somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এগনোস্টিক এর দৃষ্টিতে কনোকোফিলিপ্স এর সাথে তেল-গ্যাস চুক্তি

০২ রা জুলাই, ২০১১ দুপুর ১:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেক চিন্তাভাবনা করেও ঠিক করতে পারলাম না আমার অবস্থান তেল-গ্যাস চুক্তির পক্ষে নাকি বিপক্ষে হওয়া উচিত। অনেকেরই দেখছি পক্ষে বা বিপক্ষে জোরাল অবস্থান আছে, এবং অনেকেই যুক্তি দিয়ে অবস্থান ব্যাখ্যা ও করছেন, কিন্তু আমি দেখছি যুক্তির সাথে খানিকটা বিশ্বাস যোগ না করলে কোন সিদ্ধান্তে আসা যাচ্ছেনা।এই বিশ্বাসটুকু করতে পারছি না বলেই এখনো এই ইস্যুতে এগনোস্টিকই থেকে গেলাম। আর আমার এই অবস্থানের জন্য নিজের অজ্ঞতার চেয়ে পর্যাপ্ত গবেষনাকর্মের অভাবই মনে হয় বেশি দায়ী। আগেই বলে নিচ্ছি, আবেগ আর বিশ্বাস বাদ দিয়ে চিন্তা করছি কারন টাকা-পয়সা আর সম্পদের হিসাবের জন্য ওগুলো যে খুব একটা কাজের নয় সেটা নিশ্চয় সংসারে অভিজ্ঞ ব্লগাররা স্বীকার করবেন।

আমার কাছে সিচুয়েশনটা এরকম। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান, শিল্পায়ন, গৃহস্থালী ব্যবহার ইত্যাদি কারনে তেল-গ্যাস প্রয়োজন।বাংলাদেশের সমুদ্রের নিচে তেল-গ্যাস থাকার সম্ভাবনা আছে। বাংলাদেশ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই তেল-গ্যাস অনুসন্ধান করা হবে। এই অনুসন্ধান কাজে দেশীয় কোম্পানীকে যথেষ্ঠ দক্ষ মনে না করায় সরকার অকশন এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর মধ্য থেকে কনোকোফিলিপ্স কে এই দায়িত্ব দেয়। সবকিছু ঠিকমত হয়ে থাকলে (মানে দুর্নীতি না হলে) কনোকোফিলিপ্স এর বিড সবচেয়ে ভাল ছিল। পিএসসি ২০০৮ ছিল বিডিং এর জন্য নীতিমালা, যেখানে বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে ন্যুনতম শর্তগুলো উল্লেখ ছিল, অর্থাৎ বিডার কে এই শর্তগুলো পুরন করে বিড করতে হবে। অবশ্যই সেখানে বাংলাদেশ যেসব শর্ত পালন করবে (ন্যুনতম)সেগুলোও উল্লেখ আছে, যাতে বিডার জানে তারা কি পেতে পারে। এখন সবাই পিএসসি ২০০৮ মেনে বিড করেছে, সেখান থেকে কনোকোফিলিপ্স এর সাথে চুক্তি হয়েছে।কৌশল্গত কারনে চুক্তির ডিটেইলস প্রকাশ করা হচ্ছে না, সেজন্য আমরা এটুকুই শুধু জানি যা হয়েছে সেটা পিএসসি ২০০৮ এর চেয়ে ভাল। এখন আসি এটুকু জেনে কি কি ইস্যুতে এই চুক্তির বিরোধীতা করা যেতে পারে (অবশ্যই আমার দৃষ্টিতে):

১। আমরা এই মুহুর্তে গ্যাস উত্তোলন করতে চাইনাঃ যেহেতু আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমান খুবই কম এবং খনিজ সম্পদ অনবায়নযোগ্য, তাই আমাদের এই সম্পদ ভেবেচিন্তেই খরচ করা উচিত। এক্ষেত্রে দুটো জিনিস গুরুত্বপূর্ন, আমাদের সম্পদ আমরা কোন সময়ে ব্যবহার করব, আর কোন খাতে ব্যবহার করব। আমরা এখন যদি তেল-গ্যাস পাই সেটা হয়তো আমাদের বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানে বড় ভূমিকা রাখবে। অনেকেরই মতে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন করার পর্যায়ে আছে। বিদ্যুৎ এবং জ্বালানী সমস্যার সমাধান এই পুরো প্রক্রিয়াকে বেগবান করবে নিঃসন্দেহে। অন্যথায়, আমরা বর্তমান ঘাটতি অন্যান্য উতস থেকে মেটানোর চেষ্টা করতে পারি (যেমন স্থলভাগের গ্যাস, কয়লা অথবা বিদেশ থেকে গ্যাস আমদানি করা) এবং গ্যাসের মজুদ আমরা পরের জেনারেশনের জন্য রেখে দিতে পারি। কিন্তু কেন গ্যাস পরে ব্যবহার করলে আমরা বেশী লাভবান হব সেটার কোন গ্রহনযোগ্য ব্যাখ্যা আমি কোথাও পাইনি। আমার বরং মনে হয়, বাংলাদেশের এই সময়টাই বেশি গুরুত্বপূর্ন অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য। বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ দিতে পারলে বাংলাদেশ ভারত বা চীনের মত তরতর করে এগিয়ে যেতে পারবে এখন। অবশ্যই ভিন্নমত থাকা সম্ভব এবং সেটাই এই লেখার মূলকথা, স্থির সিদ্ধান্তে পৌছার মত পর্যাপ্ত গবেষনা নেই।

২। আমরা চাই আমাদের দেশীয় কোম্পানী গ্যাস উত্তোলন করুকঃমনে করুন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এখনি গ্যাস অনুসন্ধান এবং পাওয়া গেলে উত্তোলন করতে চাই। প্রশ্ন কাকে দিয়ে করাব। এটাও আরেকটা বিতর্কিত প্রশ্ন। আবেগবর্জিত হলে আমার উত্তর, যাকে দিয়ে করালে আমাদের খরচ কম হবে, তাকে দিয়ে। আমি বাপেক্সকে দেয়ার পক্ষে যদি বাপেক্স অন্যদের চেয়ে কম খরচে কাজটা করতে পারে। আবার যদি এমন হয়, এই মুহুর্তে বাপেক্স বিদেশী কোম্পানীর চেয়ে কম এফিসিয়েন্ট, কিন্তু এই পৃষ্ঠপোষকতাটুকু দেয়া হলে পরবর্তিতে তারা বিদেশী কোম্পানীর সাথে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে, তাহলেও আমি কাজ বাপেক্সকে দেয়ার পক্ষে। কিন্তু এই দক্ষতা বৃদ্ধির গ্যারান্টি কি দেয়া যায়? আমরা টেকনোলজিতে উন্নত বিশ্বের তুলনায় অনেক পিছিয়ে, কয়েকজন বিজ্ঞানি আর ইঞ্জিনিয়ার বিশ্বের বড় বড় ল্যাব আর ফার্মে কাজ করার মানে এই নয় যে আমরা টেকনোলজিতে উন্নত দেশের সাথে টেক্কা দিতে পারব। বুয়েটে একটা ডিপার্টমেন্ট খুলে ফেললেই যে আমরা মাইনিং টেকনোলজিতে দক্ষতা অর্জন করে ফেলব তার ও কোন মানে নাই। আমি বলছি না পারব না বলে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে হবে। কিন্তু সবকিছু আমাদের পারতে হবে কেন? আমরা কেন সেগুলোই করি না যেগুলোতে আমাদের তুলনামুলক সুবিধা আছে। আমরা গার্মেন্টসে ভাল করছি, ঔষধ শিল্পে ভাল করছি, ইদানিং জাহাজ তৈরি হচ্ছে, পাটের সুদিন আবার ফিরে আসছে আমরা এগুলোতে তো পৃষ্ঠপোষকতা বাড়াতে পারি। আমাদের পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার ক্ষমতা ও কিন্তু সীমিত। তাই আমাদের সেই সেক্টরকেই সাপোর্ট দেয়া উচিত, যাদের সফলতার সম্ভাবনা বেশি। এখন মাইনিং টেকনোলজি ই আমাদের পরবর্তি সম্ভাবনাময় সেক্টর কিনা সেটা আমি জানি না।

৩। কনোকোফিলিপ্স এর সাথে চুক্তিতে আমরা ঠকে গেছিঃধরুন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম গ্যাস অনুসন্ধান করব এবং বাপেক্সকে কোন বিশেষ সুবিধা ও দেব না। অর্থাৎ প্রতিযোগিতামুলক অকশনে যে সবচেয়ে ভাল শর্ত দেবে তার সাথেই চুক্তি হবে (সেটা বাপেক্স ও হতে পারে)। এখন অকশনের একটা গাইডলাইন তৈরী করা হলো যেটা বাংলাদেশ (পেট্রোবাংলা)এবং কোম্পানিকে মেনে বিড দিতে হবে, সেটাই পিএসসি ২০০৮। বিতর্কিত অংশগুলো পড়ে আমি যা যা বুঝলাম তা হলোঃ

- তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য কন্ট্রাক্টর নিজের ঝুকিতে বিনিয়োগ করবে। অর্থাৎ তেল-গ্যাস না পাওয়া না গেলে তারা কোন টাকা পাবেনা। আর লাভজনক পরিমানে তেল-গ্যাস পাওয়া গেলে সেখান থেকে কন্ট্রাক্টর এর খরচ পরিশোধ করা হবে তেল-গ্যাস দিয়ে। সবধরনের অবকাঠামো (পাইপলাইনসহ) এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। আমি এর মধ্যে লাভ-ক্ষতির কিছু দেখি না। যেই অনুসন্ধান করুক, খরচ আমাদের দিতেই হবে, পাইপলাইন আমাদের বসাতেই হবে। আমরা সর্বনিম্ন খরচের কন্ট্রাক্ট করতে পারলাম কিনা সেটার জন্য অকশন। আর কন্ট্রাক্ট হয়ে যাওয়ার পর কন্ট্রাক্টর ইচ্ছামত খরচ বাড়াচ্ছে কিনা সেটা মনিটর করবে পেট্রোবাংলা। এখন কেউ যদি আমাদের কাছ থেকে বেশি টাকা নিয়ে যায়, সেটা হবে পেট্রোবাংলার অদক্ষতা অথবা দুর্নীতির জন্য। সেটা যদি ঠিক করতে না পারি, তাহলে বাপেক্সকে বিশ্বমানে নিয়ে যাওয়া আরো সুদুর কল্পনা মনে হয়।

- এখন কন্ট্রাক্টর এর বিনিয়োগকৃত টাকা কিভাবে পরিশোধ করা হবে। এক্ষেত্রে টাকার বদলে তাদেরকে তেল-গ্যাস দেয়া হবে, তাদের খরচ যত হবে সেই পরিমান। কিন্তু সেটা একবারে দেয়া হবেনা, দেয়া হবে কিস্তিতে। বার্ষিক উতপাদনের সর্বোচ্চ ৫৫% এই কস্ট রিকভারীর জন্য রাখা যাবে। এর মানে কিন্তু এই নয়, তারা প্রতি বছর ৫৫% করে পেতে থাকবে। প্রতি বছরের কস্ট রিকভারী গ্যাস নিয়ে যখন সম্পূর্ন টাকা পরিশোধ হয়ে যাবে, তখন পুরো গ্যাসই প্রফিট গ্যাস হয়ে যাবে (মেইনটেনেন্স খরচ বাদে)। কন্ট্রাক্ট্রর তাদের ভাগের গ্যাস নিয়ে কি করবে সেটাও বলে দেয়া আছে। তাদেরকে এই গ্যাস অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেট্রোবাংলার কাছে একটা নির্দিষ্ট দামে বিক্রি করতে হবে।তার মানে দাড়াচ্ছে, অবশেষে তার টাকাই পাচ্ছে। তারা বিনিয়োগ করল, আমরা উতপাদন শুরু হওয়ার পর তাদের বিনিয়োগের টাকা কিস্তিতে শোধ করে দিলাম। আমার কাছে লজিক্যালই মনে হচ্ছে।

- কন্ট্রাক্টর যে বিনিয়োগ করবে, লাভ না হলে সে তো আর করবে না। এজন্য উত্তোলিত গ্যাস থেকে খরচ বাদ দিলে যা থাকবে, সেটা পেট্রোবাংলা আর কন্ট্রাক্টর এর মধ্যে ভাগাভাগি হবে। এখানেই আমাদের আর কন্ট্রাক্টর এর আসল স্বার্থ জড়িত। কিন্তু এই ভাগাভাগি কততে ফয়সালা হয়েছে আমরা কিন্তু জানিই না, কারন চুক্তি প্রকাশ করা হয়নি। শুধু অনুমান করতে পারি, যদি অকশন এ দুর্নীতি না হয়ে থাকে, তাহলে যারা কন্ট্রাক্ট পেয়েছে তারা বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ ভাগ দিতে রাজি হয়েছে। আর এখানেও কন্ট্রাক্টরের ভাগের গ্যাস তার পেট্রোবাংলার কাছে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিক্রি করবে।

- শেয়ারিং এর পর এবার আসি কে কার গ্যাস নিয়ে কি করবে। প্রথমত বাংলাদেশ এর ভাগের গ্যাস তারা গ্যাস হিসেবে ও নিতে পারবে অথবা চাইলে কন্ট্রাক্টর এর কাছে বিক্রি ও করতে পারে (পিএসসি ২০০৮ এর ১৪.১৩ অনুচ্ছেদ দেখুন)। কিভাবে নেবে সেটা বাংলাদেশ এর ব্যাপার। তাও না, তারা পাইপলাইন তৈরী করে দেবে, খরচ বাংলাদেশ কে দিতে হবে। না দিতে চাওয়ার কোন কারন নাই।আর কন্ট্রাক্টর এর ভাগের গ্যাস (কস্ট রিকভারী এবং প্রফিট) ও পেট্রোবাংলাকে কিনার জন্য অফার করা হবে, পেট্রোবাংলা না কিনতে চাইলে দেশের কোন তৃতীয় পক্ষকে অফার করা হবে। প্রশ্ন শুনি, আমাদের গ্যাস আমরা বাজারমূল্যে কিনব কেন? কিন্তু আমরা তো আসলে আমাদের গ্যাস কিনছি না, কিনছি কন্ট্রাক্টর এর ভাগের গ্যাস। ওরা কেন কমদামে দেবে? ব্যাপারটাকে যদি এভাবে দেখেন, আমরা গ্যাস উত্তোলন করে দেয়ার জন্য তাদেরকে টাকা দিচ্ছি যেটা আমাদের বাপেক্স করলেও খরচ করতে হত, তাহলেই আর কনফিউশনটা থাকে না।

- তাহলে গ্যাস রপ্তানী আর ২০% শেয়ারের কথা আসছে কেন? আমরা কন্ট্রাক্টর কে বলছি বিক্রি করতে চাইলে আমাদের কাছেই করতে হবে, কিন্তু আমরা যে কিনব সেই গ্যারান্টি তো দিচ্ছি না। ভাবুন, একটা কোম্পানীকে বলা হল, আমাদের এখানে বিনিয়োগ কর, আমরা তোমার খরচ আর লাভের অংশ গ্যাস দিয়ে পরিশোধ করব। কিন্তু তোমরা তোমাদের গ্যাস শুধু আমাদের কাছেই বিক্রি করতে পারবে যদিও আমরা সেই গ্যাস কিনব কিনা এখনি বলতে পারছি না। তাহলে আমরা যদি গ্যাস না কিনি, তাহলে সেই কন্ট্রাক্টর এর গ্যাস এর আগুন জ্বালিয়ে ঝাপ দেয়া ছাড়া তো কোন উপায় থাকবে না। এমন শর্তে নিশ্চয়ই কেউ বিনিয়োগ করতে আসবে না। এজন্যই রপ্তানীর সুযোগ রাখা। তাদেরকে অপশন দেয়া হচ্ছে, যদি পেট্রোবাংলা বা দেশের মধ্যে কেউ গ্যাস না কিনে তাহলে কন্ট্রাক্টর এলএনজি বানিয়ে গ্যাস রপ্তানী করতে পারবে। এক্ষেত্রে এমন পরিস্থিতি ও হতে পারে, যেখানে কন্ট্রাক্টর এর ভাগের গ্যাসের পরিমান কম, পেট্রোবাংলার বেশী। যেহেতু এলএনজি প্লান্ট বানানোর খরচ অনেক বেশী, তাই এরকম ক্ষেত্রে কন্ট্রাক্টর এর এলএনজি বানিয়ে রপ্তানী করা লাভজনক না হতে পারে। তখন, আবার একই সমস্যার সৃষ্টি হবে, কন্ট্রাক্টর তার গ্যাস নিয়ে বসে থাকবে, কিন্তু বিক্রি করতে পারবে না। এটা যাতে না হয়, এজন্য বলা হচ্ছে যদি গ্যাস রপ্তানীর পরিস্থিতি তৈরি হয় (অর্থাৎ আমরা গ্যাস না কিনি), তাহলে পেট্রোবাংলা ২০% এর বেশী গ্যাস নেবে না ইন কাইন্ড। অবশ্যই এটা কন্ট্রাক্টর এর স্বার্থ রক্ষার জন্য, কিন্তু এরকম কোন অপশন না রাখলে জেনেশুনে কে এখানে বিনিয়োগ করতে আসবে বলুন। আমরা এখানে আরো কঠিন শর্ত দিতে পারতাম, কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে, যত কঠিন শর্ত দেয়া হবে, লাভের ভাগাভাগিতেও কিন্তু তারা কম দিতে চাইবে। (রপ্তানীর এই হিসাব পরিষ্কার হয়ে যাবে যদি পিএসসি ২০০৮ এর ১৫.৫.১, ১৫.৫.৪, ১৫.৫.৬ আর ১৪.১৩ অনুচ্ছেদ পড়েন)।

- সর্বশেষ প্রসংগ চুক্তি প্রকাশ। বলা হচ্ছে কৌশলগত কারনে চুক্তি প্রকাশ করা হচ্ছে না। এটা একেবারে অযৌক্তিক নয়। অকশন থিওরী অর্থনীতির খুবই মজার এবং জটিল একটি বিষয়।স্মার্ট অকশন ডিজাইন করার জন্য উন্নত বিশ্বে অর্থনীতিবিদদের নিয়োগ দেয়া হয়। কেনেথ বিনমোর (Ken Binmore)নামে এক অর্থনীতিবিদ ২০০০ সালে ব্রিটেনে 3G টেলিকম লাইসেন্স এর অকশন ডিজাইন করে টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানীগুলোর চক্ষুশুলে পরিনত হয়েছিলেন (শুধু 3G লাইসেন্স বিক্রির রেভিনিউ ছিল সে বছরের ব্রিটিশ জিডিপির ২.৫%)। (বিস্তারিত জানতে) Click This Link
চুক্তি প্রকাশ করা আর না করার শর্তের কারনে কোম্পানীগুলোর বিডের হেরফের হতে পারে যেহেতু ইনফরমেশন আলাদা দুই ক্ষেত্রে। এই কোম্পানীগুলো আরো বিভিন্ন জায়গায় বিড করে, সুতরাং কোন কোম্পানী কোথায় কত বিড করল সেটা জানলে এটা ঐ কোম্পানী সম্পর্কে অনেকখানি তথ্য দেয় তার প্রতিযোগিদেরকে। এখন চুক্তি প্রকাশ করার শর্তে গেলে আমরা আরো ভাল বিড পেতাম কিনা সেটা অকশন থিওরিস্টরা বলতে পারবেন, আমি এই জগতের নভিস হিসাবে এটুকুই শুধু বলতে পারি যে চুক্তি প্রকাশ করা আর না করা শুধু স্বচ্ছতার প্রশ্ন নয়, এর সাথে আর্থিক লাভ-ক্ষতির ব্যাপার ও জড়িত।

এতক্ষন যদি ধৈর্য ধরে পড়ে থাকেন, তাহলে নিশ্চয় ভাবছেন সবকিছু তো চুক্তির পক্ষেই বলা হল, তাহলে আর এগনোস্টিক কেন। এগনোস্টিক এই কারনেই যে, গ্যাস উত্তোলন করার জন্য এটাই সবচেয়ে ভাল সময় সেটা নিয়ে কোন নির্ভরযোগ্য গবেষনা আমি পাইনি, বাপেক্সকে যে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা যাবেনা সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই, আর কনোকোফিলিপ্স এর সাথে চুক্তি যে দেশের স্বার্থ কে সর্বাধিকার দিয়ে করা হয়েছে সেটাও আমি জানি না। হয়তো কিছুদিন পরে বের হবে, সরকারের কেউ ঘুষ খেয়ে আরো ভাল অফার থাকা সত্বেও কনোকোফিলিপ্স এর সাথে চুক্তি করেছেন। কিন্তু এসব কিছু যে হয়েছে তাও আমি নিশ্চিত করে বলতে পারিনা। অন্তত এ পর্যন্ত যেটুকু আমি জানি, তাতে কোন স্থির সিদ্ধান্তে আসা যায়না।

পিএসসি ২০০৮ এর লিঙ্ক দিয়ে দিলাম নিচে।
http://www.petrobangla.org.bd/MODEL PRODUCTION SHARING CONTRACT 2008-FEBRUARY.pdf
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×