somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গেন্তিং- ২

১০ ই মে, ২০১৩ সকাল ১০:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




ক্যাসিনোতে বাচ্চারা নিষিদ্ধ তাই আমাদের ও সেখানে বেশিক্ষন থাকা হলো না । একটু ঘুরে চলে এলাম । গেটিং এখন সব মিলিয়ে যেন গোলক ধাধার মত । হোটেল, ক্যাসিনো, থ্রিডি মুভি দেখার ব্যবস্থা ছাড়াও এখানে আছে খাবারের দোকান, সুভ্যেনির সপ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় বহু জিনিষের দৃষ্টি নন্দন দোকান । যেমন বাহারী পন্য তেমন আকর্ষনীয় প্রদর্শনের ব্যবস্থা। মূল বিনোদনের দুটো ভাগ ইনডোর ও আউটডোর স্পোর্টস, হাঁটতে হাটতে ও ঘুরে দেখতে দেখতে বাচ্চারা একটু ক্লান্তও হয়ে গেছে মনে হলো । পানি সব সময় সাথে আছে এবং কিছু খাবারও নিয়েছি প্রয়োজনে লাগে ।

ম্যাপ ও ডাইরেকশন বোর্ড দেখে ইনডোর স্পোর্টস এর জায়গায় গেলাম । বাচ্চারা কয়েকটা রাইডে চড়ে মজা করল। আলাদা টিকেট কেনার ব্যবস্থা । এর পর রাস্তা চলে গেছে আউটডোর স্পোর্টস এর জায়গায় । এখানে বিশাল গেইট, কাউন্টারে নানা রকম কার্ডে ডিসকাউন্টের ব্যবস্থা এবং ভেতরে ঢোকার টিকেট বেশ কয়েকটা রাইডের ব্যবস্থা আছে । রোলার কোস্টার ও অন্যান্য অনেক রোমাঞ্চকর নতুন নতুন রাইড এখানে আছে । বেশ বৃষ্টি হচ্ছিল । সকাল থেকে ঝমঝমে বৃষ্টি। এতক্ষন টেরই পাইনি যে বাইরে এত বৃষ্টি হয়েছে । কৃত্রিমতা প্রকৃতি থেকে মানুষকে অনেক দুরে নিয়ে যায় ।



বৃষ্টি উপলক্ষে আউটডোর স্পোর্টস আপাতত বন্ধ । টিকেট কিনেও ফেরত দিতে হলো । সামনের দোকান থেকে সবাই মিলে আইসক্রিম খেয়ে মনে একটু অতৃপ্তি নিয়ে আবার ভেতরে এলাম । ভেতরে ছবি তুললাম বেশ কিছু, তবে গোলক ধাধার মত জায়গাটায় কোন কিনারা করতে পারিনি । কিছুক্ষণ ঘোরা ঘুরির পর থ্রিডি মুভি হলে গেলাম । শো শুরু হয়ে গিয়েছে পরের শো আরো ২/৩ ঘন্টা পর তাই দেখা হলো না । এখানে সব লেটেষ্ট থ্রিডি মুভি দেখানো হচ্ছে । বাচ্চাদের খাওয়ার সময় হলো আমাদের ও বসতে হবে । একটু দূরেই ম্যাকডোনান্ডস ও কেএফসির ফাষ্ট ফুড সপ কর্ণার দুটোই পাশাপাশি এবং দুটোতেই ভীড় । বিনোদনের এই জগতে মানুষের কাছে টাকা যেন তুচ্ছ ব¯ত্ত । এতদিনের অর্জিত/সঞ্চিত টাকা গুলো তারা নিমিষেই তুলে দিচ্ছে ক্ষণিকের আনন্দের জন্য । যেন ব্যস্ত জীবনের শেষে একটু স্ব¯িত্ত একটু ভাললাগা পেতে পারে ক্লান্ত মন । ব্যস্ততার শেষে এই বিপুল এডভেনচার অনেকের জন্য যেন আর্শীবাদ । ম্যাগডোনালডস এ বসলাম এর আগে কেএফসিতে অনেক খেয়েছে বাচ্চারা । তাদের পছন্দ মত অর্ডার দিল। কোন্ড ড্রিংকসের দাম খাবারের সাথেই রেখে দেওয়া । সবাই তাদের ইচ্ছে মত খাবার বাছাই করে নিল । সব গুলো টেবিলই পর্যটকে ভরা এবং সবাই এই খাবারের মহৎসবে যোগ দিয়েছে সানন্দে ।


খাওয়া শেষ হতে হতে বিকেল হয়ে এলো । তখন ও রাইড গুলো চালু হয়নি । তাই ঠিক হলো আরেকটু ঘুরে ফিরতি যাত্রা হবে । ঘুরাফেরা করে পুনরায় কেবল কার ষ্টেশনে, রিটার্ন টিকেট আছে ,অল্প অপেক্ষার পর কারে উঠলাম. এখন নীচের দিকে যাত্রা । দুরে আরো দুরে নীচে যেতে হবে, চেনা পথ অচেনা শহর, অচেনা পাহাড় । সব শেষে নীচের ল্যান্ডিং ষ্টেশনে এলাম । যাওয়ার সময় আমাদের ছবি তুলেছিল এখান কার ক্যামেরাম্যান এখন প্লাষ্টিকের একটা কেবল কারের মডেলের মধ্যে ছবিটা সাজিয়ে রাখা, দাম দিয়ে স্মৃতি হিসেবে ছবিটা নিলাম । সুন্দর প্যাকেটে তা হস্তান্তর হলো।

নীচে মোহাম্মদ ছিল গাড়ীতে করে কেএল ফিরতি যাত্রা । মাঝে মাঝে রাস্তায় একটু পানি জমেছে । মোহাম্মদ একটু ক্ষোভের সাথে জানালো এখানেও দুনীতি হয়েছে । ফেরার পথে মোটামুটি জ্যাম দেখলাম রাস্তায়। ঈদের বা হরি রায়ার ছুটি শেষে মানুষ ফিরছে রাজধানীতে । আমরা বুকিত বিনতাং এলাকায় প্রথমে একটা হোটেল ঠিক করলাম । তারপর ল ইত প্লাজায় এসে নামলাম । এটা ইলেকট্রনিক্স মার্কেট এবং পাশেই বুকিত বিনতাং প্লাজা । বিশাল দোকানের সমাহার, রাস্তায় দুপাশে ফুটপাত, ছোট ছোট দোকানে জেন জিনিষ নেই বিক্রি হচ্ছে না। বাংলাদেশী কয়েকজন সেলসম্যান দেখলাম । তারা জানালো ভাল আছে এখানে । খেয়ে পরে জীবন চলে যাচ্ছে । ল ইত প্লাজা মূলত ইলেকট্রনিক্স মার্কেট, অ্যাপল, স্যামসাং, সনি ও অন্যান্য সব বিখ্যাত কোম্পানীর শোরুম আছে এখানে । ইলেকট্রনিক্স পণ্য এখানে ডিউটি ফ্রি তাই দাম একটু কম মনে হলো । লেটেষ্ট মডেলের গ্যালাক্সি নোটটি বেশ বিক্রি হচ্ছে । আইপ্যাড ও কিনছে অনেকে ।

বাহিরে এসে জুস ও আইক্রিমের দোকানে গেলাম এখানে একজন বাংলাদেশী বিক্রেতা আছে আমাদের দেখে খুশী হলো । জুস নিলাম । আমাদের "ডেথ বাই চকলেট' বলে একটা আইসক্রিম নিতে বলল সত্যিই অপূর্ব -স্বাধ । বাচ্চারা বলল এই স্বাদের আইসক্রিম আরো খাবে আগামী দিনগুলোতে।

রাতের খাবারের সময় হয়ে গেল । রাস্তা পার হতেই বহু খাবারের দোকান ফুটপাতে চেয়ার টেবিল বিছিয়ে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে । মূলত চাইনিজ ও মালয়ী খাবার । খেতে ইচ্ছা করলো না এখানে । তাই একটু এগিয়ে পরের রাস্তায় একটা ভারতীয় হোটেলে চলে এলাম । এখানের ওয়েটারদের প্রায় সবাই বাংলাদেশের, খাতির করে বসালো । পছন্দ মত মেনু বেছে খাবারের অডার দিলাম । তৃপ্তির সাথে খেয়ে ফেরার প্র¯ত্ততি নিচ্ছি । মোহাম্মদের গাড়ীতেই হোটেলে ফিরে এলাম । পরদিন যেহেতু লংকাউই যেতে হবে আজ আর সময় নষ্ট করা যাবে না ।

পথে আসতে আসতে মোহাম্মদের গাড়ীতেই লংকাউই যাওয়ার স্থির হলো । বাসের টিকেট কাটা সকালে জিনিষ নিয়ে বাসে যাওয়া এসব ঝামেলা না থাকায় শান্তিতে রাতে ঘুমিয়ে গেলাম ।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×