আশে পাশের সবাই ক্যান্সারে আক্রান্ত। ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী যারা পৃথিবীতে আরো কিছু সময় বেঁচে থাকার তাগিদবোধ করেন। তাদের মিলন মেলা এই ........... ক্যান্সার বিশেষায়িত হাসপাতাল। সবারই আরো কিছু সময় বাঁচার চেষ্টা। ৮০ বছরের বৃদ্ধা ডেভিন থেকে ১৮ মাসের জুবায়ের সবারই বাঁচার চেষ্টা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের শ্লোগান adding life to years.
ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর কতবছর, দিন, ক্ষণ জীবনের সাথে যুক্ত হবে কেউ নিশ্চিত নয়। তবুও হাসপাতালে ঢুকার সাথে সাথে সবার প্রত্যাশা জীবনে আরো কিছু সময় যুক্ত হবে
পেশায় নাবিক, ৮০বছরের ডেভিন জীবনের ৩০বছর পার করে দিয়েছেন সাগরে সাগরে বন্দরে বন্দরে। যখন ডাঙ্গায় উঠলেন তখন বয়স ৬০ ছুঁয়েছে। প্রেম করে বিয়ে করেছেন কেনিয়ান akoth কে। তার ধারণা দুনিয়ার অন্যতম সুন্দরী akoth। আমি akoth উচ্চারণ করতে পারছিনা। ফলে সে বার বার চেষ্টা করছে আমাকে শিখাতে। তার ধারনা এত সুন্দরী একটা মেয়ের নাম এতটা অশুদ্ধ ভাবে উচ্চারণ করা নেহাতি অন্যায়। অবশেষ আমাকে কাগজে লিখে উচ্চারণ শেখায়।
গল্প করা ছাড়া আমাদের কোন কাজ নেই, আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত। একজন মানুষ কতটা মজার গল্প করতে পারে, ডেভিনকে না দেখে বুঝার উপায় নেই। আমরা যে পার্কে বসে গল্প করছি। সেখানে তেমন কোন মানুষ আসে না। অল্প কয়েকজন বুড়ো বুড়ি বসে আছেন। সন্ধ্যা নামে নামে। আমি্ ডেভিনকে তাদের কটেজের দিকে এগিয়ে দিয়ে, ফিরে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
ডেভিন বলল তুমি থাকো আর অল্প কিছু সময়। akoth চলে এলো মনে হয়। সুন্দরী akoth এর সাথে এক কাপ চা পান করার সুযোগ থেকে তোমাকে বঞ্চিত করতে চাই না। হা: হা: হা: হা:
সূর্য ডুবার পর পরই সারাদিন কোথায় ঘুরে এক বিশাল কেনা কাটার স্তুপ নিয়ে akoth ফিরে এলো। akoth সম্পর্কে এত সময় যা যা গল্প শুনেছিলাম তার সাথে কোন মিল পাচ্ছি না। ১৫০ কেজি অধিক (আনুমানিক) akoth মনে হল পুরো শরীরটা নিয়ে চলতে পারছে না।
ডেভিন তার akoth সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। akoth আমার জন্য চায়ের অর্ডার দিলেন। আমরা কটেজের সামনে বসে চা পান করছি।
ডেভিন আবার গল্প শুরু করে । সব গল্প তার বউকে নিয়ে। বেশির ভাগ কেনিয়ান নামের অর্থ খুবই বাজে হয়। মাঝে মাঝে কোন অর্থই হয় না। কিন্তু akoth নামের অর্থ বর্ষায় কিংবা বৃষ্টির দিনে জন্ম নেওয়া কন্যা। আমি খোদা বিশ্বাসী নই। তাই পরকাল নিয়ে আমার কোন চিন্তা নেই। সব চিন্তা ইহকাল নিয়ে। আমি চাই এই সুন্দরী বৃষ্টিকন্যার সাথে জীবনের আরো কিছু সময় পার করে যেতে। বলতে পারো এই বৃষ্টিকন্যার সাথে থাকার লোভে আমি চিকিৎসা করাতে চলে আসলাম।
ডেভিনের ধারণা এই যাত্রায় সে বেঁচে যাবে। কারণ বৃষ্টিকন্যা তার সাথে আছে। আর akoth এর বিশ্বাস ঈশ্বর । সব ঈশ্বর জানে। ঈশ্বরই তার মঙ্গল করবে।
আমি ডেভিনের কাছ থেকে আগামীকালের বিকেলের গল্পের দাওয়াত। akoth কাছ থেকে আমার জন্য ঈশ্বরের প্রার্থনা নিয়ে হোটেলের দিকে রওনা হলাম।
২০১৪ সালে আমি গিয়েছিলাম এক ক্যান্সার হাসপাতালে সেখান থেকে আমার বন্ধুকে লেখা চিঠির অংশ বিশেষ..
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১১:৫৬