। হয়তো এটা সদ্য পরাজয় বরণ করবার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। নয়তো দীর্ঘ, উপভোগ্য অথবা ক্লান্তিকর, নির্বাক খেলার পর আচমকাই হেরে যাওয়ায় পরবর্তী বিষ্ময়ের ধাক্কা সামলে উঠতে না পারার ব্যর্থতা।
-ফাক ইউ।
বিজয়োল্লাসের পূর্বপ্রস্তুতিরত খেলোয়াড় এমন একটা অভিনন্দন বার্তা হয়তো আশা করে নি। তার হতচকিত ভাব কাটানোর সুযোগ না দিয়েই স্থান ত্যাগ করতে পারত পরাজিত পক্ষের খেলোয়াড়। কিন্তু সে ঠায় বসে থাকে ঠিক আগের জায়গাটাতেই।
হঠাত করেই আক্রমণাত্মক হয়ে উঠা এবং সদ্য বিজয়ী খেলুড়ের সব আক্রোশ শুকনো পাতার মত পড়ে আছে বোর্ডের আশেপাশে থাকা অন্য কোন জগতের আলোকসংবেদী পর্দায়।
অপেক্ষাকৃত কম আক্রমণাত্মক এবং হেরে যাওয়া প্রতিদ্বন্দীর চশমা ভেদ করতে পারে না তারা। তার সব মনোযোগ নিবিষ্ট, বোর্ডের দিকে। হয়তো হেরে যাবার কারণগুলো উদঘাটন করতে চায় সে। ভবিষ্যতের কোন খেলার জন্য সঞ্চিত রাখতে চায় মাত্রই হেরে যাওয়া ম্যাচটায় কৃত ভুলগুলোর অভিজ্ঞতা।
এক এক করে পিছনে নিয়ে যায় তার প্রতিটা চাল। ভাবতে থাকে কোনটা ঠিক ছিল আর কোনটা ছিল কম ঠিক।
হুম, নিজের ভুল স্বীকার করতে নারাজ সে।
নিজের অঞ্চলের দুর্বলতাগুলো ঢেকে নিয়ে অপেক্ষাকৃত সবল ব্যূহ রচনা করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিল।
৪
বিজয়ী খেলুড়ে স্বস্থান ছেড়ে উঠে দাঁড়াল। তবে চলে যাচ্ছে না, আশেপাশেই কাউকে খুজতে লাগল। এরমধ্যে একজন এসে তাকে অভিনন্দন জানাল। ঠিক কোন অংশটায় তার নৈপুণ্য ছিল চোখে পড়ার মত, কোন অংশটার বুদ্ধিদীপ্ত চাল প্রতিপক্ষের পরাস্ত হবার পথে অনেকটাই সুগম করে দিয়েছে, কিছু কিছু অংশে আরও একটু সূক্ষচিন্তা করে চললে জয়টা উপভোগ্য হত ইত্যাদি ইত্যাদি বলে চলল অনর্গল।
সবশেষে স্মরণ করিয়ে দিতে চাইল এখানেই শেষ না, আরো আরো অনেক পথ চলতে হবে তোমার। হারাতে হবে অনেক প্রতিপক্ষকে।
সে কি শুনছিল পাঁড়ভক্তের উচ্ছাসপূর্ণ বাণী? বোধহয় না। অন্তত তার চোখ দেখে তাই মনে হচ্ছিল। এভাবে না চাইতেই পাওয়া একটা জয় হয়তোবা অংকের হিসাবেই গুরুত্ব বহন করে। হয়তো তার ক্রম একধাপ উপরে নিয়ে যাবে। কিন্তু ভেতরে ভেতরে একটা পোকার উপস্থিতি কোন ভাবেই অস্বীকার করতে পারবে না। সময়ে অসময়ে ঠিকই জানান দিয়ে যাবে। কখনোই কাউকে বলা হয়ে উঠবে না, প্রতিপক্ষই জিতিয়ে দিয়েছে আমাকে। স্বরযন্ত্রের ষড়যন্ত্রে আটকে পড়ে থাকবে কথাগুলো, কোন এক গোপন, অন্ধকারাচ্ছন্ন কুঠুরীতে। প্রাত্যহিক কর্মব্যস্ততা হয়তো ভুলিয়ে রাখবে তবে অবসরে অবশ্যই সে শুনতে পাবে কিছু একটা চিত্কার করে জানান দিচ্ছে, তুমিই জিতেছিলে ভুল পথে।
পরাজিত প্রতিপক্ষ তখনো বোর্ডের সামনে বসে আছে। তার চোখ লাল। উহু হেরে যাওয়ার গ্লানি তাকে স্পর্শ করতে পারছে না। একসময়তো হারতেই চেয়েছিল সে। নিতান্তই ভদ্রতার বশে তখন গাট হয়ে বসেছিল অথচ আজ হেরে যাবার পর কেমন যেন অস্থিরতা ভর করেছে।
উল্লাসরতা প্রতিপক্ষের দিকে তাকানোর ইচ্ছেটাকে কবর দিতে গিয়েও পারে না।
আচ্ছা একবারও কি তোমার মনে হয় নি এই আমিই তোমার পাড়ভক্ত, আমি চাই তুমিই বিজয়ী হও। এইসময় এই ভাবনাটা অর্থহীন এবং কিছুটা অপ্রাসঙ্গিকও বটে। বরং ভুলগুলোকে শোধরিয়ে নেবার চেষ্টা করাটাই যুক্তিসঙ্গত। এই ভেবে আবারও বোর্ডের দিকে মনঃসংযোগ করার চেষ্টা করে সে। পরক্ষণেই ভাবে আর কোন খেলা নয় বরং এখানেই শেষ করে দেয়া যাক। বোর্ডে ইতস্তত পড়ে থাকে কিছু স্মৃতি, কখনো আনন্দের কখনো দুঃখের?
নাহ বলা উচিত কম আনন্দের। তাতে অন্তত নৈরাশ্যবাদী বলবে না লোকে। এবং পরবর্তী কোন খেলায় এখান থেকে সঞ্চিত অভিজ্ঞতা অথবা স্কিল কাজে লাগানোও যাবে।
৫
অবশেষে সময় এল বিধ্বস্ত বোর্ডটাকে ফেলে রেখে দ্বীপ ছেড়ে যাবার। বিজয়ী পক্ষ যেদিন নোঙর তুলল সেদিন পরাজিত পক্ষ সিদ্ধান্ত নিল দ্বীপটার পরিচর্যার দায়িত্ব নিবে। শুধু একবার সে বলতে পারল,
-শুভ বিদায়!
একাকী দ্বীপটার প্রান্তে দাড়িয়ে আছে লোকটা। অতলান্তিক অন্ধকার কূপের তলদেশ থেকে বুদ্বুদের মত ভেসে উঠা কিছু স্মৃতি প্রকাশিত হয়েছিল চোখ থেকে গড়িয়ে পড়া কয়েক ফোঁটা নোনতা জলে।
সমাপ্ত!
একটি কবিতার অংশবিশেষ এবং অতি অবশ্যই জীবনানন্দ দাশের
আমি
রাতের বাতাস আসে
আকাশের নক্ষত্রগুলো জ্বলন্ত হয়ে উঠে।
যেন কাকে ভালোবেসেছিলাম-
তখন মানবসমাজের দিনগুলো ছিল মিশর-নীলিমার মতো।
আর তত্পর হাত জেগে রয়েছে সৃষ্টির
অনাদি অগ্নিউসের প্রথম অনলের কাছে আজও
সমস্ত শরীর আকাশ রাত্রি নক্ষত্র উজ্জল হয়ে উঠেছে তাই,
আমি টের পাই সেই নগ্ন হাতের গন্ধের
সেই মহানুভব অনিঃশেষ আগুনের
রাতের বাতাসে শিখা-নীলাভ এই মানবহৃদয়ের
সেই অপর মানবীকে।
৭০টি মন্তব্য ৬৮টি উত্তর
পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন
আলোচিত ব্লগ
গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ
একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন
কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।
ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন
দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ
মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!
বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন