somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সহস্রাব্দ প্রাচীন গৌরবময় কিতাব

২৬ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


• একটি গবেষণার যুগ-সৃষ্টিকারী রচনা
• একটি গবেষণাধর্মী রচনা
• একটি অথেনটিক ও বস্তুনিষ্ঠ রচনা
• একটি সুসজ্জিত প্রামাণ্য রচনা
• একটি পরমতসহিষ্ণু রচনা
• একটি বিবেক, যুক্তি ও বাস্তববাদী রচনা
আবু জাফর আহমদ ইবনে মুহাম্মদ আত-তাহাবী(র)(৮৫১-৯৪৩খ্রিঃ) তার কিতাব شرح معاني الأثار গ্রন্থে নিপুণ হাতে মহানবী(সা) হতে বর্ণিত হাদিসসমূহ ফিকহী মাসয়ালার(ইসলামি বিধি-বিধান) আলোকে লিপিবদ্ধ করেছেন। তিনি প্রথমত বিরুদ্ধবাদীদের দলিল-হাদিস এবং অভিমত বর্ণনা করেছেন। তারপর হানাফি মাযহাবের দলিল-হাদিস ও অভিমত ব্যক্ত করেছেন। সবশেষে তিনি স্বীয় বিবেকপ্রসূত যুক্তির আলোকে প্রতিপক্ষের অভিমতের জবাব দিয়েছেন এবং হানাফি মাযহাবকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন।
শরহে মায়ানিয়িল আসার গ্রন্থের বর্ণনাপদ্ধতি নিম্নরূপ
• তিনি মাসয়ালার সমর্থনে كتاب الله(কুরআন মাজিদ)হতে দলিল উদ্ধৃত করেছেন।
• একই বিষয়ে রাসুল(সা) হতে বিশুদ্ধ ধারাবাহিকতায় বর্ণিত হাদিস উদ্ধৃত করেছেন।
• ঐ বিষয়ে সাহাবায়ে কেরামের(মহানবীর সাথীগণ) কোন ঐকমত্য থাকলে তা পেশ করেছেন।
• সাহাবিগণের যে সকল গ্রহণযোগ্য বক্তব্য ধারাবাহিকভাবে তার নিকট পৌছেছে, সেসকল তিনি দলিল হিসেবে পেশ করেছেন।
• ক্ষেত্রবিশেষে তাবেয়িগণের(সাহাবীগণের পরবর্তী মুসলিম প্রজন্ম) বক্তব্যও উদ্ধৃত করেছেন।
• ভিন্নমতের ইমামগণের অভিমত, বক্তব্য ও দলিল তুলে ধরেছেন।
• বিরোধী দলিল বর্ণনাপূর্বক খন্ডনের প্রয়াস পেয়েছেন। অবশ্যই তা করেছেন দলিল, যুক্তি, বিবেক ও বাস্তবতার নিরিখে।
• পরস্পর বিরোধী একাধিক হাদিস বর্ণনাপূর্বক বিশ্লেষণ করে একটিকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
• প্রযোজ্যক্ষেত্রে তিনি বহুমূখী সমালোচনাও পেশ করেছেন।
• উভয়পক্ষের মত বিবেচনাপূর্বক যুক্তিভিত্তিক সমাধান পেশ করেছেন, একে বলা হয় نظر صحيح, যার কারণে "তাহাবী শরীফ" অদ্যবধি বিখ্যাত।
• ইমাম তাহাবী (র) বিবেক, যুক্তি ও বাস্তবতার নিরিখে কুরআন হাদিসের বাণীকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন।


এসকল বিষয়াবলি তুলে ধরার একমাত্র উদ্দেশ্য হল- ইসলামের ইতিহাসের গৌরবের দিকটি তুলে ধরা এবং বর্তমান জ্ঞান-গবেষণামূলক রচনাবলীর সাথে গ্রন্থটির তুলনা করা।
• হাজার বছর পূর্বে বিরোধী মতকে নিজের রচনায় স্থান দেয়াটা ছিল সত্যিই অভূতপূর্ব এবং অবিশ্বাস্য। যেটা আধুনিক যুগেও অনেক বিদ্বান মেনে নিতে পারেন না।
• যখন গবেষণার কোন বালাই ছিলনা, ছিলনা কোন নিয়ম, তখন বহু উৎস হতে গৃহীত বিষয়ভিত্তিক উদ্ধৃতি পেশ করা, আবার তার উৎস ও বর্ণনার বিশুদ্ধতা যাচাই করা ছিল অকল্পনীয়। অর্থাৎ গবেষণামূলক রচনা হিসেবে এ গ্রন্থ আধুনিক গবেষণা মানদন্ডও উতরে যেতে পারবে।
• অপরের মতকে তুলে ধরে তা সহিষ্ণুতার সাথে খন্ডন করা আধুনিক গবেষণা জগতের অন্যতম বৈশিষ্ট। হাজার বছর আগে ইমাম তাহাবী এহেন ধারার সূচনা করে গেছেন তা অনস্বীকার্য।
• বিবেক, যুক্তি ও বাস্তবতার নিরিখে সমস্যা সমাধানের থিওরি বহু পুরনো হলেও তার প্রয়োগ দেখা যায় না প্রাচীন মানবসভ্যতা/মানবধর্মগুলোতে। কিন্তু ইমাম সাহেব তার গ্রন্থে প্রত্যেকটি মাসয়ালায় বিবেক, যুক্তি ও বাস্তবতার আলোকে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছেন। তবে তিনি আবশ্যকভাবে ইসলামকে আরসব যুক্তি-বাস্তবতার উপরে স্থান দিতে ভুল করেননি।
• ইমাম সাহেবের রচনার মূলনীতিগুলো খেয়াল করলে দেখা যাবে তার অমূল্য রচনা পদ্ধতিকে অনুসরণ করেনি বর্তমান মুসলিম উম্মাহ; তার পদ্ধতির পূর্ণ অনুসরণ পাওয়া যায় ইউরোপিয়দের রচনায়।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৯
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×