somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কতটা গতির দরকার? কতটা গতিতে চললে রিকশা ঢাকায় চলতে পারবে?

২৮ শে মার্চ, ২০১১ রাত ৯:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
যানজট একটি আমাদের সবার জন্য সমস্যা আর এই সমস্যাকে পুজিঁ করে দেশি বিদেশি ব্যবসায়ীক শ্রেনী নেমে পড়েছে ব্যবসায়। জনগণকে জিম্মি করে তারা বছরের পর বছর ঢাকায় জনগণের টাকায় কিংবা ঋণের টাকায় বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। কিন্তু যানজট কমেনি। শুধু প্রকল্পের বৃদ্ধিই ঘটছে ধারাবাহিক ভাবে। এই রকম অনেক প্রকল্প নিয়েই সুনিদিষ্ট তথ্যসহ তাদের ব্যবসার কথা জনগন ইতিমধ্যে জেনেছে।

গতকাল ঢাকার যাতায়াত ব্যবস্থার সাথে জড়িত একটি বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তার কথা আজ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছে। তিনি রিকশা নিয়ে কথা বলছেন রিকশা ধীর গতি সম্পন্ন যান। আর তাই মহাসড়কে রিকশা উচ্ছেদ করতে হবে। কিন্তু অতীতেও বিভিন্ন রাস্তা থেকে রিকশা উচ্ছেদ করা হয়েছে ফলাফল শুভ হয়নি। যাত্রীদের যাতায়াত সময়-ব্যয় বৃদ্ধি, পরিবেশ দূষণ, যানজট বৃদ্ধি, পরিবহণ কোম্পানীগুলোর পরিবহণ পরিচালনার ব্যয় বেড়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত একটি পোস্ট দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম কিন্তু পোস্টটি বড় হয়ে যাবে ভেবে কয়েকটি পোস্ট দিব ঠিক করলাম। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের পোস্ট " রিকসা কি আসলেই ধীর গতি সম্পন্ন যান‍"আজ এই ফোরামে এই বিষয়টি নিয়ে লিখছি আমাদের সবার যাতে রিকসা ধীর গতি সম্পন্ন যান এই সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা পরিবর্তন ঘটে। রিকশা উচ্ছেদের অন্য কোন কারণ থাকতে পারে কিন্তু ধীর গতি সম্পন্ন যান তা উচ্ছেদের যুক্তি সই কারণ নয়।


রিকসা কি আসলেই ধীর গতি সম্পন্ন যান?
যখন অধিকাংশ যান্ত্রিক যানবাহন অযান্ত্রিক যানবাহন অপেক্ষা গতিশীল, তখন গতি আসলেই বিবেচ্য একটি বিষয়। কিন্তু জনবহুল শহরের প্রেক্ষিতে গতির বিষয়টি একটু ব্যতিক্রম। ঢাকা শহরের বৈশিষ্ট হচ্ছে এখানে স্বল্প পরিমান জায়গায় অনেক লোক চলাচল করে থাকে, ফলে স্বাভাবিক ভাবেই সৃষ্টি হয় যানজটের। ঢাকার মতো বিশ্বের অন্য শহরগুলোতেও এই সমস্যা বিরাজমান। অযান্ত্রিক যান না থাকা এবং ব্যয়বহুল রাস্তা নির্মাণের পরও বিশ্বের অধিকাংশ শহর থেকে এ সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না।

মধ্য লন্ডনে গাড়ির গতিবেগ ঘন্টায় ৮ কিঃ মিঃ যা ১৮৮০ সালে ঘোড়ার গাড়ির সমপরিমান। কখনো কখনো এ গতি সাইকেল থেকেও ধীর এবং কখনো কখনো পায়ে হেটে চলাচলের সমপরিমান হয়। বাইসাইকেলে ঘন্টায় ১০-১৫ কিঃমিঃ বা তার চেয়েও বেশি যাওয়া যায়। ঢাকা যে সকল রাস্তায় অনেক আগেই অযান্ত্রিক যান নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেখানে এখন অসহনীয় যানজট বিরাজ করছে এবং সার্বিক যাতায়াতের সময়সীমাও বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় যান্ত্রিক যানবাহনে শহরের দূরবর্তী এলাকায় যেতে রিকসা/বাইসাইকেলের প্রায় সমান সময় প্রয়োজন হয়। সেখানে রাস্তায় যেহেতু কোন অযান্ত্রিক যানবাহন নেই সেহেতু সেখানকার রাস্তার গতিহীনতার জন্য অযান্ত্রিক যানবাহনকে দায়ী করা যাবে না। অর্থাৎ যান্তিক যান নিষিদ্ধ করেও ভাল কোন সুফল পাওয়া যাবে না। বরং অধিক যান্ত্রিক যানের কারণে এই রাস্তাগুলোতে অত্যাধিক হারে বায়ুদূষণ ঘটছে এবং যাতায়াতের অনুপোযোগি হয়ে পড়ছে।

মিরপুর রোড, ভিআইপি রোড থেকে রিকশা উচ্ছেদ করা হয়েছে কিন্তু যানজট আগের চেয়ে বেড়েছে। তাহলে রিকশার সাথে যানজটের বিষয়টি আমাদের কাছে ভুল ভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে? সমস্যা অন্য জায়গায় একটু লক্ষ্য করুন থাইল্যান্ডের ব্যাংকক, ফিলিপাই, ইন্দোনেশিয়া যানজটপূর্ণ শহরগুলোর কথা। তাদেরই বিভিন্ন পরামর্শ এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে শহরগুলো যানজটের শীর্ষস্থান অধিকারী শহর হিসেবে নাম লিখাতে পেরেছে। তারা সেখানেও একই ভাবে রিকশা উচ্ছেদ করেছে। ওখানে ব্যর্থ যানজট সমাধানে কাল্পনিক চেষ্টায় এখন যানজট আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু ব্যবসা বেড়েছে তাদে কয়েক গুণ। আমাদের দেশেও একই র্ফমুলা প্রয়োগ করা হচ্ছে।

আমাদের এখনই সোচ্চার হতে হবে নয়তো আমাদের প্রিয় ঢাকা ব্যাংককের মত যানজটপূর্ণ শহর হবে। ব্যাংককে মোট্রে রেল, স্কাইরেল, ফ্লাইওভার, নৌপথ সবই আছে। সাথে আছে প্রচন্ড যানজট। পাশপাশি ওদের ব্যবসা কিন্ত প্রতিবছরই বাড়ছে। আসুন চিনে নেই তাদের নয়তো আমাদেরও যানজট আর যানজট শব্দের ফাঁদে ফেলবে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করবে। কিন্তু যানজট থেকে মুক্তির স্বপ্ন আমাদের স্বপ্নই থাকবে।

ছবিটি যানজট নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে রিকশা উচ্ছেদের জন্য একটি ঋণবাণিজ্যিক সংস্থা আমাদের দেশের নীতি নির্ধারনী সংস্থাদের সরবারহ করেছেন। আর কর্তারা যানজট নিরসনের কোন যুতসই কাজ না করে শুধুমাত্র সেই প্রতিষ্ঠানের সরবারহকৃত ম্যাপের বাস্তবায়নে উঠে পড়ে লেগেছেন। যা বাস্তবায়ন হলে ঢাকায় যানজট বৃদ্ধি পাবে তা তাদেরই গবেষণায় সুস্পষ্ট। আমরা কোন পথে যাব তা আমাদের নির্ধারণ করতে হবে।
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×