আগামীকাল সকাল ১০.০০ আমরা বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ৭১-৭২ ইস্কাটন গার্ডেন, ঢাকা অফিসে যাব। মানুষ হত্যার এই মিছিল বন্ধের দাবীতে। আপনিও আসুন। যদি খুব ব্যস্ত থাকেন। তবে একটা ফোন দিন কিংবা আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুই লাইন লিখুন “কার ভয়ে ভীতু রাষ্ট্র? ট্যানারী বর্জ্য দিয়ে পোল্ট্রি ফিড তৈরিকারকদের রুখতে ভয় পায়?
সাভারের ভাকুর্তার মোগরাকান্দির গ্রামের চকের একটা বড় অংশ ২০ জন ট্যানারির বর্জ্য দিয়ে পোল্ট্রি ফিডের কাঁচামাল তৈরি মালিকের দখলে ।
যদি ভাবেন এই সমস্যা শুধুই মোগরাকান্দা গ্রামবাসীদের। আপনি আমি নিরাপদ। তবে ভুল ভেবেছেন। আমার আদরে শিশু কিংবা আপনি যে পোল্ট্রি মুরগী বা মাছ খাচ্ছেন। তার কোনটা দেহে যে মোগড়াকান্দা এই ভয়ানক বিষাক্ত উপাদান নেই, তার প্রমাণ কি? মোগড়াকান্দা থেকে ছড়িয়ে পড়ছে দেশের কোটি কোটি মানুষের দেহে।
ট্যানারির বর্জ্যে ব্যাপক জনস্বাস্থ্যেও জন্য ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে। চামড়া প্রক্রিয়াজাতের সময় ১৩২ ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়।ট্যানারির বর্জ্য দিয়ে তৈরি খাবার মাছ ও মুরগিকে খাওয়ানো হলে মাছ ও মুরগির শরীর বিষাক্ত হয়।ভয়ঙ্কর এসব কেমিক্যাল ফুড চেইনের মাধ্যমে নানাভাবে মানবদেহে প্রবেশ করছে। ক্রমিয়াম এবং সীসা মানবদেহে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি প্রবেশ করলে মানুষের লিভার, কিডনী, ব্রেন ও নার্ভাস সিস্টেম অচল হয়ে যায়। ক্রমেই নারীর প্রজননক্ষমতাও ধ্বংস হয়ে যায়।
২০১১ সালের ২১ জুলাই বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে তৎকালীন একটি হাইকোর্ট বেঞ্চ এক মাসের মধ্যে বর্জ্যকে মাছ-মুরগির খাবার তৈরির কারখানা বন্ধের নির্দেশ দেয়।হাইকোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীরা লিভ টু আপিল করেন। সেই লিভ টু আপিল আজ খারিজ করে দেন। এরপর ফের আবেদন (আপিল ফর রেস্টোরেশন) করে। যে আবেদন রবিবার ৯ এপ্রিল ২০১৭ খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ট্যানারি বর্জ্য থেকে পোল্ট্রি ও মাছের খাদ্য তৈরি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অথচ সেই নিষেধাজ্ঞা না মেনে দেদারসে ট্যানারি বর্জ্য থেকে তৈরি হচ্ছে পোল্ট্রি ফিড।
প্রশ্ন হচ্ছে আদালতের নিষিদ্ধ তারপরও কিভাবে চলছে এই কাজ?
উত্তর একটাই আমার ভীতু? আমার আমাদের দেহকে কোম্পানীর মুনাফার জন্য তুলে দিয়েছি। মুনাফালোভী এই কোম্পানীগুলো আপনি আমি এবং আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে নিরবে হত্যা করছে।
কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবহিত করার পর থেমে নেই ট্যানারীর বর্জ্য থেকে পোল্ট্র ফিডের কাঁচামালা তৈরির কার্যক্রম। মোগরাকান্দির গ্রামের সেই ক্ষমতাশালীদের কাছে কতদিন জিম্মি থাকবেন আপনি। স্বাধীনতার পর আর কতদিন আপনি সমর্থন দিবেন এই গণহত্যা?
আসুন প্রতিবাদ করি। রুখতে হবে এই মুনাফালোভীদের।
আগামীকাল সকাল ১০.০০ আমরা বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ৭১-৭২ ইস্কাটন গার্ডেন, ঢাকা অফিসে যাব। মানুষ হত্যার এই মিছিল বন্ধের দাবীতে। আপনিও আসুন। যদি খুব ব্যস্ত থাকেন। তবে একটা ফোন দিন কিংবা আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুই লাইন লিখুন “কার ভয়ে ভীতু রাষ্ট্র? ট্যানারী বর্জ্য দিয়ে পোল্ট্রি ফিড তৈরিকারকদের রুখতে ভয় পায়?
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:১১