somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শের শায়রী
অমরত্বের লোভ কখনো আমাকে পায়না। মানব জীবনের নশ্বরতা নিয়েই আমার সুখ। লিখি নিজের জানার আনন্দে, তাতে কেউ যদি পড়ে সেটা অনেক বড় পাওয়া। কৃতজ্ঞতা জানানো ছাড়া আর কিছুই নেই।

ভয়নিখের রহস্যময় প্রাচীন পান্ডুলিপি, এখনও রহস্যের জন্ম দিচ্ছে

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পান্ডুলিপি কথাটা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ঊঠে ধুলিধুসর কত গুলো কাগজের সমষ্টি – যা একজন লেখকের বহু সাধনার ফসল, একজন প্রাকাশকের কাঙ্খিত জিনিস অথবা একজন পাঠকের কৌতুহল, প্রচীন পান্ডুলিপি সংগ্রহ করা বা সংরক্ষন করা অনেকের পেশা। পান্ডুলিপি কিনে চড়া দামে বিক্রি করা এক লাভজনক ব্যাবসাও বটে ।কিছু কিছু পান্ডুলিপি ঘিরে তৈরী হয়েছে অনেক অনেক রহস্যময়তা, গল্প গাথা

তেমনি এক পান্ডুলিপি “ভয়নিখের পান্ডুলিপি। এই পান্ডুলিপি রহস্যময়তার শেষ নেই। ভয়নিখের পান্ডুলিপি পাওয়া যায় আজ থকে ৮৫ বছর আগে। ভয়নিখ ছিলেন নিউ ইয়র্ক শহরের এক পুরানো বই ব্যাবসায়ী। তার নেশা আর পেশা ছিল পুরানো পান্ডুলিপি সংগ্রহ করে পরে সুযোগ মত চড়া দামে বিক্রি করা।এ ভাবেই পুরানো বইর মধ্যে থেকে হঠাৎ করেই ভয়নিখ পেয়ে যান আলোচ্য পান্ডুলিপি। প্রথমে তিনি বুজে উঠতে পারেননি যে ওটা এত আলোচার বিষয় হবে। বিক্রি করে দিলেন। কিন্তূ হাতছাড়া হবার পর বুজতে পারেন এর মূল্য। কিন্তূ ততদিনে রাগে দঃখে মাথার চুল ছেড়া ছাড়া আর কিছুই করার ছিলনা।

তবে ভয়নিখে লাভের মধ্যে লাভ হয়েছে একটাই পান্ডুলিপির সাথে তার নাম চিরদিনের জন্য জড়িয়ে গেছে। রহস্যময় এই পান্ডুলিপি নিয়ে এত গবেষনা আলোচনা হয়েছে যা বলার মত না। কিন্তূ এত গবেষনা করেও এর মূল রহস্য আজ পর্যন্ত কেউ বের করতে পারেনি। সম্ভব হয়নি এর মুল রহস্য উদ্বার করার। সৃষ্টি হয়েছে নানা গুজব।

গুজবের একটিহ হল – পান্ডুলিপিটি সে সব রহস্যময় আলকেমিদের কোন একজনের যারা অপরসায়নের মাধ্যমে সোনা তৈরীর চেষ্টা করতেন, এবং পান্ডুলিপিতে সেই সোনা তৈরীর গোপন কথা বলে দেয়া হয়েছে। আবার কেঊ কেঊ মনে করতেন পান্ডুলিপিতে জোতিবিদ্যার কথা লেখা আছে- মহাকাশ বিদ্যার গো্পন রহস্য এই পান্ডুলিপিতে লেখা আছে বলে কেঊ কেউ নিঃসন্দেহ। আবার একদল মনে করেন পৃথিবী তৈরীর গুপ্ত কথা এখানে লেখা আছে।যারা আত্না পরোলৌকিক তা নিয়ে নাড়াচাড়া করেন তাদের জোড় দাবী এই পান্ডুলিতে আত্নার গোপন রহস্য, মৃত্যুর ওপারের কথা বলা হয়েছে, আরো লেখা আছে কিভাবে আত্নাকে ডেকা আনা যায় তার পূরো গোপন প্রক্রিয়া।

রহস্য আরো ঘনীভূত হল যখন গবেষনার পর মোটামুটি জানা গেল পান্ডুলিপিটি সত্তরের দশকের বিখ্যাত মধ্যযুগের ইংরেজ রজার বেকনের। বেকন যেহেতু নিজেই রহস্যময় ব্যাক্তি হিসাবে পরিচিত ছিলেন আর নিজেও অনেক রহস্যময়তার জন্ম দিয়েছেন। মধ্যযুগের এই পন্ডিত নাড়াচাড়া করেননি এমন কোন শাখা নেই। পদার্থবিজ্ঞান, গনিত, অপরসায়ন, চিকিৎসা বিজ্ঞান, ভৌত বিজ্ঞান, জোতিষশাস্ত্র সর্বোপরি আধুনিক বিজ্ঞানের এমন কোন শাখা নেই যা নিয়ে তিনি ভাবেননি। বিজ্ঞানের বর্তমান অনেক আবিসস্কার তিনি সেই সত্তর দশকে লিখে রেখে গেছেন তার “মিরাবিলিস” নামক বইয়ে। যেগুলোর অনেকগুলোই পরবর্তিকালে সত্যি বলে প্রমানিত হয়েছে। অনেক ভবিষ্যত বানী করছে নস্ত্রাদামুর মত যা মিলে গেছে। তিনি যে আত্নার সাথে কথা বলতেন এবং তাদের কাছ থেকে ভবিষ্যতের কথা শুনতেন এ কথাও সমসাময়িক অনেকের লেখায় আসছে। আলকেমিষ্টদের সোনা তৈরীর কথা তিনি বিশ্বাস করতেন।

নানারকম বিস্ময়কর ক্ষমতার অধিকরী রজার বেকনের পান্ডুলিপি পাওয়া গেছে শুনে নড়েচড়ে বসলেন গবেষকরা এর অর্থোদ্বারের জন্য। কিন্ত হাজার চেষ্টা করেও তারা “ক” অক্ষর ও বুজতে পারলেন না। কেননা পান্ডুলিপিতে ব্যাবহার করা হয়নি এমন কোন বিষয় নেই। সংখ্যা, ফুল, ফল, জ্যামিতিক নকশা, গ্রহ নক্ষত্র ছবি থেকে পদার্থ, আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রের এ হেন বিষয় নাই যা তিনি ওই পান্ডুলিপিতে লিখে যাননি। এক মহাদূর্বোধ্য ধাধা।

কিন্তু এই ধাধা দেখেও থেমে থাকলেন না গবেষ্করা, অনেক চেষ্টা চরিত্রর পর যা জানা গেল পান্ডুলিপিটির মূল মালিক ছিলেন রোমান সম্রাজ্যের দ্বিতীয় সম্রাট রুডলফ। রুডলফ জানতেন এটি রজার বেকনের লেখা। তাই তিনি তা যত্নের সাথে সংরক্ষন করেন। ১৬১২ সালে সম্রাট দ্বিতীয় রুডলফ মারা গেলে অনেক হাত ঘুরে সেটি প্রাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিখ্যাত বিজ্ঞানী মার্কাস মার্কির হাতে আসে। তিনি তা অত্যান্ত যত্নের সাথে সংরক্ষন করেন। ১৬৬৬ সালের কথা । মার্কির শিক্ষা গুরুবিখ্যাত বিজ্ঞানী অ্যামেনসিয়াস কির্চার কে মার্কির একটি চিঠি থেকে স্পষ্ট বুজা যায় পান্ডুলিপিটি সত্যি রজার বেকনের।

এরপর ইতালির রোম থেকে ১৬ মাইল দূরে সিসোরোর প্রাসাদের ধবংসাবাশেষের মধ্যে থেকেই সম্ভবত আত্নপ্রকাশ করে।সুযোগ সন্ধানী ভায়োনিখের দূর্দান্ত নেশার কারনে ওটা স্বাভাবিক ভাবে তার হাতে আসে। অবশ্য প্রচুর টাকার নিলামে। ভয়নিক ওটা বৈধ ভাবেই মনড্রাগন কলেজের কাছ থেকে কেনে ১৯১২ সালে।

ভয়নিখের এই রহস্যময় পান্ডুলিপি নিয়ে অতিসাম্প্রতিক এক গবেষনায় পান্ডুলিপি গবেষক ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের রবার্ট ব্রুমবাও আবিস্কার করেন এতে আলকেমীর ওপর বিক্ষিপ্ত কিছু কথা ও আধ্যত্নিক কিছু জটিল সংকেত আছে। যার অনেক কিছুই তিনি বুজেননি। সম্ভবত অমরত্বের একটা ব্যাপারেও আভাস দেয়া আছে। এত কিছুর পর ও কম্পুটারের এই উৎকর্ষতার যুগেও ভয়নিখের এই পান্ডুলিপি এখন ও রহস্যের আধার।

সূত্রঃ
Click This Link
http://www.world-mysteries.com/sar_13.htm
Click This Link
Click This Link
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১৩ ভোর ৬:৪৬
২৯টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×