কার কথা লিখব? অসংখ্য প্রিয় মুখ এসে ভিড় করে। আমি শুধু এইটুকুই বলতে পারি তাও আর এক জনের কাছ থেকে ধার করে “ গ্রহন করেছ যত ঋনী তত করেছ আমায়”।
রাজা তোমার কি মনে পড়ে ইউনির্ভাসিটির সেই ক্লান্ত দুপুরগুলো? আমার মুখের দিকে তাকিয়ে যখন বুজতে আমি খাইনি জোর করে ধরে নিয়ে গেছ কোন হোটেলে? টাকা নেই মাসের শেষে বইর মধ্যে পেয়ে গেছি প্রয়োজনীয় টাকা। আমার চোখে পানি এসে যেত, তুমি দেখ নি রাজা, দেখলে কিনা বকাই দিতে এই ভয়ে।
ব্যাঙা মাসুদ এখন লন্ডনে, মাসুদ তোর কি মনে আছে ক্লান্তিহীন ভাবে তুই আর আমি কত দিন কত জায়গায় টিঊশনির জন্য ভাইবা দিয়েছি? তোর কত অক্লান্ত পরিশ্রম ছিল কি ভাবে আমাকে একটা ভাল টিঊশনি পাইয়ে দেয়া যায়।
মেরাজ, সেই কক্সবাজারে ফিল্ড ট্যুরে আমি যাখন বাসে বসা ছিলাম, আর সবাই কেনা কাটায় ব্যাস্ত তুমি অতি সংগোপ্নে আমাকে ১০০ টাকা দিয়েছিলে, বলছিলে যাও পছন্দ মত কেনাকাটা কর, মেরাজ টাকাটা আমি কিন্ত এখনো ফেরত দেইনি, বাপেক্সে বসে কি একবারো সেই সব দিনের কথা মনে পড়ে। টাকাটা হয়ত সামান্য কিন্ত ওই সময়টা ছিল অসামান্য।
অসিত বরিশালে আমি যখন প্রচন্ড হতাশায় নিমজ্জিত, তুই আমাকে ফোন করে ঢাকায় এনে আমাকে তোর পাওনা চাকুরী দিয়ে দিয়েছিলি।এত ভালবাসা আমি কোথায় রাখি।
খালেদ তোর সময় তুই ছিলি ঢাকা ভার্সিটির অন্যতম রাজনৈতিক অস্ত্রবাজ। পেপারে প্রথম পেজে ফাইট করা অবস্থায় তোর ছবি আসত অস্ত্র হাতে, কিন্ত আমি কি করে ভূলি আমার বাবা মারা যাবার পর আমার সাথে কোন কথানা বলে এক সাথে চোখের পানি ফেলছিস? কোন স্বান্ত্বনা না। কোন কথা না। নীরব সহমর্মিতা। কত অসাধারন অন্তরিক প্রকাশ একজন সমাজ বিরোধী অস্ত্রবাজের। ভাললাগে যখন জানি তুই একটা বিরাট নাম করা ব্যাঙ্কের অনেক বড় পদে কাজ করছিস।
রাজুর কাছ থেকে আমি আজ পর্যন্ত কিছু চেয়ে না শুনিনি।। বলতে পারিস রাজু আমি তোকে কি দিয়েছি?। কিছু দেই বা নাদেই আজীবন কিন্ত চেয়েই যাব।
রুবেল ভাই, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের ২১৯ নং রুমে আপনি আমি মিল্টন ভাই, পাগলা ডিঊক, খালেদ, একটা পরিবারের মত বাস করতাম। আপনি আজ অনেক উচ্চপদস্থ অফিসার। অথচ কি অনায়াসে আপনার ভালবাসা এখনও টের পাই।
রুনু, চা বাগানের নীরবতার সাথে তোর মৌনতার প্রতিযোগিতায় কে জিতল? আমার বিশ্বাস তুই জিতছিস। তোর নিরবতার সাথে নিস্পলক চাহনি সবার মনে আতংক তৈরী করত। অপাত মৌনী রুনুর সর্বক্ষনের সাথী ছিল ভয়ংকর সব অস্ত্র সেই সময়। আপাত মুডি রুনুর চমৎকার মনের প্রকাশ আমি দেখেছি।
নাজমুল ভাই আপনি না থালে আজো বলি আমার ইউনির্ভাসিটির চৌকাঠ পেরোতে হত না। আপানার প্রেরনা জোগান কথা বার্তায় আমকে সব সময় ব্যাতিব্যস্ত রাখত একটু ভাল রেজাল্ট করার অনুপ্রেরনায়।
৫২৩ এর তাপস কোথায় তুই? খুব অল্প বয়সেই জীবনের খ্যাতির শিখরে পৌছে গেছিস। আমি গর্ব করি তাপস কে নিয়ে নিজাম ভাই কে নিয়ে
দু এক জনের কথা লেখতে যেয়ে আমি দেখি অবিচার করছি বাকী হাজারজনের উপর সব সময় যেমন করি। তারপরও আমি বিশ্বাস করি আমার ভালবাসার জনেরা জানে আমার স্মৃতির দৈন্যতা আছে কিন্ত মনিকোঠায় ঠিকই তারা জ্বল জ্বল করছে।
বড় মানুষদের সান্নিধ্য আমি পাইনি, বিশেষ করে পত্রিকার পাতায় যাদের নাম সবসময় দেখা যায়। তবে এই রকম কিছু অতি সাধারন মানুষ দেখে অসাধারন মানূষদের সান্নিধ্যর অভাব বোধ করিনি। বিধাতার অসীম করুনা চমৎকার সব মানূষগুলোর সাথে আমার পরিচয় ছিল।