আফ্রিকার এক দেশে - আবিদজান শহরে
বেড়ানোর জন্য কোন দেশে গেলে দর্শনীয় জায়গাগুলো অবশ্যই দেখা হয়ে যায়। আগে থেকেই প্লান থাকে কিভাবে এসব দেখা যাবে। কোন দেশে যদি অনেকদিন থাকতে হয় তাহলে এধরনের পূর্ব পরিকল্পনা মনে হয় তেমন থাকে না। তবুও নতুন দেশে অনেক জিনিস, মানুষ, দেখার আছে, আছে অনেক বিখ্যাত জায়গা। আবিদজান শহরটা সত্যিই সাজানো এবং সুন্দর। এ শহর দেখলে কেউ ভাববে না যে এদেশে যুদ্ধ ছিল কিংবা আছে বা হয়েছে। আবিদজান থেকে বাইরে আসলেই সব কেমন যেন অন্যরকম। উত্তর-পূর্ব কিংবা উত্তর পশ্চিমে বোঝা যায় যুদ্ধের ছাপ। রাজধানী ইয়ামা সুকুরো এখন কার্যত অচল। মনে হয় একদা এখানে কিছু ছিল, ছিল প্রাণ চাঞ্চল্য ও বহু মানুষের আনাগোনা। সুউচ্চ ভবন, ব্যাসিলিক, গির্জা, প্রেসিডেন্ট প্রসাদ দামী হোটেল সবই আছে। মানুষ বিনে কি এগুলো প্রান পায়।
সেন্ট পল ক্যাথেড্রাল , আবিদজান
সেন্ট পল ক্যাথেড্রাল ১৯৮০ সালের ১১ মে পোপ জন পল ২ উদ্ভোধন করেন। ১৯৮৫ সালের ১০ অগাস্ট এর নিরমান কাজ শেষ হয়। এটা নিরমান করতে প্রায় ১১.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয়। জাহাজের মত দেখতে এই ক্যাথেড্রাল আবিদজান শহরের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান।এর বিশাল এলাকায় বহু পর্যটক ঘোরা ফেরা করে, ক্লিক করে উঠে তাদের হাতের ক্যামেরা ।
দূর থেকে - সেন্ট পল ক্যাথেড্রাল
রিভেয়ারা যাওয়ার পথে ফিরে দেখা
আবিদজান শহরের আশেপাশে ও ভেতরের লেগুনের হাওয়া, দুটো বড় বিখ্যাত ব্রিজ, দু প্লাতু এলাকার হাঁসের মত অনেক উচু হয়ে থাকা সেন্ট পল ক্যাথে ড্রাল, ঝকমকে অফিস ভবন, বিলবোর্ড সবই আধুনিক। এজন্যই এ শহরকে আফ্রিকার প্যারিস বলে। ফরাসীরা তাদের কলোনীর এই শহরটাকে বেশ করে সাজিয়েছে, তাদের নিজেদেরই প্রয়োজনে। মাঝখান দিয়ে আফ্রিকা একটা সুন্দর শহর পেল। এত কিছুর পরও আছে শ্রম, ঘাম, রক্তের কথা, বাদই দিলাম এখানে এসব।
দু প্লাতু এলাকাটা একটু উচু নিচু পাহাড়ী তবে এমনভাবে সাজানো যে তা দেখা যায় না। সব নিয়েই গড়ে উঠেছে এই এলাকা। লেগুনের পাশে দুই ব্রিজের মাঝে তেমনি বেশ খোলা মেলা একটা পার্ক আছে। পার্কিং এ গাড়ী রেখে এগিয়ে আসলেই ঘাসে ঢাকা এলাকা, বসার ব্যবস্থা আছে। ছোট্র একটা ক্যাফে আছে। বাচ্চাদের জন্য দোলনা ও অন্যান্য ব্যবস্থাও আছে। সামনেই লেগুন, দ্পুাশে বুইনি হুপহোত ও চার্লস দ্য গল ব্রিজ।
প্যালেস দো লা কালচার- দো প্লাতু
লেগুনের ওপারে বেশ দুরে প্যালেস দোলা কালচার এক অপূর্ব স্থাপত্য, আবিদজানের কালচারাল সেন্টার। এটার ছাদগুলো নৌকার পালের মত। ক্যানভাস দিয়ে বানানো। সাধারনত আমরা যে ধরনের স্থাপত্য দেখে অভ্যস্থ সে রকম না। তাই এই অপূর্ব ভবনটা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। এই অদ্ভুত সুন্দর কালচারাল সেন্টার দুইটা বিখ্যাত ব্রিজের মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থিত । সরকার এটা উপহার হিসেবে চীন সরকারের কাছ থেকে পেয়েছে। প্রায় ১২০০০ স্কয়ার মিটার জুড়ে এর অবস্থান এবং ৯০০০ দর্শক একসাথে এখানে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারে। ১ লা অক্টোবর ১৯৯৯ সালে এই সেন্টারটি কুত দি ভোয়া অথরিটি কে হস্তান্তর করা হয়।প্যালেস দো লা কালচার- দো প্লাতু
চার্লস দ্য গল ব্রিজ - বুইনি হোপ হুত ব্রিজ
আবিদজান শহরের দুটো ব্রিজ
ইবরি লেগুনের উপর এই ব্রিজ দুটো অবস্থিত। ১০০ কিলো মিটার লম্বা এই লেগুন ভারিডি চ্যানেলের সাথে মিলে আটলান্টিক মহাসাগরে মিলেছে। লেগুন টা গড়ে প্রায় আড়াই মাইল চওড়া এবং ১৬ ফিটের মত গভীর। আবিদজান ছাড়াও গ্র্যান্ড বাসাম, বিংগারভিল, জাকুইভিল এবং তিয়াগবা শহরগুলো ও এই লেগুনের ধারে রয়েছে।
ভাল লাগে এই পার্কে বসে বসে সময় কাটাতে। আর পেছনেই ব্যস্ত রাস্তা ছুটে চলছে যানবাহন এবং পাশেই দু প্লাতুর আকাশ ছোয়া বাড়ীঘর, অফিস আদালত। এই সব ঘরবাড়ীতে লাগানো রঙ্নি কাঁচে আলো পড়ে ঝিকমিক করে। আরো আছে সুন্দর সুন্দর বিলবোর্ড। অভিজাত এই এলাকায় আসলেই ভাল লাগত। তবে এটা মূলতঃ অফিসপাড়া ও বানিজ্য কেন্দ্র।
ক্যাফেতে গান বাজছে। কখনো আফ্রিকান সংগীত কখনো ফরাসী কিংবা ইংরেজী। ক্যাফের চারধারের চেয়ারগুলো যুবকদের দখলে। ক্যাফের বান্ধবীরা তাদের মাঝে মাঝে বিয়ার এবং হালকা খাবার দিয়ে যাচ্ছে। পরিবারের লোকজনের দখলেও থাকে কিছু টেবিল তারা তাদের অবসর কাটায় এখানে। আমরা কয়েকজন কোক আর বাদম দিতে বললাম। কোক খেতে খেতে লেগুনের বাতাস উপভোগ করছি আর দেখছি সূর্যাস্ত। লেগুনের কালো পানিতে আলো ছাড়িয়ে সূর্য আস্তে আস্তে বড় বড় অট্রালিকার পেছনে হারিয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যার আলো তখন ও কমে যায়নি। অন্ধকার নেমে আসার আগেই চারিদিকের আলো জ্বলে উঠল। ঝলমলে আলোতে লেগুনের রুপ পাল্টে নতুন রুপ দেখা দিল।
প্লাতু এলাকা
বিকেলে যখন এসেছিলাম এখানে তখন মানুষজন ঘরে ফিরে যাচ্ছে। লেগুনের উপর দিয়ে বেশ কয়েকটা ফেরী চলাচল করে। এই ফেরীগুলো অফিস কিংবা কাজ থেকে ফেরা মানুষগুলোকে তাদের গন্তব্যে নিয়ে যায়। জেটি বেশ শান্ত এবং মোটামুটি পরিচ্ছন্ন । ফেরীগুলোও দেখতে চমৎকার। ভেতরে বসার ব্যবস্থা বেশ ভাল। চারিদিক ঢাকা। আস্তে আস্তে সময়ের কাটা ধরে ফেরীগুলো আসা যাওয়া করে এই লেগুনে। বহুদিন ছিলাম এই শহরে। এই পার্কেও এসেছি অনেক তবে কেন যেন কখনো ফেরীতে করে লেগুন ভ্রমন করা হলো না। হোক না কোন গন্তব্য নেই তবুও কিছু সময়তো কাটানো যেত নতুন অভিজ্ঞতায়। আজ তাই বেশ মনে হচ্ছে কেন যে ফেরীতে চড়িনি। সব পাখি ঘরে ফেরে সব নদী ফুরায় জীবনের সব লেনদেন, সন্ধ্যার পর আমরাও তাই ফিরে চললাম আপন প্রবাস নিবাসে।
কিছু ছবি নেট থেকে
ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক
বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন
কুরসি নাশিন
সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে
তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ
১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন
সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে
সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।
কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।
ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।
যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন
বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!
যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।
কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!
ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন