somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রবীন্দ্রনাথের আলোকে -করবী কেমন আছো ?

১৭ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

করবী তুমি কেমন. আছো ( ৭ম ভাগ )

শ্যা ম ল সো ম

হে কবি তোমার কাছে আমার অনেক ঋণ, জীবনকে ভালোবাসতে, সহজ ভাবেই সব সহে যাওয়া, আমার প্রথম প্রেম যাকে চিরে দিনে মতো পেছনে ফেলে এসেছি,
শুধু মাত্র দূর থেকে ভালোবেসেছি, খুব কাছে যাওয়া থেকে বিরত ছিলাম।
কাপুরুষ ভীরু অপবাদ জুটে ছিল, আমার প্রেম কখন কোন মলিনতা, সামাজিক বৈরিতা, স্পর্শ করে নি, ছিল না কোন মন মালিন্যে- অপ্রিয়তা !
করবী তোমার ঐ অপূর্ব নিজের হাতে গড়া তুলট কাগজে,
তোমার আঁকা অলংকরণ রঙের এমন বাহার তোমার, চিঠি গুলো আজ কাছে অক্ষয় সম্পদ রয়েছে মণি কোঠায় উজ্জ্বল স্মৃতি টুকু থাক।
তোমার অকৃত্রিম প্রেম অকৃপণ ভালোবাসা ও অকপটে মেলে ধরা নিজেকে তোমার সম্পূর্ণ আত্ম সমর্পণ -- আমার জীবনের প্রথম সে প্রেমের অভিজ্ঞতা অনন্য সাধারণ, ধন্য করেছো করবী - আমার রক্ত করবীর নন্দিনী ! তোমার ঐ রক্ত করবীর গুচ্ছ দিয়ে ছিলে উপহার।
শুনিয়ে ছিলাম গান সেদিন মেঘনা পাড়ে শিমুল গাছের তলায় বসে, গোধূলির রাঙ্গা আলো ছোঁয়ায় তোমার সজল চোখে আমি গাইছি, " ও কার চোখের চোখের চাওয়ায় -হাওয়ায় দোলায় মন --" নিজের গোপন ব্যথা কান্না আড়ালে রেখে হাসছি আমি।
তুমি ঠিকই বুঝেছিলে- গেয়ে উঠলে কাঁদতে কাঁদতে --
-" চোখের জলে নামলো জোয়ার দুখের পারা পারে,
হল কানায় কানায় কানাকানি এই পারে ওই পারে।
আমার তরী ছিল চেনার কুলে, বাঁধন তাহার গেল খুলে;
তারে হাওয়ায় হাওয়ায় নিলে কোন অচেনার ধারে।"
নিজেকে সামলে না পেরে, তোমাকে দু হাতে গভীর ভাবে জড়িয়ে ধরে পরস্পরের আলিঙ্গনে
কাঁদছি ---মনে পড়ে গেল একদিন বৃষ্টিতে ভিজে আনন্দে মেতে দ্বৈত কন্ঠে গেয়েছিলাম ---
" কাঁদলে তুমি মোরে ভালোবাসারই ঘায়ে--
নিবিড় বেদনাতে পুলক লাগে গায়ে।
সেদিন ও কেঁদেছিলাম প্রথম প্রেমের অনুভবে।
তুমি বললে, " কত ? সে কি সাগরের মতো ? এত কান্না জমে থাকে চোখা না আমাদের মনে ?
আবৃত্তি করি রবীন্দ্র সঙ্গীত, --
আমার নয় তোমার নয়ন তলে মনের কথা খোঁজে,
সেথায় কালো ছায়ার মায়ার ঘোরে পথ হারাল ও যে।
নীরব দিঠে শুধায় যত পায় না সাড়া মনের মতো,
অবুঝ হয়ে রয় সে চেয়ে অশ্রু ধারায় ম'জে।

তুমি কবির ভাষায় লিখেছিলে-- লিখতে বসেছি চি ঠি, সকালেই
স্নান হয়ে গেছে।
লিখি যে কী কথা নিয়ে কিছুতেই ভেবে পাই নে তো। এক টি খবর
আছে শুধু-- তুমি চলে গেছো।
ভয়ে ভয়ে এসেছিনু দুরু দুরু বুকে তোমার সন্মুখে। তোমার ভ্রূকুটি ভঙ্গে তরঙ্গিল আস ন্ন উতপাত, নামি.আঘাত। পাঁজর উঠিল কেঁপে, বক্ষে হাত চেপে শুধালেম, ' আরো কিছু আছে নাকি, আছে বাকি শেষ ব্জ্রপাত ?' নামিল আঘাত।
( আমার স্বগত উ ক্তি, ঢাকা থেকে আমার পলায়ন, করবী তোমার
হৃদয়ে হানিবে গভীর প্রত্যাঘাত; ১৯৭২ সালে বয়স ছিল, কম, ভরা
যৌবনের অহংকারে পূ র্ণ; আত্মসন্মানে, আঘাতের. ভয়ে , তোমারে
করেছি প্রবল আঘাত। )

করবী তুমি লিখেছিলে, " কেন তবে কেড়ে নিলে লাজ -আবরণ !
হৃদয়ের দ্বার হেনে, বাহিরে আনিলে টেনে, শেষে কি পথের মাঝে
করিবে বর্জন ?
বর্ষ আসে বর্ষ যায়, গৃহকাজ করি--সুখ দুঃখ ভাগ লয়ে প্রতিদিন
যায় বয়ে, গোপন স্পন্দন লয়ে কাটে বিভাবরী। লুকানো প্রাণের প্রেম
পবিত্র সে কত !
আঁধার হৃদয় তলে মানিকের মতো জ্বলে,--ভাঙিয়া দেখিলে ছি ছি নারীর হৃদয় !
লাজে ভয়ে থর থর ভালোবাসা - সকাতর তার লুকাবার ঠাঁই কাড়িলে নিদয়।
ভালোবাসা তাও যদি ফিরে নেবে শেষে কেন লজ্জা.কেড়ে নিলে,
একাকিনী ছেড়ে দিলে বিশাল ভবের. মাঝে বিবসনা বেশে।
চিরকাল রবে মোর প্রেমের কাঙাল, এ কথা বলিতে চাও বোলো।
যাবার সময় হলে যেয়ো সহজেই আবার আসিতে হয়. এসো,
সংশয় যদি রয় তাহে ক্ষতি নেই তবু ভালোবাসে যদি আসো কাছে,
নেই বেসো।
( আমার বিদেশে পলায়নের খবর পেয়ে করবীর লেখা দশ নম্বর
চিঠি )

" বন্ধু, কালের যাত্রার ধ্বনি শুনিতে পাও--
তোমার পথ সন্মুখে জানি, পশ্চাতে আমি আছি বাঁধা। অশ্রু নয়নে বৃথা শিরে কর হানি যাত্রায় নাহি দিব বাধা।
আমার টুটিল সব লাজ; যত বড়ো হও, তুমি তো মৃত্যুর চেয়ে
বড়ো নও।
আমি মৃত্যু চেয়ে বড়ো ' এই শেষ কথা বলে, যাব আমি চলে।"
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৫৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×